লাইফস্টাইল ডেস্ক: দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে আমাদের অসুবিধা, সমস্যা লেগেই থাকে। তার মধ্যে কাজের ফাঁক পাওয়া যায় না। সময় মতো প্রতিকার নিতে সবসময় সুযোগ হয়ে ওঠে না। ব্যস্ত কাজের ফাঁকে ছোটখাটো দরকারে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার সময় অপ্রতুল হয়ে ওঠে।
এরকম অবস্থায় আমরা দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করা জিনিসের গুণাগুণের উপর নির্ভর করে থাকি। ছোটখাটো টোটকা যে কতোটা কার্যকরী হতে পারে তা তখনই বুঝতে পারি।
আমাদের আজকের দিনে ডাক্তার এতটা সহজে পেয়ে গেলেও আগের দিনে ডাক্তার পাওয়া এতটা সহজ ছিল না। তাই আগেকার দিনে এরকম টোটকা তে পুরনো দিনের মানুষেরা নির্ভর করতেন।
কম বেশি আমাদের সবার বাড়িতেই বর্তমানে বা কোনো সময় পুরনো দিনের মানুষ আছেন বা থাকতেন। তাদের মুখে আমরা অনেকেই শুনেছি।
আজ সেরকম একটা জিনিসের গুণাগুণ বলবো যা আমাদের সবার বাড়িতেই পাওয়া যায়। বলা ভালো সবার বাড়ির হেঁসেলে সে জিনিস থাকে। রান্না করার জন্যে অপরিহার্য সেই জিনিস হলো সরিষার তেল।
সরিষার তেলের গুণ যেমন রান্নার ক্ষেত্রে রয়েছে, তেমনই প্রতিদিনের অনেক ছোটখাটো সমস্যাতে এর প্রয়োগ আছে।
তাহলে সময় নষ্ট না করে আসুন আজকের প্রতিবেদনে জেনে নিই সরিষার তেলের অপরিহার্য পাঁচটা গুণ…
১. ত্বকের জন্য
সরিষার তেলে থাকে প্রয়োজনীয় অনেক উপাদান যা আমাদের ত্বকের জন্যে খুব উপকারী। এর মধ্যে আছে প্রোটিন, ভিটামিন ই, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিড, এবং পরিমাণ মতো ভিটামিন এ। সরিষার তেল আপনার ত্বকের ব্রণ হোক বা ট্যান পড়া, সব ক্ষেত্রেই সর্ষের তেল কাজে দেবে।
অল্প পরিমাণে সরিষার তেল হাতে নিয়ে ভালো করে ম্যাসেজ করুন আপনার ট্যান পড়া জায়গায়। তারপর তুলো জলে ভিজিয়ে আস্তে আস্তে মুছে নিন। কিছুদিনের মধ্যেই চোখে পড়ার মতো উপকার দেখতে পাবেন।
অনেকেই আছে যারা মুখের কালো দাগ নিয়ে চিন্তিত থাকেন। অনেকে ব্রণর জন্যে চিন্তিত। ব্রণ কমে গেলেও দাগ থেকে যায়। এর সহজ সমাধান আছে। দু চামচ সর্ষের তেল নিয়ে তার মধ্যে এক চামচ নারকেল তেল মেশান। এর মধ্যে এক চামচ লেবুর রস আর দু চামচ টক দই দিয়ে একটা প্যাক বানিয়ে মুখে মাখুন। মিনিট দশেক পর ধুয়ে ফেলুন। শুধু দাগ যাবেনা, সাথে মুখের জেল্লা বাড়বে।
২. আর্থ্রাইটিসের উপশম
আমাদের চেনা পরিচিতদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা এই রোগে ভুগছেন। ব্যাথায় অনেকেই জর্জরিত। পেইনকিলার নিয়ে দিনের পর দিন কাটাচ্ছেন। এর থেকে নিরাময়ের জন্যে একবার এই অতি পরিচিত তেলের উপর বিশ্বাস করে দেখতে পারেন।
সরিষার তেল আর আদা এই দুটোতেই এমন উপাদান থাকে যা প্রদাহজনিত উৎসেচকের ক্রিয়ার গতি কমিয়ে তোলে। ফলে ব্যাথার থেকে আরাম পাওয়া যায়। জয়েন্টের ব্যাথার হাত থেকে নিরাময় পেতে সরিষার তেলে পরিমাণ মত কর্পূর মেশান। তেল টা গরম করে ঠান্ডা হতে দিন। এবার সেই তেল দিয়ে মালিশ করুন। আরাম পাবেন।
৩. হার্টের সুরক্ষায়
আজকাল ডাক্তাররা তেল খেতে বারণ করেন যাদের হার্টের সমস্যা আছে। অনেকে বিকল্প হিসাবে নারকেল তেল বা সয়াবিন তেল বা অলিভ তেল দিয়ে রান্না করেন।
তবে পরিমিত পরিমাণে খেলে কিন্তু সরিষার তেল এই সব তেলের থেকে অনেকটাই ভালো। এতে আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। ফলে আপনার কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে তোলে।
৪. রক্ত ঠিক রাখে
সরিষার তেল আমাদের শরীরের রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে এবং যাতে বাধাপ্রাপ্ত না হয় তার দিকে নজর রাখে। ফলে শরীর ঠিক থাকে আর আমাদের শরীরের সারাদিনের ক্লান্তি ভরা পেশী গুলোকেও উজ্জীবিত এবং সবল রাখে। একইসাথে এই তেল শুধু আমাদের কোলেস্টেরল কমায় না, সাথে লোহিত রক্ত কণিকার গঠনে ভূমিকা রাখে।
৫. ঠান্ডা থেকে বাঁচায়
ছোটখাটো ঠান্ডা আমাদের সবারই লাগে। তার জন্য আমরা কেউ ডাক্তারের কাছে যাই না। সরিষার তেল এই ঠান্ডার কষ্ট থেকে বাঁচায়। শরীরে ঠান্ডা লাগলে দুই হাতে তেল নিয়ে ভালো করে বুকে ম্যাসেজ করুন। আরাম তো পাবেন সাথে বুকের জমা কফ বেরোতে বা কমতে সাহায্য করবে। একই সাথে বন্ধ নাক খোলার জন্যে এক বাটি পানি নিয়ে কোয়েল ফোঁটা সরিষার তেল ফেলুন। এবার পানি একটু গরম করে তার ভাপ নিন। দেখবেন বন্ধ নাক খুলে গেছে। ছোটো বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সর্ষের তেল দিয়ে এই বুকে বা পায়ের তলায় মালিশ খুবই কার্যকরী।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।