জুমবাংলা ডেস্ক: রাজশাহী মহানগরে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার বাড়তে থাকায় সাত দিনের লকডাউন দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায় যে, একক জেলা হিসেবে রাজশাহীতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫৩ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
এরপর ওইদিন রাতেই জেলার সার্কিট হাউজে দীর্ঘ সভা শেষে লকডাউনের এই ঘোষণা দেয়া হয়।
শুক্রবার বিকেল ৫টা থেকে বৃহস্পতিবার ১৭ই জুন মধ্যরাত পর্যন্ত এই লকডাউন চলবে বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল।
সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহী জেলায় সংক্রমণের হার ২৩%। আর মোট সংক্রমণের প্রায় ৯০ ভাগ শনাক্ত হয়েছে মহানগরীতে।
এ কারণে সংশ্লিষ্ট সবার সাথে আলোচনার ভিত্তিতে শুধুমাত্র মহানগরে এক সপ্তাহের এই লকডাউন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান মি. জলিল।
তিনি বলেন, “শুরুতে আমাদের পরিকল্পনা ছিল শুক্রবার ভোর থেকে লকডাউন দেয়ার কিন্তু নগরবাসীকে প্রতিক্রিয়া ও প্রস্তুতির জন্য কিছুটা সময় দিতে লকডাউন বিকেল কার্যকর করা হচ্ছে।”
লকডাউন চলাকালীন এই সময় রাজশাহীর সঙ্গে সব রুটের যাত্রীবাহী ট্রেনের চলাচল বন্ধ থাকবে বলে রেল মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।
এদিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ও উপসর্গ নিয়ে একদিনেই ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে শুক্রবার সকালে হাসপাতাল সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে।
সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে লকডাউন চলাকালে মহানগরীর সব অফিস আদালত, শপিং মল, দোকান, রেঁস্তোরা, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান ও সব ধরণের যানবাহনের চলাচল নিষেধাজ্ঞা থাকবে।
তবে, হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ওষুধের দোকান, অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, ফায়ার সার্ভিস, এবং নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান, কাঁচাবাজার ও জরুরি পণ্য সরবরাহকারী গাড়ির চলাচল লকডাউনের আওতার বাইরে থাকবে।
এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কিনা সেটা তদারকি করতে দোকানপাট ও কাঁচাবাজার এলাকায় পুলিশ ও মেজিস্ট্রেট অবস্থান নেবে বলে জানা গেছে।
এ নিয়ে মি. জলিল বলেন,” আমরা লকডাউনে কড়াকড়ি করবো। কিন্তু সবার আগে আমাদের চেষ্টা থাকবে নগরবাসীকে সচেতন করা।”
“তাদের অংশগ্রহণ ছাড়া লকডাউন সফল হবে না। এরপরও যদি কেউ নিয়মভাঙ্গে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
সারা বাংলাদেশে শর্তসাপেক্ষে লকডাউন চলছে। এর পাশাপাশি রাজশাহী জেলায় আগেও দুই দফায় আংশিক লকডাউন দেয়া হয়েছিল।
গত ৩রা জুন প্রথম দফায় সন্ধ্যা ৭টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত। এর পরের দফায় ৬ই জুন থেকে বিকেল ৫টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত লকডাউন জারি করা হয়। এবারে নতুন করে টানা সাতদিনের লকডাউন দেয়া হয়েছে।
রাজশাহীতে গত দুই সপ্তাহ ধরে শনাক্তের হার বাড়তে থাকায় গত সাত দিন ধরে প্রতিদিন গড়ে ১২শ র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করা হয়েছে। এর পাশাপাশি জিন এক্সপার্ট টেস্টও করা হয়।
র্যান্ডম এসব টেস্টে সংক্রমণের হার কম এলেও আরটি-পিসিআর টেস্টে সংক্রমণের হার এখনও বেশি এবং সেই হার সবচেয়ে বেশি মহানগরে।
সাতদিন লকডাউনের কারণে যদি সংক্রমণের হার ১০% নীচে নেমে আসে তাহলে লকডাউন শিথিল করা হবে। তবে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে লকডাউন প্রয়োজনে বাড়ানো হবে বলে তিনি জানান।-বিবিসি বাংলা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।