জুমবাংলা ডেস্ক : চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে অপহরণ করে লঞ্চযোগে ঢাকায় নেওয়ার পথে ধ’র্ষণের ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে ধ’র্ষণের শিকার ছাত্রীটি বাড়িতে ফিরে আসলে উল্টো তাকেই দায়ী করে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর আদায় করা হয়েছে। এ সময় সালিশি বৈঠকে বেত্রাঘাত করেন স্থানীয় ইউপি সদস্য।
ঘটনার পর ঘটনার শিকার ছাত্রীটির মা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। সেখানে জবানবন্দিও দিয়েছে ওই ছাত্রী। এরইমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে ডাক্তারি পরীক্ষা।
থানায় দায়ের করা মামলা ও আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে জানা গেছে, ফরিদগঞ্জের বালিথুবার আব্দুল হামিদ উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে একই এলাকার থাই এলমুনিয়ামের মিস্ত্রি ফারুক উকিল (২৪) প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। গত ৩০ অক্টোবর ছাত্রীটি স্কুলে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। এ সময় তাকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় জোর করে তুলে প্রথমে চাঁদপুর নিয়ে যায় ফারুক। পরে লঞ্চযোগে ঢাকায় নিয়ে যায়। লঞ্চে কেবিনে অবস্থান করার সময় ছাত্রীকে একাধিকবার ধ’র্ষণ করে। পরে সদরঘাট পৌঁছে আরেকটি লঞ্চযোগে তাকে নিয়ে চাঁদপুর ফিরে আসে ফারুক।
এদিকে, এলাকায় আসার পর ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলে বিয়ে এবং সালিশের মাধ্যমে সুরাহার কথা বলেন স্থানীয় ইউপি সদস্য হারিছ মিয়া, মহসীন তপাদার। গত তিন দিন আগের ওই সালিশে তারা ছাত্রীর কাছ থেকে পাঁচটি ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রাখেন। একইসঙ্গে ইউপি সদস্য হারিছ মিয়ার নির্দেশে ছাত্রীটিকে বেত্রাঘাত করা হয়।
ঘটনার ছয় দিন পর গত ৪ নভেম্বর ছাত্রীটির মা বাদী হয়ে ফারুক উকিলকে প্রধান এবং ইউপি সদস্যসহ সালিশে উপস্থিতদের অভিযুক্ত করে ফরিদগঞ্জ লিখিত অভিযোগ করেন। পুলিশ ঘটনাটি আমলে নিয়ে মামলা হিসেবে গ্রহণ করে। পরদিন ৫ নভেম্বর ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ছাত্রীটিকে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। একইসঙ্গে চাঁদপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাসান জামানের আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে ছাত্রীটি।
বালিথুবা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এইচ এম হারুন বলেন, ইউপি সদস্য হারিছ মিয়া তাকে মুঠোফোনে ছেলে-মেয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনার কথা জানান। আমি তাকে বলেছি যদি পুলিশের বিষয় হয়, তাহলে পুলিশে খবর দিতে। আর যদি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার বিষয় হয়, তাহলে সাদা কাগজে উভয়ের অভিভাবকের স্বাক্ষর রেখে তাদের জিম্মায় ছেলে-মেয়েকে হস্তান্তর করে পরে উভয়পক্ষের সম্মতিতে বৈঠকের আয়োজনের জন্য। কিন্তু ধ’র্ষণসহ অন্য বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হোসেন গত বুধবার সন্ধ্যায় বলেন, মামলা দায়েরের পর অভিযুক্তদের আটকের চেষ্টা চলছে।
ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রকিব বলেন, ‘ধ’র্ষণের ঘটনায় সালিশের কোনও সুযোগ নেই। কিন্তু সালিশের নামে কালক্ষেপণ, স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর আদায় এবং বেত্রাঘাতের মতো ঘটনা ঘটেছে, যা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।