জুমবাংলা ডেস্ক : রমজান শুরুর এক মাস পূর্বেই সয়াবিন তেলের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। ‘সরবরাহ নেই’ অজুহাতে বাজার থেকে সয়াবিন তেলের পাঁচ ও তিন লিটারের বোতল উধাও হয়ে গেছে। আজ শনিবার (৫ মার্চ) বরগুনার আমতলী পৌর শহরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে। ক্রেতাদের অভিযোগ, বাজারে হঠাৎ করে পাঁচ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতলের সংকট দেখা দিয়েছে।
দুই-চারটি দোকানে একটি কিংবা দুটি বোতল পাওয়া গেলেও বিক্রেতারা নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বোতলপ্রতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা বেশি দাবি করছেন। আবার কিছু বিক্রেতা দুটি দুই লিটার এবং একটি এক লিটার বোতল ক্রেতাদের ধরিয়ে দিচ্ছেন। এতে তাদের বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে। রোজার আগেই তেলের বাজার অস্থির হয়ে ওঠায় সাধারণ মানুষের সক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে সরকারকে সার্বিক বাজার পরিস্থিতি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়ার দাবি তুলছেন ক্রেতারা।
পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত তিন থেকে চার দিন পর্যন্ত প্রতিটি দোকানে পাঁচ ও তিন লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল না থাকলেও এক ও দুই লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল রয়েছে।
পুরান বাজারের মুদি দোকনি শ্যামল দাস বলেন, ‘সরবরাহ না থাকায় বেশি দামে সয়াবিন তেল কিনে ক্রেতাদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এখানে আমার কিছুই করার নেই। মহাজন (ডিলার) বেশি দাম নিলে আমার কী করার আছে। ‘
ক্রেতা গৃহিণী নাজমুন নাহার ও শিক্ষক শহিদুল ইসলাম জানান, তারা প্রতি মাসে পাঁচ লিটার বোতলের সয়াবিন তেল কেনেন। কিন্তু আজ বাজার ঘুরে কোনো দোকানে পাঁচ ও তিন লিটারের বোতল পাচ্ছেন না। একাধিক বোতল নেবেন, তার দামও বিক্রেতারা বেশি চাচ্ছেন। হঠাৎ তেল নিয়ে বাজারজুড়ে নৈরাজ্য চললেও মনে হয় দেখার কেউ নেই।
তেলের মহাজন (ডিলার) জানান, তারা কম্পানির অনুকূলে চাহিদা অনুযায়ী পাঁচ ও তিন লিটারের সয়াবিন তেলের বোতলের জন্য টাকা পাঠিয়েছেন। তার পরও তারা বোতল পাচ্ছেন না। দুই-তিন দিন ধরে খুচরা বাজারের চাহিদা অনুযায়ী পাঁচ ও তিন লিটারের বোতল সরবরাহ করতে পারছেন না। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করতে না পারায় বাজারে তেলের কিছুটা কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি তেল কম্পানির মহাজন (ডিলার) বলেন, ‘কম্পানি কেন তাদের চাহিদার বিপরীতে তেল দিচ্ছে না তা আমরা জানি না। তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার খবরে ক্রেতারাও বেশি করে বোতলজাত তেল কিনে মজুদ করার কারণেও বাজারে বিভিন্ন কম্পানির সয়াবিন তেলের সরবরাহ কমে যাওয়ায় হঠাৎ করে বাজারে আরো বেশি সংকট দেখা দিয়েছে। ‘
একাধিক সচেতন নাগরিক অভিযোগ করেন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বরগুনা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাঝেমধ্যে বাজার তদারকির নামে দু-চারটি জরিমানা করে তাদের দায়িত্ব শেষ করেন। কিন্তু রমজান মাসকে সামনে রেখে বাজারে সয়াবিন তেলের বোতলের যে কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়েছে, এ সংকটের সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সাধারণ মানুষের পকেট কেটে নিচ্ছে তার জন্য কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে তাদের দেখা যায় না। তারা আসন্ন রমজানে বাজার তদারকি বাড়িয়ে অসাধু ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানান।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বরগুনা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রিপন বিশ্বাস মুঠোফোনে বলেন, ‘রমজানকে সামনে রেখে ইতিমধ্যে বাজার তদারকি বাড়িয়েছি। যারা বাজারে সয়াবিন তেলের বোতলের কৃত্রিম সংকট তৈরির চেষ্টা করবেন এবং নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করবেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ‘
আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম আবদুল্লা বিন রশিদ মুঠোফোনে বলেন, ‘সরবরাহ নেই’ অজুহাতে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে যে সকল ব্যবসায়ী পাঁচ ও তিন লিটার সয়াবিন তেলের বোতলের দাম বেশি রাখছেন মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।