জুমবাংলা ডেস্ক : প্রজনন মৌসুমে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে গত ছয় দিনে রূপালি ইলিশসহ ১৫১ মেট্রিক টন বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরা পড়েছে। এটি গত বছরের তুলনায় ৯৪ মেট্রিক টন বেশি। এই বিপুল পরিমাণ মাছের মধ্যে ২০ মেট্রিক টন বিদেশে রপ্তানির জন্য প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছে।
গেল অক্টোবরের ৯ থেকে ৩০ তারিখ অর্থাৎ ২২ দিন সব রকমের ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা ছিল। প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় সরকারের এ নিষেধাজ্ঞা কাজে আসছে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। নিষেধাজ্ঞার পর সাগরে গিয়ে মাছ নিয়ে তাড়াতাড়িই ফিরে আসছেন জেলেরা।
কারণ অল্প সময়েই তাদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে রূপালি ইলিশসহ নানা প্রজাতির মাছ। জালে প্রচুর মাছ পাওয়ায় জেলে ও বোটমালিকসহ মৎস্য শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা আনন্দে ভাসছেন। আবার মাছের দামও অনেকটা নাগালে থাকায় ক্রেতারাও খুশি।
কক্সবাজার জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির নেতারা জানান, নিষেধাজ্ঞার দিনগুলোতে মৎস্য শিল্পে জড়িতদের খুবই কষ্ট হয়। ওই সময়টাতে সরকারি সহযোগিতা আরও বাড়ানো উচিত।
মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র সূত্র মতে, নিষেধাজ্ঞা শেষে মাত্র ছয় দিনেই ধরা পড়েছে ১৫১ মেট্রিক টন সামুদ্রিক মাছ। আর এর মধ্য থেকে ২০ মেট্রিক টন মাছ বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে।
কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে দেখা যায়, প্রাণ চাঞ্চল্য ভরপুর কেন্দ্রে সারি সারি ট্রলার থেকে মাছ নামানো হচ্ছে। এসব মাছ ঝুঁড়ি ভর্তি করে স্তূপ করে আড়তে রাখা হচ্ছে। দর-দাম ঠিক করে কিনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানোর জন্য ট্রাকে বরফ দিয়ে প্যাকেজিং করে চলছে বোঝাই। আর এসব কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কয়েক হাজার মৎস্য শ্রমিক।
এদিকে নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ের ক্ষতি পুষিয়ে উঠবে বলে আশাবাদী মৎস্যজীবীরা। তাদের অনেকেরই ভাষ্য, নিষেধাজ্ঞার সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থ জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত ২০ কেজি চাল পাননি। অনেকেরই সংসার চালাতে ধারদেনা করতে হয়েছে। এখন সেসব পুষিয়ে উঠবে বলে আশা তাদের।
কক্সবাজার ফিশারি ঘাটে মাছ কিনতে আসা মো. নাসির জানান, জেলেরা প্রচুর পরিমাণে ইলিশসহ বিভিন্ন মাছ নিয়ে ফিরছেন। দামও সহনীয়। তিনি ঘুরে ঘুরে বেশকিছু মাছ কিনেছেন।
মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রর বিপণন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন জানান, ৩১ অক্টোবর ল্যান্ডিং হয়েছে ছয় মেট্রিক টন মাছ, ১ নভেম্বর ১১ মেট্রিক টন, ২ নভেম্বর ২৫ মেট্রিক টন, ৩ নভেম্বর ৫০ মেট্রিক টন। দিনে দিনে মাছ আহরণের পরিমাণও বাড়ছে।
কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের নিবার্হী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইসানুল হক বলেন, ‘গত ছয় দিনে ইলিশ ও রূপচাঁদাসহ ১৫১ মেট্রিক টন সামুদ্রিক মাছ আহরণ হয়েছে। গত বছরের একই সময়ে ধরা পড়েছিল মাত্র ৫৭ মেট্রিক টন। সে হিসাবে এবার গত বছরের তুলনায় ৯৪ মেট্রিক টন মাছ বেশি পাওয়া গেছে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে ২০ মেট্রিক টন মাছ বিদেশে রপ্তানি করা হবে।’
তিনি জানান, এই ছয় দিনে ধরা পড়া মাছের মধ্যে ইলিশ রয়েছে ২৮ মেট্রিক টন আর রূপচাঁদা ১৩ মেট্রিক টন। বাকিগুলো অন্যান্য সামুদ্রিক মাছ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।