সানি লিওন
করেনজিত কৌর ভোহরা (ইংরেজি: Karenjit Kaur Vohra; সানি লিওন Sunny Leone (/liˈoʊni/) নামে সুপরিচিত; জন্ম: ১৩ মে ১৯৮১) হলেন একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত কানাডীয় এবং মার্কিন অভিনেত্রী, ব্যবসায়ী, মডেল এবং প্রাক্তন প র্নোতারকা। এছাড়াও তিনি কারেন মালহোত্রা নামেও অভিনয় করেছেন। ২০০৩ সালে তাকে পেন্টহাউস বর্ষসেরা পেটস নির্বাচিত হন, অতঃপর তিনি ভিভিড এন্টারটেনমেন্টের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন। ২০১০ সালে, তিনি ম্যাক্সিম বিশ্বসেরা ১০ পর্ণোতারকার একজন নির্বাচিত হন। তিনি বেশ কয়েকটি স্বাধীন মূলধারার চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশন অনুষ্ঠানে অভিনয় করেছেন। ২০১২ সালে, তিনি পূজা ভাটের জিসম ২ নামক যৌনাবেদনময়ী থ্রিলার চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক করেছেন। বর্তমানে তিনি হিন্দি চলচ্চিত্রে কাজ করেন।
সানি লিওনির প্রাথমিক জীবন
সানি লিওন Sunny Leone ১৯৮১ সালের ১৩ই মে তারিখে কানাডার অন্টারিওর সার্নিয়া নামক শহরের এক শিখ পাঞ্জাবি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছেন। তার বাবা তিব্বতে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং দিল্লিতে শৈশব অতিবাহিত করেছেন, অন্যতদিকে তার মা (যিনি ২০০৮ সালে মারা গিয়েছেন) ছিলেন হিমাচল প্রদেশের সিরমৌর জেলার বাসিন্দা ছিলেন। শৈশবে তিনি খুব ক্রীড়াপ্রেমী ছিলেন, যার ফলে ছেলেদের সাথে রাস্তায় হকিও খেলতেন। পরবর্তীতে তিনি হিমায়িত হ্রদের উপর আইস স্কেটিং করতেন।
যেহেতু তার পরিবার শিখ ছিল, একারণে তারা তাকে পাবলিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করা বিষয়ে নিরাপদ বোধ করতো না। মাত্র ১৬ বছর বয়সে অন্য বিদ্যালয়ের একজন বাস্কেটবল খেলোয়াড়ের কাছে তিনি তার কুমারীত্ব হারান এবং ১৮ বছর বয়সে তিনি নিজেকে একজন উভকামী হিসেবে আবিষ্কার করেন। যখন ১৩ বছর বয়সী ছিলেন তখন তিনি তার পরিবারের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানের ফোর্ট গ্রাটিয়টে চলে আসেন, এর এক বছর পর তারা ক্যালিফর্নিয়ার লেক ফরেস্টে স্থানান্তর হন; যেখানে তার নানীর ইচ্ছায় তাদের পুরো পরিবার একসাথে বসবাস করেছে।
সানি লিওনের কর্মজীবন
প র্নো শিল্পে কাজ করার পূর্বে, তিনি প্রথমে জিফি লুবে নামক একটি জার্মান বেকারিতে কাজ করেছেন এবং পরবর্তীতে একটি ট্যাক্স এবং রিটায়ারমেন্ট ফার্মে কাজ করেছেন।
অরেঞ্জ কাউন্টিতে একজন পিডিঅ্যাট্রিক নার্স হিসেবে অধ্যয়নকালে, তার এক বহিরাগত নৃত্যশিল্পী এবং সহপাঠীর মাধ্যমে জন স্টিভেনসের সাথে তার পরিচয় হয়। স্টিভেনস, যিনি একজন প্রতিনিধি ছিলেন, পরবর্তীতে তাকে পেন্টহাউস ম্যাগাজিনের আলোকচিত্রী জে অ্যালেনের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। তার প্রাপ্তবয়স্ক কর্মজীবনের জন্য একটি নাম ঠিক করতে, তিনি আসল নাম হিসেবে সানি নামটি উল্লেখ করেছিলেন এবং লিয়ন নামটি ঠিক করেন পেন্টহাউস ম্যাগাজিনের সাবেক মালিক বব গুচ্চিওনে। তিনি পেন্টহাউস ম্যাগাজিনের জন্য পেন্টহাউস মাসের সেরা পেট হিসেবে ২০০১ সালের মার্চ মাসের সংস্করণের জন্যে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান, পরবর্তীতে একই বছরে হাসলার ম্যাগাজিনের হলিডে ফিচারে “হাসলার হানি” হিসেবে উপস্থিত হয়েছে। অতঃপর তিনি অনেকগুলো ম্যাগাজিনের কভার গার্ল হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন; যার মধ্যে চেরি, মায়েস্টিকু ম্যাগাজিন, হাই সোসাইটি, শয়ান্ক, এভিএন অনলাইন, লেগ ওয়ার্ল্ড, ক্লাব ইন্টারন্যাশনাল এবং লোরিডার অন্যতম। অন্যদিকে তিনি একজন মডেল হিসেবে মডএফএক্স মডেলস, সুজে র্যান্ডাল, কেন মার্কাস এবং ম্যাক অ্যান্ড বাম্বলের সাথে কাহ করেছেন। এছাড়াও তিনি আর্ড্রিয়ানা সেইজ, জেনা জেমসন, জেলেনা জেনসেন এবং আরিয়া জিওভানির মতো তারকাদের সাথে কাজ করেছেন।
২০০৩ সাল সানি লিওনের ক্যারিয়ার দারুণভাবে মোড় নেয়। এই বছর তিনি ‘পেন্টহাউস পেট’ নির্বাচিত হন এবং প র্নোগ্রাফিক চলচ্চিত্র জগতের অন্যতম সেরা নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ভিভিড ইন্টারটেইনমেন্টের সঙ্গে তিন বছরের একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। তবে এই চুক্তির শর্ত অনুসারে তিনি কেবল সমকামী মহিলা চরিত্রে অভিনয় করেছেন। সানি অভিনীত প্রথম ছবিটির নাম ছিল সানি, যেটি ২০০৫ সালের ডিসেম্বর মাসে মুক্তি পেয়েছে। তার পরবর্তী ছবিটিও মুক্তি পায় ভিভিড এন্টারটেইনমেন্টের প্রযোজনায়তেই; যার নাম ছিল ভার্চুয়াল ভিভিড গার্ল সানি লিওন। এভাবে কোনো অভিনেত্রীর নামে ছবি প্রকাশের ঘটনা ভিভিডের ইতিহাসে এটাই প্রথম ছিল। এই ছবিটিতে তিনি মিকালা মেনডেজ এবং ডেইজি ম্যারির মতো অভিনয়শিল্পীদের সাথে অভিনয় করেছিলেন। এই ছবিটি তাকে এভিএন পুরস্কার জয়লাভ করতে সাহায্য করেছিল। অতঃপর তিনি সানি ইন ব্রাজিল এবং দ্য সানি এক্সপেরিমেন্ট নামে দুটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন, যেগুলো ২০০৭ সালে মুক্তি পেয়েছিল।
২০০৭ সালের মার্চ মাসে সানি লিওন Sunny Leone ভিভিড এন্টারটেইনমেন্টের আরও একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির আওতায় তিনি ছয়টি ছবিতে অভিনয় করেছেন। আর এই চুক্তির অধীনেই প্রথমবারের মতো তিনি প্রথম কোনো পুরুষ অভিনেতার সঙ্গে কাজ করেছেন। সানির বাগদত্তা ম্যাট এরিকসন এই ছবিতে তার সহ-শিল্পীর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। পুরুষের সঙ্গে তার অভিনীত প্রথম ছবিটির নাম ছিল সানি লাভস ম্যাট। এই ছবিটি তাকে ২০০৯ সালের সেরা নারী অভিনেত্রীর পুরস্কার এনে দেয়। একই সাথে বেশ কয়েকটি ছবিতে অভিনয়ের পর সানি উপলব্ধি করেন যে ম্যাটের সাথে তার একটানা অভিনয় তার জনপ্রিয়তা কমিয়ে দিচ্ছে। এর ফলস্বরূপ তিনি অন্য অভিনেতাদের সঙ্গেও অভিনয় করতে শুরু করেন। যাদের টমি গান, চার্লস ডেরা, জেমস ডিন অন্যতম।
সানি লিওনের সিনেমা
সানির ব্যক্তিগত জীবন
২০০৬ সালের জুন মাসে, সানি লিওন মার্কিন নাগরিকত্ব লাভ করেন। কিন্তু কানাডায় দ্বৈত নাগরিক হিসেবে থাকার পরিকল্পনা করেন। ২০১২ সালের ১৪ই এপ্রিল তারিখে, লিওন দ্য নিউ ইন্ডয়িান এক্সপ্রেস সাক্ষাৎকারে নিজেকে ভারতের অধিবাসী হিসেবে ঘোষণা করেন, তিনি ব্যাখ্যা করেন যে তিনি ভারতের বৈদেশিক নাগরিক ছিলেন এবং তার বাবা ভারতে বসবাস করতেন, আর তিনি বৈদেশিক নাগরিকত্ব পাওয়ারও যোগ্য ছিলেন। অতঃপর জিসম ২ চলচ্চিত্রের চিত্রায়নের সময় তিনি বৈদেশিক নাগরিকত্ব ব্যবহার করে কাজ করেছেন।
সানি লিওন ২০০৮ সালে খুব অল্প সময়ের জন্য কৌতুকাভিনেতা রাসেল পিটার্সের সাথে একটি সম্পর্কে আবদ্ধ ছিলেন।
সানি লিওন সম্পর্কে যে ১০টি কথা
পেডিয়াট্রিক নার্স হওয়ার জন্য পড়াশোনা করছিলেন। তারপর পেন্টহাউস ম্যাগাজিনের এক চিত্র সাংবাদিকের সঙ্গে পরিচয়।
২০০১ সালে তখন থেকেই তার গ্ল্যামার দুনিয়ায় আসা।
সানি প্রথমে শুধুমাত্র মহিলাদের সঙ্গে প র্ন ফিল্ম করবেন বলে স্থির করেছিলেন।
২০০৪ সালে ‘দ্য গার্ল নেক্সট ডোর’-এ অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেন সানি।
বাবা মা তাঁকে ক্যাথোলিক স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছিলেন।
২০০৪ সালে অ্যান্টি বুশ প্রচারের জন্য নিজের চুল ছেটে ফেলে প্রতিবাদ জানান।
১৫ বছর বয়স থেকে রোজগার শুরু করেন। কাজ পান জার্মান বেকারিতে।
প র্ন ছবির বাইরে ২০০৫ সালে একটি টিভি চ্যানেলে তাঁকে প্রথম দেখা যায়। একটি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে রেড কার্পেট রিপোর্টার হয়েছিলেন।
সানি লিওন Sunny Leone জীবনের দ্বিতীয় ছবি ‘ভারচুয়াল ভিভিড গার্ল সানি লিওন’। ছবিটি করে তিনি এভিএন অ্যাওয়ার্ড জেতেন।
প র্নগ্রাফিতে যা অস্কারের সঙ্গে তুলনা করা হয়।
২০১০ সালে ‘ম্যাক্সিম’ ম্যাগাজিনের সমীক্ষায় সানি মোস্ট ১২ প র্ন স্টারের তালিকায় উঠে আসেন।
প্লেবয় এন্টারপ্রাইজের ভাইস প্রেসিডেন্ট ম্যাট এরিকসনের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।
রশ্মিকা মন্দানা Rashmika Mandanna: জীবনের গল্প, ছবি এবং সিনেমা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।