জুমবাংলা ডেস্ক : মানিকগঞ্জের ঘিওরে বিদেশ পাঠানোর নামে ভুয়া বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে স্বামী-স্ত্রীকে গ্রে*প্তার করেছে পুলিশ। বুধবার দুপুরে মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার বাংলাবাজার এলাকা থেকে ভুক্তভোগীদের সহায়তায় তাদের গ্রে*প্তার করা হয়। এ সময় সাড়ে ৮ লাখ টাকা, ১টি কম্পিউটার, ৫টি মোবাইল ফোন, বিভিন্ন কোম্পানির ১৯টি সিম, ১৪টি পাসপোর্টসহ আরও বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মুন্সিগঞ্জ জেলার মুক্তারপুর গ্রামের বারেক মুনশীর ছেলে বাশার মুনশী (৩৪) ও তার স্ত্রী হাসু বেগম (৩২)। তবে পুলিশের কাছে এমন ঠিকানা দিলেও বাশারের ব্যবহৃত দুটি পাসপোর্টে নারায়ণগঞ্জ এবং মাদারীপুরের ঠিকানা রয়েছে।
পুলিশ ও ভুক্তভোগীরা জানান, প্রায় বছর খানেক আগে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার শ্রীবাড়ী গ্রামের আয়ুব আলীর বাড়িতে বাসা ভাড়া নেন বাশার মুনশী। শুরুতে তিনি এলাকায় চটপটির ব্যবসা শুরু করেন। এর কিছুদিন না যেতেই হঠাৎ বিদেশে লোক পাঠানোর মাধ্যমে প্রতা*রণা শুরু করে।
তিনি ও তার সহযোগীরা জেলার বিভিন্ন থানা, আদালতসহ দর্শনীয়স্থান গুলোতে বিদেশে শ্রমিক নেয়া হবে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি টাঙ্গিয়ে দেন। আর সেই বিজ্ঞপ্তিতে হাম ইন্টারন্যাশনাল নামে ঢাকা ও স্থানীয় টেপড়ার ঠিকানা দেয়া হয়। এমনকি বাশারের ফোন নম্বরও দেয়া হয় সেখানে।
আগ্রহী প্রার্থীরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে কম খরচ এবং বেশি বেতনে বিদেশে পাঠানোর লোভ দেখান তিনি। এরপর নানা কৌশলে হাতিয়ে নেন লাখ লাখ টাকা। সম্প্রতি ওমানে শ্রমিক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেন বাশার। এই বিজ্ঞপ্তি দেখে জেলার ঘিওর ও শিবালয় উপজেলার বিভিন্ন এলাকার অর্ধশতাধিক নারী-পুরুষ বিদেশ যাওয়ার আগ্রহ দেখান। এই সুযোগে পাসপোর্ট, মেডিকেল ও ভিসা দেয়ার নামে তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেন প্রায় অর্ধকোটি টাকা।
গত রোববার ওমানে যাওয়ার জন্য সেইসব ভুক্তভোগীদের ভিসা দেয়ার কথা ছিলো। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতের আধারে ঘরের মালামাল নিয়ে বাসা থেকে বউসহ পালিয়ে যান বাশার। এরপর আবুল হোসেন নামে এক ভুক্তভোগী প্রতা*রণার অভিযোগ এনে বাশার মুন্সি ও তার স্ত্রী হাসু বেগমের নামে ঘিওর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। একইসঙ্গে প্রতা*রণার শিকার হয়ে দিশেহারা ভুক্তভোগীরাও নানাভাবে তাদের খোঁজ করতে থাকেন।
পরে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বাংলাবাজার এলাকায় তাদের সন্ধান পাওয়া যায়। সেখানে বাশার আবার নতুন করে বাসা ভাড়া নিয়ে প্রতা*রণার পাঁইতারা চালাচ্ছিলো। ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলম জানান, স্বামী-স্ত্রীকে আট*কের পর তাদের প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তারা বিদেশে লোক পাঠানোর নামে টাকা নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। বাশার মুন্সি এর আগে গাজীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ভুয়া বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে একই কায়দায় টাকা হাতিয়ে নেন। তার নাম পরিচয়ও সঠিক কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তিনি জানান, বাশার এক সময় বিদেশে থাকতেন। এজন্য বিদেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া সম্পর্কে তার ধারণা ছিলো। এজন্যই সহজে তার প্রতা*রণা ধরতে পারেননি ভুক্তভোগীরা। ওসি আরও জানান, উদ্ধার হওয়া মালামাল জব্দ দেখানো হয়েছে। প্রতা*রণার এ ঘটনায় বাশার এবং তার স্ত্রী ছাড়া আরও কেউ জড়িত কিনা সে বিষটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Own the headlines. Follow now- Zoom Bangla Google News, Twitter(X), Facebook, Telegram and Subscribe to Our Youtube Channel