জুমবাংলা ডেস্ক : সমাপনী পরীক্ষার্থী সুবর্ণা আক্তার (১১) কোচিং করতে গিয়ে তার সহপাঠীর কাঁচির আঘাতে চোখ হারিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার আঙ্গারগাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) সকাল পৌনে ৯টার দিকে ওই প্রতিষ্ঠানের কক্ষে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী সুবর্ণা আক্তার (১১) কোচিং ক্লাস করতে গেলে তার সহপাঠীরা কাঁচির ঘা দিয়ে তার চোখ নষ্ট করে দিয়েছে বলে জানা গেছে।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, প্রতিদিনের মতো আঙ্গারগাড়া গ্রামের আবদুল হাকিমের একমাত্র মেয়ে সুবর্ণা আক্তার কোচিং করার জন্য সকাল সাড়ে ৮টার সময় স্কুলের আসে। এ সময় সুবর্ণার সহপাঠী মুন্না, আসিফ, মিজান, রাব্বি, রাকিব,সজীব, সুমন ও ইশতিয়াক স্কুলের উত্তর পাশের একটি পরিত্যক্ত কক্ষে ধূমপান করছিলো।
এ সময় সুবর্ণা ও তার বান্ধবীরা পাশের কক্ষের সহপাঠীদের সিগারেট পান করার দৃশ্য ভাঙ্গা দরজার ফুটো দিয়ে বারবার দেখছিল। যখন সুবর্ণা দরজার ফুটো দিয়ে দেখছিল তখন মুন্না ও আসিফ কাঁচি দিয়ে গুতা দিলে সুবর্ণার বাম চোখে আঘাত লাগে।
এ সময় তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে পাশেই আঙ্গারগাড়া বাজারে তার বাবা চায়ের দোকানে নিয়ে যায়। সেখান থেকে সুবর্ণার বাবা তাকে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। ভালুকায় তার চোখের অবস্থা খারাপ দেখে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। রবিবার সকালে চক্ষু বিভাগের ডাক্তার সুবর্ণার চোখ অপারেশ করেন।
ডাক্তার জানান, সুবর্ণার বাম চোখ অন্ধ হয়ে গেছে। সে আর ওই চোখে কিছুই দেখবে না।
ওই স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্র জানায়, তাদের ক্লাসে মোট ৫৩ জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। স্কুলের ক্লাস শুরু হওয়ার আগে সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত সায়ের মেম্বারের ছেলে শাহীন নামে এক ব্যক্তি ছাত্র-ছাত্রীদের কোচিং করান। বিনিময়ে প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৩০০ টাকা করে আদায় করা হয়। সেই কোচিং ক্লাস করার জন্য সুবর্ণা এসে ছিল।
সুবর্ণার বাবা আবদুল হাকিম জানান, আমি একজন চা বিক্রেতা। আমার একমাত্র মেয়েকে শত্রুতা করে চোখ নষ্ট করে দিয়েছে। অপারেশনের পর ডাক্তার জানিয়েছেন সে ওই চোখে আর দেখবে না। আমার মেয়েটি কোচিং করতে এসে চোখ হারাল। মেয়ের অপারেশন শেষ হয়েছে, আজকে এসে আমি এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দেব।
আঙ্গারগাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোফায়েল আহম্মেদ জানান, কিসের আঘাতে সুবর্ণা চোখ আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে আমি জানি না। কে করেছে সেটাও জানি না। কোন চোখে আঘাত পেয়েছে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ডান পাশ না বাম পাশ সেটা মনে করতে পাচ্ছি না।
উপজেলা প্রাথমিক অফিসার জুয়েল আশরাফ জানান, আমি তো কিছুই জানি না। হেড মাস্টার তো কিছুই বলেননি। ভালুকা মডেল থানার ওসি জানান, এ ব্যাপারে আমার কাছে কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।