আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারত-চীন সংঘর্ষ নিয়ে এবার মুখ খুললেন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। ওই ঘটনায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তার শব্দ চয়নে আরও মন দেওয়া উচিত বলে সতর্ক করলেন মনমোহন সিং। তার অভিমত, মোদির শব্দ চয়নেই সীমান্তে চীনের অবস্থান শক্ত হচ্ছে।
গত ১৫ জুন পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপতক্যায় ভারত-চিন সংঘর্ষে এক কর্ণেলসহ ২০ জন ভারতীয় সেনা সদস্যদের মৃত্যুর পর ১৯ জুন সর্বদলীয় বৈঠক করেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। সেখানে তিনি জানিয়েছিলেন ‘চীনা সেনা ভারতীয় ভূখন্ডে প্রবেশ করেনি এবং ভারতীয় সেনা চৌকিও (বিপিও) দখল করেনি।’
প্রধানমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের পর স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন ওঠে যে তবে সীমান্তে ২০ জন ভারতীয় সেনা জওয়ানের মৃত্যু কিভাবে হল? এই ইস্যুতেই গত কয়েকদিন ধরে লাগাতার তোপ দেগে চলেছেন রাহুল গান্ধী, পি. চিদাম্বরম, রণদীপ সুরজেওয়ালাসহ দেশটির প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা। তাদের প্রশ্ন ভারত কি তবে চীনকে নিজেদের জমি ছেড়ে দিল? গালওয়ান কি ভারতের অংশ নয়? তবে সরকার কেন চীনের দাবিকে কড়া ভাবে মোকাবিলা করছে না। কংগ্রেসের প্রশ্ন চীনের তরফে দাবি করা হয়েছে তাদের সেনা ভারতীয় ভূখন্ডে প্রবেশ করেনি-সেক্ষেত্রে ভারতীয় সেনাই কি শর্ত লঙ্ঘন করেছে? একধাপ এগিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ‘সারেন্ডার মোদি’ বলেও কটাক্ষ করেছেন রাহুল গান্ধী।
সেই ঘটনারই প্রসঙ্গ টেনে সোমবার মোদিকে নিশানা করেন সিনিয়র কংগ্রেস নেতা মনমোহন সিং। এক প্রেস বিবৃতি দিয়ে ২০ জন ভারতীয় সেনা জওয়ানের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘শহিদ জওয়ানরা দেশ রক্ষায় নিজেদেরকে বলিদান দিয়েছেন। তারা শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত দেশের জন্য লড়াই করেছেন। তাই আমরা তাদের কাছে ঋণী। তাদের এই বলিদান কোনভাবেই বৃথা হতে দেওয়া যাবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি। সরকার কি সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বা পদক্ষেপ করছে তা দিয়েই ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের বিচার করবে। তাই ভারতের রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা এবং কৌশলগত ও আঞ্চলিক স্বার্থ সম্পর্কিত কোন বিষয়ে মন্তব্য বা ঘোষণা করার সময়ে প্রধানমন্ত্রীর সবসময়ই শব্দ চয়নে সতর্ক থাকা উচিত।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘চীন নির্লজ্জ ও বেআইনিবাবে ভারতের ভূখন্ড গালওয়ান, প্যাংগং সো হ্রদ দাবি করছে। এরজন্য গত এপ্রিল থেকেই আজ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার তারা হামলা চালিয়েছে। চীনের এই হুমকির কাছে ভয় পেয়ে মাথা নত করা যাবে না এবং আমাদের ভূখন্ড নিয়ে আপোশ করা উচিত নয়। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর ব্যবহৃত শব্দ/কথাকে হাতিয়ার করে চীন যাতে নিজেদের দাবির যথার্থতা প্রমাণের সুযোগ না পায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে বিশেষ সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। এই সংকট মোকাবিলায় এবং পরবর্তীতে উত্তেজনা বৃদ্ধি রোধে সরকারের সব বিভাগের একযোগে কাজ করার বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।