জুমবাংলা ডেস্ক: একটি মাত্র পা নিয়ে জন্ম নেওয়া তামান্না আকতার নোরা এবছরের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছে। এমন ফলাফলে পরিবার যতটা খুশি হয়েছে, ভবিষ্যতে পড়াশোনা নিয়ে ঠিক ততটাই সংশয়ে পড়েছে তার পরিবার।
তামান্নার পড়াশোনার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এখন বেশি দুশ্চিন্তা হচ্ছেন বলে বিবিসি বাংলাকে জানান তামান্নার বাবা রওশন আলী।
মি. আলী বলেন, “তামান্নার এসএসসি’র ফল প্রকাশিত হওয়ার পর আনন্দিত হওয়ার পাশাপাশি দুশ্চিন্তার মধ্যেও পড়েছি।”
যশোরের ঝিকরগাছায় নন এমপিওভুক্ত একটি মাদ্রাসার শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বরত রওশন আলীর দুশ্চিন্তার কারণ – শারীরিক বিকলাঙ্গতা নিয়ে জন্ম নেওয়া কন্যার পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার স্বপ্নকে সমর্থন দিতে পারবেন কিনা তা নিয়ে তৈরি হওয়া সংশয়।
“তামান্না বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পেয়েছে এবং সে কলেজেও বিজ্ঞানেই পড়তে চায়। বিজ্ঞান বিভাগে কলেজে পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার জন্য সমর্থন দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছি,” বলেন তামান্নার বাবা রওশন আলী।
মি. আলীর মতে, তামান্নার পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কলেজের খরচের চেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হলো তাকে সার্বক্ষণিক সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি।
তিনি বলেন, “আর দশটা সুস্থ স্বাভাবিক বাচ্চার মত হলে হয়তো একা একা কলেজে যাওয়া আসা করতে পারতো, নিজেই অনেক কিছু করতে পারতো।”
“কিন্তু তামান্নার ক্ষেত্রে তাকে শুধু কলেজে দিয়ে আসলেই হবে না, তার দিকে নজরদারির জন্যও তার মা’কে সার্বক্ষণিক থাকতে হবে সেখানে।”
বিবিসি বাংলাকে তিনি আরো বলেন, “মেয়ের পড়ালেখার ইচ্ছা এবং আত্মপ্রত্যয় দেখেই তাকে সবসময় সমর্থন করে এসেছি।”
“একসময় আমার অসুস্থ বাচ্চাটাকে নিয়ে মানুষজন কটূক্তি করতো, হেয় করতো, অবজ্ঞার কথা বলতো। তার পরীক্ষার রেজাল্ট ভাল হওয়া তাই আরো বেশি খুশি হয়েছি।”
কিন্তু এখন তার ভবিষ্যতের স্বপ্নকে সমর্থন করতে পারবেন কিনা সেটি নিয়ে দুশ্চিন্তায় তামান্নার বাবা।
কেন হাল ছাড়বো?: তামান্না
তবে বাবা দুশ্চিন্তায় থাকলেও তামান্নার নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের একটুও কমতি নেই।
মানুষের সেবা করা এবং তার মত শারীরিক বিকলাঙ্গতা নিয়ে কষ্ট পাওয়া মানুষের পাশে দাঁড়াতে চায় তামান্না; তাই তার স্বপ্ন বড় হয়ে ডাক্তার হওয়া।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময়েই পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায় না। আর এই বাস্তবতা জানে বলেই তামান্না নিজেও শতভাগ প্রস্তুত বাধা-বিপত্তির মুখোমুখি হতে।
“বাধা তো অবশ্যই আসবে। কিন্তু সবাই যদি সহযোগিতা করে আর আমি নিজে যদি আপ্রাণ চেষ্টা করে যাই ,তাহলে ইনশাআল্লাহ সাফল্য পাবো,” বলেন তামান্না।
“কেন হাল ছাড়বো? চেষ্টা না করে তো থাকবো না কিছুতেই।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।