আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউরোপের প্রভাবশালী দেশগুলোর মধ্যে স্পেন অন্যতম। পর্যটন ও খেলাধুলা- এ দুয়ের মিশেলে গোটা বিশ্বে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা দেশটির বর্তমান অবস্থা যেন- ভুতের গলির মতো। রাস্তায় কোনো মানুষ নেই। সন্ধ্যে হলে যেন শুরু হয় ভুতের আনাগোনা। মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে দিনে-রাতে এক হয়ে থাকা স্প্যানিয়নরা যেন মুর্ছা গেছেন।
নিস্তেজ বা নুয়ে পড়া স্পেনের এমন দৈন্যদশার একটাই কারণ- মৃত্যু! নভেল করোনাভাইরাসে দিন দিন দেশটিতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে প্রমাণে।
স্পেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য মতে, দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ৯১৩ জন মারা গেছেন। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে- ৯৪ হাজার ৪১৭ জনে। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৯ হাজার ২৫৯ জন। মোট মৃতের সংখ্যা ৮ হাজার ১৮৯ জন।
স্পেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালভাদর ইলার বরাত দিয়ে দেশটির প্রভাবশালী গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বিভিন্ন হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে রয়েছে ৫ হজার ২৩১ জন। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, করোনাভাইরাসের চিকিৎসা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন ১২ হাজার ২৯৮ জন স্বাস্থ্যকর্মী-চিকিৎসক ও নার্স। আক্রান্তরা সবাই নিজ নিজ বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সালভেদর বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে যা ঘটছে, আমরা কখনই তা ভুলতে পারব না। যদি আমরা সংক্রমণের চূড়ান্ত পর্যায়ে নাও এসে থাকি এখন পর্যন্ত, অন্তত চূড়ান্ত পর্যায়ের খুব কাছাকাছি আছি। আমাদের এখন উচিত দেশের জনগণের প্রাণ রক্ষা করা।’
স্পেনের অঙ্গরাজ্য কাতালোনিয়ায় প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১৮ হাজার ৭৭৩ জন। মারা গেছেন মোট ১ হাজার ৬৭২ জন। নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে রয়েছেন ১ হাজার ৬৫২ জন। সেখানে বিপর্যস্ত অবস্থায় বসবাস করছেন লোকজন।
কাতালোনিয়াদের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, আক্রান্তদের মধ্যে ৩ হাজার ৭ জন পেশাদার চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী। মোট ৪ হাজার ৯৯৬ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন সেখানে।
গতকাল সোমবার কাতালোনিয়া রেডিওতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডাক্তার ও গবেষক ওরিয়ল মেডিও বলেছেন, ‘স্পেন ও কাতালোনিয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা হবে ৩ লাখ ৫০ হাজার। কারণ আক্রান্তরা জেনেও বিষয়টি সম্পর্কে অজ্ঞাত থেকেছে। মোট আক্রান্তের মাত্র ৪ শতাংশের ক্ষেত্রে ভাইরাস নির্ণয় করা সম্ভব হয়েছে।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, করোনা রোগীদের জন্য এরই মধ্যে মাদ্রিদের বার্সেলোনায় সেনাবাহিনীর জরুরি উদ্যোগে একটি হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে। যদিও মাদ্রিদ ও কাতালোনিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা হাসপাতালে চিকিৎসা দানের স্বামর্থ্যের চরম সীমায় আছে। এই পরিস্থিতিতে দুটি অঞ্চলেই যেন চিকিৎসার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের বিপর্যয় না ঘটে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।