
জুমবাংলা ডেস্ক: সুনির্দিষ্ট চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির অভিযোগে গতকাল নিকেতনের এ ব্লকের ৫ নম্বর সড়কের ১৪৪ নম্বর বাসা থেকে নগদ ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা, ১৬৫ কোটি টাকার এফডিআর চেকসহ গ্রেফতার করা হয় জি কে শামীমকে।
নিকেতনের এই ভবনটির সামনে লেখা জে কে বি কোম্পানি (প্রাইভেট) লিমিটেড। ৫ তলা বিশিষ্ট সেই বাড়ি দেখে মনে হবে যেন কোনো রাজপ্রাসাদ। এই রাজপ্রাসাদেই অফিস করতেন যুবলীগ নেতা জি কে শামীম।
শামীম নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার সন্মানদী ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত আফসার উদ্দিন মাস্টারের ছেলে। তিনি ছিলেন হরিহরদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
যেভাবে উত্থান : যুবলীগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২৯ জুলাই রাতে গুলশানে শপার্স ওয়ার্ল্ড মার্কেটের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় যুবলীগের (দক্ষিণ) সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল হক খান মিলকীকে। ঐ ঘটনার দুই দিন পর র্যাবের হাতে আটক ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের নেতা তারেক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। মতিঝিল এলাকার টেন্ডারবাজি নিয়ন্ত্রণ করতেন মিলকী ও তারেক। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই জন নিহত হওয়ার পর ফাঁকা স্থানটি দখল করেন জি কে শামীম। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে পরিচয় দেন শামীম। ঐ পদে এর আগে ছিলেন এস এম মেজবাহ হোসেন বুরুজ। ২০১৫ সালের ১৯ ডিসেম্বর তিনি মারা যান।
বাংলাদেশের সকল ঠিকাদারকে গণপূর্তে কাজ করতে হলে তাকে বলে কাজ করতে হতো। বাংলাদেশের প্রথম সারির সকল ঠিকাদার তার বাইরে ভয়ে কথা বলার সাহস পেতেন না। যদি কেউ জি কে শামীমকে না জানিয়ে দরপত্র ক্রয় করতেন তার পরিণাম হতো ভয়ংকর।
একাধিক বাড়ি-ফ্ল্যাটের মালিক শামীম : বাসাবো এলাকায় পাঁচটি বাড়ি এবং একাধিক প্লট রয়েছে শামীমের। বাসাবোর কদমতলায় ১৭ নম্বরের পাঁচতলা বাড়িটি জি কে শামীমের। বনানীর ওল্ড ডিওএইচএসে নিজের একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে তার। বাসাবোতে তিনটি ভবন এবং ডেমরা ও দক্ষিণগাঁও ছাড়াও সোনারগাঁ উপজেলা, বান্দরবান ও গাজীপুরে কয়েকশ বিঘা জমি কিনেছেন তিনি।
বর্তমানে তার জি কে বিল্ডার্সের অধীন সরকারের ১৭টি স্থাপনার নির্মাণ কাজ চলছে। এর মধ্যে ৩০ কোটি টাকায় গাজীপুরে র্যাব ট্রেনিং সেন্টার, ৪০০ কোটি টাকায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল ও পঙ্গু হাসপাতালের অবকাঠামো নির্মাণ, ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণ, র্যাব সদর দপ্তরে সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার কাজ, পাবলিক সার্ভিস কমিশন ভবনে ১২ কোটি টাকার কাজ, সচিবালয়ে ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি ভবন নির্মাণ, ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে বিজ্ঞান জাদুঘর নির্মাণ প্রকল্প উল্লেখযোগ্য।
বাসাবো এলাকায় জি কে শামীমের বিষয়ে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চান না। আর খুলবেনই বা কোন সাহসে, যখন দেখেন শামীম চলছেন অস্ত্রধারী ক্যাডার বাহিনী নিয়ে। যার গাড়ির সামনে-পেছনে থাকে ক্যাডারদের গাড়ি। জি কে শামীমের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি গৃহায়ন ও গণপূর্তের ঠিকাদাররাও। তার নাম শুনলেই আঁতকে ওঠেন এলাকার সাধারণ মানুষ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।