আন্তর্জাতিক ডেস্ক: হাইতির প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মোয়িজকে হত্যাকাণ্ডের সময় ঘাতকের বুলেটে মারাত্মক আহত হন তার স্ত্রী মার্টিন মোয়িজ। তিনি এখন হাসপাতালে ভর্তি। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, হাসপাতালে থেকেই জোভেনেল মোয়িজের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বর্ণনা করেছেন মার্টিন মোয়িজ।
তিনি বলেন, ওই দিন মধ্যরাতে ঘাতকের বুলেটে ঝাঁঝরা হয়ে যান মোয়িজ। এত দ্রুত তাদের ওপর হামলা চালানো হয়, যা মৃত্যুর আগে জোভেনেল মোয়িজ কোনো শব্দ পর্যন্ত বলতে পারেননি।
শনিবার (১০ জুলাই) মার্টিন মোয়িজ তার টুইটার অ্যাকাউন্টে একটি ভয়েজ ম্যাসেজ পোস্ট করেন। এতে তিনি ওই দিনের ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, চোখের পলকে খুনির দল আমাদের বাড়িতে প্রবেশ করে, আমার স্বামীকে বুলেটে ঝাঁঝরা করে দেয়। তিনি আরও বলেন, তারা আমার স্বামীকে একটি শব্দ বলারও সুযোগ দেয়নি। যে জঘন্য অপরাধ তারা করেছে তার শাস্তি তাদের পেতেই হবে।
মার্টিন মোয়িজ জানান, তার স্বামীকে রাজনৈতিক কারণেই হত্যা করা হয়েছে। বিশেষ করে জোভেনেল মোয়িজ গণভোট আয়োজন করে হাইতির সংবিধানে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে চেয়েছিলেন। এই কারণেই তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। মার্টিন মোয়িজ বলেন, তারা শুধু জোভেনেল মোয়িজকে হত্যা করেনি, একজন প্রেসিডেন্টের স্বপ্নকে হত্যা করেছে।
তিনি আরও বলেন, আমি কাঁদছি এটা সত্য তবে আমাদের দেশকে পথ হারাতে দিতে আমরা পারি না। প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মোয়িজ আমার স্বামী আমাদের প্রেসিডেন্ট যিনি তার জীবনের বিনিময়ে আমাদের ভালোবেসেছেন, তার রক্ত আমরা বৃথা যেতে দিতে পারি না।’
বিবিসি জানাচ্ছে, কী উদ্দেশ্যে জোভেনেল মোয়িজকে হত্যা করা হয়েছে; বিষয়টি এখনো পরিষ্কার নয়। এই হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে অনেক প্রশ্ন সামনে এসেছে। ঘাতকরা কোনো বাধা ছাড়া কীভাবে একটি দেশের প্রেসিডেন্ট হাউসে ঢুকতে পারল, তা এখনো জানা সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া হাইতির বিরোধীদলীয় নেতারা হত্যাকাণ্ডের মোটিভ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে।
হাইতির প্রাক্তন সিনেটর স্টিভেন বেনোইট স্থানীয় রেডিও চ্যানেলে বলেছেন, কলম্বিয়ার কোনো নাগরিক এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল না। তবে তার বক্তব্যের সপক্ষে তিনি কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। এদিকে হাইতির পুলিশ জানিয়েছে, বেশির ভাগ হত্যাকারী কলম্বিয়ার নাগরিক। এদের মধ্যে দুজন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক বলে জানিয়েছেন তারা।
বুধবার (৭ জুলাই) রাতে ২৮ জনের একটি দল যারা সবাই হাইতির বাইরের দেশের নাগরিক, তারা প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মোয়িজকে নিজ বাড়িতে হত্যা করে। এর মধ্যে অভিযান চালিয়ে ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে হাইতির পুলিশ।
এ ছাড়া তিনজন হত্যাকারী অভিযানে নিহত হয়েছে, বাকি আটজন এখনো পলাতক। এ ছাড়া হত্যাকারীদের মধ্যে কলম্বিয়ার এক অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য রয়েছে বলে জানিয়েছে হাইতির পুলিশ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।