সকালে ঘুম থেকে উঠে ফোন হাতে নেওয়ার মুহূর্ত থেকে শুরু করে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত স্মার্টফোন আমাদের জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ। কিন্তু স্মার্টফোনের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান – ব্যাটারি – যখন হঠাৎ করে শেষ হয়ে যায়, তখন ভোগান্তির যেন শেষ থাকে না। স্মার্টফোনের ব্যাটারি দীর্ঘস্থায়ী রাখার জন্য প্রতিদিনের কিছু সাধারণ অভ্যাস বদলে ফেলা জরুরি। আপনি যদি ব্যাটারির আয়ু বাড়াতে চান, তাহলে এই অভ্যাসগুলো বজায় রাখা উচিত।
স্মার্টফোনের ব্যাটারি দীর্ঘস্থায়ী রাখতে দৈনিক যে অভ্যাসগুলো জরুরি
স্মার্টফোনের ব্যাটারি দীর্ঘস্থায়ী করতে হলে প্রথমেই জানতে হবে কোন কাজগুলো ব্যাটারির উপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। অনেকে মনে করেন শুধুমাত্র চার্জ দেওয়ার পদ্ধতিতেই পার্থক্য হয়, কিন্তু বাস্তবে দৈনন্দিন নানা অভ্যাসই ব্যাটারির আয়ু কমাতে পারে। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস দেওয়া হলো:
Table of Contents
- অতিরিক্ত চার্জ দেওয়া বন্ধ করুন: অনেকেই ফোন ১০০% চার্জে পৌঁছানোর পরও চার্জারে রেখে দেন, যা দীর্ঘমেয়াদে ব্যাটারির স্বাস্থ্য খারাপ করে।
- অফিশিয়াল চার্জার ব্যবহার করুন: অরিজিনাল বা অফিশিয়াল চার্জার ছাড়া অন্য চার্জার ব্যবহার করলে ব্যাটারির ক্ষতি হতে পারে।
- ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপস বন্ধ রাখুন: অনেক অ্যাপস ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে থাকলে ব্যাটারি দ্রুত শেষ হয়।
- ডার্ক মোড ব্যবহার করুন: AMOLED ডিসপ্লে যুক্ত ফোনগুলোতে ডার্ক মোড ব্যাটারি সাশ্রয় করতে সাহায্য করে।
- লোকেশন ও ব্লুটুথ সবসময় অন রাখবেন না: প্রয়োজনে বন্ধ রাখলে ব্যাটারির আয়ু বাড়বে।
চার্জিং এর সময় স্মার্টফোনের যত্ন নিন
চার্জ দেওয়ার সময় সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে কিছু কার্যকর অভ্যাস তুলে ধরা হলো:
- ফোন চার্জ দেওয়ার সময় অতিরিক্ত গরম হওয়া এড়িয়ে চলুন: অতিরিক্ত গরম হওয়া ব্যাটারির আয়ুকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
- সরাসরি সূর্যের আলো থেকে দূরে রাখুন: তাপমাত্রা ব্যাটারির স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে।
- ফোন চার্জের সময় বেশি ব্যবহার করবেন না: এতে ব্যাটারি দ্রুত গরম হয়ে যেতে পারে।
- কমপক্ষে ২০% চার্জ থাকা অবস্থায় ফোন চার্জে দিন: সম্পূর্ণ ডিসচার্জ করে তারপর চার্জ দিলে ব্যাটারির উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে।
ব্যাটারির স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে প্রযুক্তিগত কৌশল
অটো-সিঙ্ক ও ব্যাকআপ নিয়ন্ত্রণ করুন
গুগল ফটোস, ড্রাইভ ইত্যাদির অটো-ব্যাকআপ ব্যাটারির অনেকখানি খরচ করে। অপ্রয়োজনীয় অটো-সিঙ্ক বন্ধ রাখুন।
অ্যাপস আপডেট রাখা
পুরনো ভার্সনের অ্যাপস ব্যাটারি বেশি খরচ করে। তাই নিয়মিত অ্যাপস আপডেট করে রাখুন।
স্ক্রিন টাইম নিয়ন্ত্রণ করুন
দিনে কতক্ষণ স্ক্রিন অন থাকে সেটাও ব্যাটারির উপর প্রভাব ফেলে। অপ্রয়োজনীয় স্ক্রিন ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।
ব্যাটারি অপটিমাইজেশন অ্যাপস ব্যবহার
বিশ্বস্ত ব্যাটারি অপটিমাইজেশন অ্যাপস ব্যবহার করলে অনেকাংশে ব্যাটারির স্বাস্থ্য রক্ষা করা যায়। যেমন: AccuBattery, Greenify ইত্যাদি।
জেনে রাখুন-
স্মার্টফোনের ব্যাটারি দীর্ঘস্থায়ী করতে দিনে কয়বার চার্জ দেওয়া উচিত?
ব্যাটারির অবস্থা ও ব্যবহারের উপর নির্ভর করে দিনে একবার চার্জই যথেষ্ট, তবে অতিরিক্ত ব্যবহারে দু’বার চার্জও প্রয়োজন হতে পারে।
ফোন চার্জ দেওয়ার সময় কি ওয়াই-ফাই বন্ধ রাখা উচিত?
হ্যাঁ, ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ বা লোকেশন বন্ধ রাখলে চার্জ দ্রুত হয় এবং গরম কম হয়।
রাতভর ফোন চার্জে রাখা কি ক্ষতিকর?
হ্যাঁ, এতে ব্যাটারির অতিরিক্ত চার্জিং হয়, যা দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতি করতে পারে।
কোন মোড ব্যাটারি সাশ্রয় করে?
ডার্ক মোড এবং ব্যাটারি সেভার মোড কার্যকরভাবে ব্যাটারি সাশ্রয় করতে সাহায্য করে।
ব্যাটারি ব্যাকআপ হঠাৎ কমে গেলে কী করবেন?
ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপস বন্ধ করুন, ফোন রিস্টার্ট করুন এবং যদি সমস্যা বজায় থাকে তাহলে সার্ভিস সেন্টারে দেখান।
স্মার্টফোনের ব্যাটারি দীর্ঘস্থায়ী করতে প্রতিদিনের এই সহজ অভ্যাসগুলো বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। সঠিক ব্যবহার এবং চার্জিংয়ের নিয়ম মেনে চললে আপনার ব্যাটারি যেমন দীর্ঘস্থায়ী হবে, তেমনি স্মার্টফোন ব্যবহারের অভিজ্ঞতাও হবে অনেক উন্নত। এখনই আপনার ব্যবহার প্যাটার্নে কিছু ছোট পরিবর্তন আনুন, আর উপভোগ করুন দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারির সুবিধা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।