লাইফস্টাইল ডেস্ক : অনেক মসলার মতোই লবঙ্গের আছে অনেক ভেষজ গুণ। প্রতিদিন লবঙ্গ খেলে তা আমাদের দেহ-মনে রাখতে পারে ১০টি উপকারী ভূমিকা। এটি সর্দি–কাশি থেকে রক্ষা, দাঁত ও মাড়ির সুস্থতা বজায় রাখার পাশাপাশি আরও অনেক কাজ করে। একনজরে এই ঔষধি গুণসম্পন্ন মসলার উপকারিতাগুলো দেখে নেওয়া যাক।
১. দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমায়
লবঙ্গে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট রয়েছে। এ ছাড়া এতে রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েড, ফেনোলিক যৌগ আর ভিটামিন সি। এই অ্যান্টি–অক্সিডেন্টগুলো ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিকেলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধব্যবস্থা গড়ে তুলতে সাহায্য করে। তা ছাড়া কোষকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমায় লবঙ্গ।
২. প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে
লবঙ্গে রয়েছে ইউজেনল, যার শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বা প্রদাহরোধী গুণ আছে। নিয়মিত লবঙ্গ খেলে আর্থ্রাইটিসের মতো প্রদাহজনিত রোগে আরাম পাওয়া সম্ভব।
৩. দাঁত ও মুখের জন্য উপকারী
দাঁতের সমস্যা সমাধানের জন্য বহু শতাব্দী ধরে লবঙ্গ ব্যবহার হয়ে আসছে। লবঙ্গে থাকা ইউজেনল একটি প্রাকৃতিক ব্যথানাশক আর অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে এটি দাঁত ও মাড়ির ব্যথা থেকে মুক্তি দেয়। এটি মুখের ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়াগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি সতেজ নিশ্বাস ও মুখগহ্বরের স্বাস্থ্যরক্ষার কাজ করে।
৪. অন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়
লবঙ্গ পেটের গ্যাস, ফাঁপা ভাব আর বদহজম কমিয়ে হজমে সাহায্য করতে পারে। এটি পাচক এনজাইমগুলোর নিঃসরণকে উদ্দীপিত করতে এবং পুষ্টির শোষণ বাড়াতে সক্ষম। এ ছাড়া বমিভাব দূর করে পেটকে স্বস্তি দিতে সহায়তা করে এই মসলা।
৫. রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে
কিছু গবেষণায় বলা হয় যে লবঙ্গ রক্তের শর্করার নিয়ন্ত্রণ করতে ভালো অবদান রাখতে পারে। লবঙ্গের সক্রিয় যৌগগুলো ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা বাড়াতে পারে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
৬. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়
লবঙ্গে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে, যা একটি শক্তিশালী ইমিউন সিস্টেমের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত লবঙ্গ খেলে শরীরের অসুস্থতার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য তা রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে পারে।
৭. হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায়
লবঙ্গের অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট আর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। এটি রক্তচাপ কমাতে, রক্তনালির কার্যকারিতা ভালো রাখতে ও হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।
৮. হাড়ের জন্য ভালো
লবঙ্গ ম্যাঙ্গানিজ এবং ভিটামিন কে–এর একটি ভালো উৎস, যা শক্তিশালী হাড় তৈরিতে এবং হাড়ের খনিজ পদার্থগুলো ঠিক রাখার জন্য প্রয়োজনীয়। আপনার দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় লবঙ্গ অন্তর্ভুক্ত করলে শক্তিশালী হাড় গড়তে তা অবদান রাখতে পারে। বিশেষ করে হাড় ফাঁপা হয়ে আসা বয়স্কদের জন্য এটি বেশ উপকারী।
৯. শ্বসনতন্ত্রের জন্য উপকারী
লবঙ্গের অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বা জীবাণুরোধী বৈশিষ্ট্য শ্বাসযন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। এটি কাশি, সর্দি এবং শ্বাসকষ্টের উপসর্গগুলো উপশম করতে সাহায্য করে। লবঙ্গ শ্বসনতন্ত্রের প্রদাহ কমায় এবং শ্বাসনালি পরিষ্কার রাখে।
১০. মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ায়
লবঙ্গে থাকা ইউজেনল মস্তিষ্কের কোষগুলোকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস আর প্রদাহ থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে। এটি নিউরোডিজেনারেটিভ বা স্নায়বিক রোগের ঝুঁকি কমাতে অবদান রাখতে পারে। সব মিলিয়ে মগজকে ধারালো রাখে লবঙ্গ।
তথ্যসূত্র: ভেরি ওয়েলফিট
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।