জুমবাংলা ডেস্ক : গতকাল শনিবার রাতে ঢাকার সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় পুলিশ বক্সের সামনে যে হাতবো’মা নিক্ষেপ করা হয়েছিল তা ছিল অত্যান্ত শক্তিশালী। বি’স্ফোরণের পর প্রায় ১০০ গজ দূরের একটি দোকানের শাটারও ভেদ করে চলে যায় ওই বো’মার স্প্লিন্টার।
এ হামলায় দুইজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের একজন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের প্রটোকলের সদস্য। হামলার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত পুলিশ সদস্যকে দেখতে গিয়েছিলেন আইজিপি ড. জাবেদ পাটোয়ারী।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে সায়েন্স ল্যাবে হাতবো’মা বি’স্ফোরণের ওই স্থানে গিয়ে দেখা যায়, হাতবো’মার বি’স্ফোরণের ক্ষত চিহ্নটি এখনো স্পষ্ট। র’ক্তের শুকনো দাগও লেগে আছে। সিআইডি’র ক্রাইম সিন লেখা ফিতা দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে এলাকাটি।
বো’মা বি’স্ফোরণের প্রায় ১০০ গজ দূরে অবস্থিত মুজিব মার্কেটের বেনমাস ফ্যাশনের ম্যানেজার সাজ্জাদ হোসেন বলেন, দোকান খোলাই ছিল। বি’স্ফোরণের সময় দোকানে কী যেন এসে লাগে। বের হয়ে দেখি শাটার বক্স ছিদ্র হয়ে কী যেন ভেতরে ঢুকেছে। কিছু না পেয়ে পাশের দোকানের ক্র্যাফটসের শাটার ছিদ্র দেখতে পাই। পরে দুই ইঞ্চি পরিমাণ লোহার টুকরো পড়ে থাকতে দেখতে পাই।
তিনি আরও বলেন, পরে জানতে পারি, সেটি ছিল বো’মার স্প্লিন্টার। পুলিশ সেটা নিয়ে গেছে।
এদিকে, এ বো’মা হামলার ঘটনায় অজ্ঞাতনামাদের নামে নিউমার্কেট থানায় মামলা করেছেন সায়েন্সল্যাব পুলিশ ফাঁড়ির এসআই জহিরুল ইসলাম। বি’স্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলাটি করেন তিনি।
মামলার এজাহারে বলা হয়, দুস্কৃতিকারীরা হামলা করে পুলিশের মনোবল ভেঙে দিতে এবং কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের হ’ত্যার উদ্দেশ্যেই এই হামলা করা হয়।
এ বিষয়ে পুলিশের আইজিপি ড. জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, বো’মাটি ছিল শক্তিশালী আইইডি (ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস)। কারা হামলা চালিয়েছে, তা বের করতে পুলিশের সব ইউনিট কাজ করছে। সারাদেশে পুলিশকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
ঢাকার পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে বো’মা হামলার ঘটনা পূর্বের পুলিশের ওপর হামলার ঘটনার বাইরে কিছু নয়। এটারও টার্গেট ছিল পুলিশ। আলামত জব্দ করার পাশপাশি আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে কাজ করা হচ্ছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক জঙ্গি তৎপরতা নজরদারি প্রতিষ্ঠান সাইট ইন্টেলিজেন্স জানিয়েছে, পুলিশের ওপর এ বো’মা হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট গ্রুপ।
হামলার কয়েক ঘণ্টা পরে একটি বার্তায় সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ বলছে, ঢাকায় পুলিশের ওপর ওই বো’মা হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেছে আইএস গ্রুপ। এর আগের হামলা দুইটিরই দায়িত্ব স্বীকার করেছিল এই জঙ্গি গোষ্ঠীটি।
এ বিষয়ে রোববার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশে মটরযান আইন বলে কোন আইন নেই, অথচ এই নামে সামাজিক নেটওয়ার্কে গুজব রটানো হচ্ছে এই আইনে জরিমান বাড়ানো হয়েছে। আসলে এটাতো মটরযান আইন নয়, এটা হলো সড়ক পরিবহন আইন। এখন আইএস এর নামে অপপ্রচার চলছে কিনা সেটা ভেবে দেখার বিষয় আছে। আমি বিষয়টি নিশ্চিত না হয়ে বলতে পারছি না।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় পুলিশের তৎপরতা বেড়েছে এবং গোয়েন্দারা কাজ করছে। বো’মা হামলার টার্গেট নিঃস্বন্দেহে পুলিশ হতে পারে, কারণ তারা এসব ছোট খাটো ঘটনা দিয়ে টেস্ট কেইস করতে চাইছে বড় ধরণের কোন হামলা করার জন্য। এটা তার পূর্ব প্রস্তুতিও হতে পারে।
অন্যদিকে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, একটি গাড়ির চাকা বাস্ট হলেও বলা হয় আইএস করেছে। ককটেল বাস্ট হলেও বলা হয় আইএস করেছে। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, বাংলাদেশে আইএস-এর কোন অস্তিত্ব নেই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।