জুমবাংলা ডেস্ক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলমের আসার খবরে রংপুরে লাঠি মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে জাতীয় পার্টি (জাপা)।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে রংপুর মহানগরীর সেন্ট্রাল রোডস্থ দলীয় কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের করা হয়। এ সময় মিছিলে বাঁশের লাঠি হাতে নিয়ে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পায়রা চত্বরে গিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হন পার্টির নেতাকর্মীরা।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন জাতীয় পার্টিকে নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে দাবি করে পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, বঙ্গভবনে উপদেষ্টাদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টি ছিল। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রথম ধাপের সংলাপে জাতীয় পার্টি আমন্ত্রণ পেয়ে অংশ নিয়ে সংস্কার কার্যক্রমে মতামত দিয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমের কথায় পরবর্তী সংলাপে জাতীয় পার্টিকে ডাকা হয়নি, এটা হতাশাজনক। দুই একজন ছাত্রের কথায় সরকার কেন এমন সিদ্ধান্ত নেবে এটা আমাদের প্রশ্ন।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় পার্টিকে সংলাপে প্রধান উপদেষ্টা ডাকবে কি ডাকবে না সেটা তার ব্যাপার। এটা সরকারের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত হয়ে আসবে। কিন্তু আমরা কি দেখলাম? হাসনাত- সারজিসের মতো কুলাঙ্গারের কথায় সরকার যদি জাতীয় পার্টির সঙ্গে এধরনের আচরণ করে সেটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। কারণ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদেরও অনেক অবদান রয়েছে।
মোস্তাফিজার রহমান বলেন, দেশের সংবিধান অনুযায়ী পুলিশ প্রটোকল পাবেন কারা, সেটা সবাই জানে। কিন্তু এখন আমরা কী দেখছি? হাসনাত-সারজিসের মতো কুলাঙ্গারকে কেন প্রটোকল দিতে হবে। যেখানে ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশি সেবা যাচ্ছে না সেখানে তাদেরকে প্রটোকল দেওয়ার কারণ কী? আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি।
রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জাতীয় পার্টির ভূমিকা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে সর্বপ্রথম ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়েছিল জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা। যখন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আওয়ামী লীগের হামলার ভয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে বের হতে পারেননি তখন জাতীয় পার্টিই মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিল। রাজপথে থেকে আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। আমাদের পার্টির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা রক্ত দিয়েছে, জীবন দিয়েছে। আন্দোলনে সহযোগিতা এবং পাশে থাকার কারণে আমাকে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে আমাকে হেনস্থা করা হয়েছে। তারপরও কেন জাতীয় পার্টিকে নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা দেখেছি জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা মাঠে নেমেছিল। ছাত্র-জনতার সম্মিলিত আন্দোলনের সফল কারো একার নয়। ১৮ কোটি মানুষের এই দেশ। কারো একার নয়, কারো বাবারও নয়।
এ সময় সমাবেশ থেকে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমের বিপক্ষে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন।
শনিবার বেলা ১১টার দিকে রংপুর সফরে এসেছেন বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম। তার সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলমকে সফরসঙ্গী হিসেবে থাকতে দেখা যায়।
এ বিসয়ে মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘সমন্বয়ক সারজিসের একা রংপুরে আসার সক্ষমতা নাই। এ কারণে পুলিশের আইজিপির সঙ্গে এসেছেন। এটা কাপুরুষের পরিচয়। আমরা যেখানেই সারজিস ও হাসনাতকে পাব সেখানেই প্রতিহত করব।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।