গত বছরের ন্যায় এবছরও সরকারি-বেসরকারি স্কুলে লটারির মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালিত হবে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ গোলাম ফারুক।
বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি নীতিমালা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠক সূত্র জানায়, করোনার সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নতুন বছরের স্কুলে ভর্তি নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে। নীতিমালায় ২০২২ সালের শিক্ষাবর্ষে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। টেলিটকের মাধ্যমে লটারি কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
জানা গেছে, এবারের স্কুল ভর্তি নীতিমালায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনা না হলেও দু’একটি নতুন সিদ্ধান্ত রয়েছে। যেমন আগে সরকারি চাকরিজীবী কেউ বদলি হলে তার নতুন কর্মস্থলের কাছাকাছি সরকারি-বেসরকারি স্কুলে সন্তানের ভর্তির সুযোগ দেওয়া হতো। এবারের নীতিমালায় সে সুবিধার সঙ্গে সরকারি চাকরিজীবী কেউ মারা গেলে বা অবসরে গেলে, সেই শিক্ষার্থীর পরিবার অন্যত্র স্থানান্তর হলে সেখানেও সন্তানের ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে। এ সুবিধা একবারের জন্য দেওয়া হবে।
সভা সূত্র জানায়, জেলা পর্যায়ের কিছু শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য একাধিক জেলায় আবেদন করে থাকে। সেই ক্ষেত্রে ভর্তির আগে বা পরে পছন্দের বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য নিজ ও নির্বাচিত জেলার স্কুলে আলোচনা করে তারা ভর্তির বিষয়টি চূড়ান্ত করতে পারবে। এবারও আগের মতোই বেসরকারি স্কুলে ভর্তির আবেদন ফি ২০০ টাকা ও সরকারিতে ১৭০ টাকা রাখা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি বাড়ানো হচ্ছে না। ভর্তি নীতিমালার অন্যান্য বিষয় আগের মতোই থাকছে।
আগে বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণীতে লটারি ও অন্যান্য শ্রেণীতে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হতো। গত বছর করোনাভাইরাস মহামারির কারণে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়।
সভায় অংশ নেওয়া এক কর্মকর্তা জানান, বুধবার মন্ত্রণালয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিবের সভাপতিত্বে সভা হয়েছে। সেখানে মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক, ঢাকার তিনটি শীর্ষ পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, নতুন বছরের ভর্তি নীতিমালা চূড়ান্ত করা হলেও এখনও আবেদনপত্র বিক্রি শুরু ও ভর্তির সময় নির্ধারণ করা হয়নি। আগামী রোববার বৈঠকের রেজুলেশন চূড়ান্ত করার পর মাউশি থেকে ভর্তির আবেদন ফরম বিক্রি এবং ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু ও শেষ করতে সময় নির্ধারণ করে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।
জানা গেছে, এরই মধ্যে আগামী শিক্ষাবর্ষের জন্য ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের প্রস্তুতি নিচ্ছে বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো। রাজধানীর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি ফরম বিতরণ হবে ডিসেম্বরের শুরুতে। আবেদন কার্যক্রম চলবে অনলাইনে। আবেদন ফরম বিতরণের পর অন্তত সাত কার্যদিবস সময় দিতে হবে। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরি করে শিক্ষার্থীদের আবেদন গ্রহণ ও লটারির মাধ্যমে ফলাফল প্রকাশ করবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে পাঁচ হাজার টাকার অতিরিক্ত ফি আদায় করতে পারবে না। একই এলাকায় আংশিক এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন এবং এমপিওবহির্ভূত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা দেওয়ার জন্য শিক্ষার্থী ভর্তির সময় মাসিক বেতন, সেশন চার্জ ও উন্নয়ন ফিসহ বাংলা মাধ্যমে সর্বোচ্চ আট হাজার টাকা এবং ইংরেজি মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা নিতে পারবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাউশি পরিচালক (বিদ্যালয়) বেলাল হোসাইন বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে ভর্তি নীতিমালায় লটারিসহ কয়েকটি বিষয় গত বছরের মতো রাখা হয়েছে। শিগগিরই নীতিমালা জারি করা হবে। এরপরই শুরু হবে ভর্তি ফরম বিক্রি ও জমা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।