নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুর-৩ আসন ঘিরে জমে উঠেছে ভোটের হাওয়া। শ্রীপুর উপজেলা, সদর উপজেলার মির্জাপুর, ভাওয়াল গড় ও পিরুজালী ইউনিয়ন এবং গাজীপুর সেনানিবাস এলাকা নিয়ে গঠিত এ আসনটি এবারও আলোচনার কেন্দ্রে। ঐতিহ্যগতভাবে এ আসনে পালাক্রমে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। তবে এবারের নির্বাচনে তৃতীয় শক্তি হিসেবে মাঠে নামছে জামায়াতে ইসলামী-যা ভোটের সমীকরণে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, গাজীপুর-৩ আসনে মোট ভোটার পাঁচ লাখ ২৬ হাজার ৩০৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার দুই লাখ ৫৯ হাজার ৪০০ জন, নারী ভোটার দুই লাখ ৬৬ হাজার ৮৯৯ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ছয়জন।
সীমানা পুনর্নিধারণের আগে ১৯৮৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত এ আসনে দুইবার করে জয় পেয়েছিল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। পরবর্তীতে ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত টানা চারটি নির্বাচনে জয়ী হয়েছে আওয়ামী লীগ। সর্বশেষ সংসদ সদস্য ছিলেন রুমানা আলী।
এবার বিএনপির প্রতীক ‘ধানের শীষ’ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামছেন দলটির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ডা. এসএম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু। নির্বাচনী প্রস্তুতিতে তিনি মাঠে সক্রিয় রয়েছেন, প্রতিদিনই যুক্ত হচ্ছেন দলীয় ও সামাজিক কর্মসূচিতে।
তিনি বলেন, “দল আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছে, তা আমি নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করতে চাই। জনগণের ভোটে বিএনপিকে এ আসনটি উপহার দিতে পারলেই আমার পরিশ্রম সফল হবে।”
অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামী এবার নতুন উদ্যমে মাঠে। জেলা আমির ড. জাহাঙ্গীর আলম বলছেন, “জনগণ পরিবর্তন চায়। জামায়াতে ইসলামী ঘুষ-দুর্নীতিমুক্ত রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করবে—এটাই আমাদের অঙ্গীকার।”
এ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হাফেজ মাওলানা আলমগীর হোসাইনও আশাবাদী। তার ভাষায়, “জনগণ ইসলামের পক্ষে জেগে উঠেছে। আশা করি, আমরাই এবার ভোটে জয়ী হব।”
ভোটারদের মাঝেও দেখা যাচ্ছে উৎসবের আমেজ। দীর্ঘদিন পর শান্তিপূর্ণ ভোটের প্রত্যাশা করছেন তারা।
শ্রীপুরের ব্যবসায়ী সালেহ উদ্দিন বলেন, “এলাকায় এখন নির্বাচনী আমেজ। মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে ভোট দেওয়ার জন্য।”
স্থানীয় ইমাম মেহেদী হাসান জানান, “দেশে পরিবর্তনের হাওয়া বইছে, মানুষ এবার সুষ্ঠু ভোট দিতে চায়।”
প্রথমবারের মতো ভোট দিতে যাচ্ছেন কলেজছাত্র আল আমিন। তিনি বলেন, “আমার জীবনের প্রথম ভোটটি নিজ হাতে দিতে চাই। এবার যেন কেউ অন্যের ভোট না দেয়।”
আর স্থানীয় গৃহিণী পারভীন জাহান বলেন, “বছরের পর বছর ভোট দিতে পারিনি। এবার পরিবেশ ভালো থাকলে অবশ্যই ভোট দেবো—তবে এমন প্রার্থীকে, যিনি সত্যিই আমাদের পাশে থাকবেন।”
গাজীপুর-৩ আসনের ভোটযুদ্ধ তাই শুধু দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সীমাবদ্ধ নয়—এটি এখন জনগণের প্রত্যাশা, পরিবর্তন আর অংশগ্রহণের লড়াই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



