কুনওয়ার খুলদানি শহীদ : মহানবী (সা.)-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশের পর ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে মুসলিম বিশ্বের নেতারা। দেশটির পণ্য সবাইকে বয়কট করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। অথচ চীনে নির্যাতিত উইঘুর মুসলিমদের নিয়ে মুসলিম নেতাদের কোনো মাথা ব্যথা নেই। সম্প্রতি ব্রিটিশ ম্যাগাজিন ‘দ্য স্পেক্টেটর’-এ প্রকাশিত এক সম্পাদকীয়তে এসব কথা বলেন সাংবাদিক কুনওয়ার খুলদানি শহীদ।
এতে বলা হয়, ফ্রান্সের পণ্য বয়কট ঘোষণা করার পরপরই কুয়েত, কাতার ও জর্ডানের বিভিন্ন দোকান থেকে ফ্রান্সের সব পণ্য ফেলে দেয়া হয়। এরপর তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানও পণ্য বয়কটের ঘোষণা দেন। বাদ যাননি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তিনি ফ্রান্স প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, মাক্রোঁ ইচ্ছাকৃতভাবে মুসলিমদের উস্কানি দিচ্ছেন। এরপর পাকিস্তানে নিযুক্ত ফ্রান্স রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হয়।
এরপর মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর নেতাদের কাছে ‘ইসলাম বিদ্বেষীদের বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা করে মুসলমানদেরকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান’ জানিয়ে চিঠি দেন পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী। চিঠিতে তিনি ফরাসি রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে তিরস্কার করে ‘ইসলাম বিদ্বেষী’বলে অভিহিত করেন।
তিনি চিঠিতে বলেন, ‘সম্প্রতি নেতৃত্ব পর্যায় থেকে যেসব হিংসাত্মক বক্তব্য দেওয়া হয়েছে এবং পবিত্র কুরআন ও মহানবীকে (সা.) অবমাননা করার যে ঘটনা ঘটেছে তা মূলত ফ্রান্সসহ ইউরোপীয় দেশগুলোতে ইসলাম-বিদ্বেষী বেড়ে চলারই প্রতিফলন।’
এরপর এক টুইটে ইমরান বলেন, মহানবী মানবজাতিকে একত্র করেছেন। ম্যান্ডেলাও তাই করেছেন। অথচ মাক্রোঁ ইসলাম বিদ্বেষের নামে মানুষকে বিভক্ত করছে। তিনি মুসলিমদের উস্কে দেয়ার কাজ হাতে নিয়েছেন। এতে তার স্বজাতিই বিভক্ত হয়ে যাবে।
ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট ও দেশটির পণ্যের বিরুদ্ধে মুসলিম নেতাদের অবস্থান প্রসঙ্গে কুনওয়ার খুলদানি শহীদ বলেন, ইসলাম বিদ্বেষের বিরুদ্ধে তারা যে পথ অবলম্বন করছেন তা সবাই দেখতে পারছে। একজন শিক্ষককে হত্যা করার পর মাক্রোঁ বাক স্বাধীনতা নিয়ে তার মন্তব্যটি করেছিলেন। তার সেই মন্তব্য কি চীনে উইঘুর মুসলিমদের ওপর হওয়া নির্যাতন থেকে বেশি মর্মান্তিক?
চীনের জিং-জ্যাং প্রদেশে উইঘুর মুসলিমদের বিভিন্ন ক্যাম্পে জোরপুর্বক করে শূকর খাওয়ানো, মদ পান করানো ও ইসলাম অবমাননা করতে বাধ্য করা হচ্ছে। চীনা প্রশাসন তাদের মুসলিম পরিচয় পর্যন্ত কেড়ে নেয়ার প্রচেষ্টা করছে। উগ্রবাদী সন্ত্রাসী দমনের নামে চীন এসব কর্মকাণ্ড পরচালনা করে আসছে দীর্ঘদিন।
উইঘুরদের জন্য মুসলিম নেতারা তীব্র নিন্দা ছাড়া আর কোন পদক্ষেপ নিয়েছেন কি? চীনে নির্যাতিত এই জনগোষ্ঠীর এখন প্রয়োজন শক্তিশালী কোনো মুসলিম নেতার। কিন্তু অন্যতম প্রধান মুসলিম রাষ্ট্র সৌদি আরব উল্টো চীনকে বাঁচিয়ে দিচ্ছে। সৌদি আরবের মতে, চীনারা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে উগ্রবাদী সন্ত্রাসীদের দমন করছে।
সৌদি আরবের মতোই মুসলিম বিশ্বে নতুন নেতা হিসেবে সমাদৃত তুরস্ক একই পন্থা হাতে নিয়েছে। পাকিস্তানের খুব কাছে উইঘুর ক্যাম্পগুলো থাকলেও চোখে পড়ার মতো কোনো উদ্যোগ নেননি ইমরান খান। সবাই ফ্রান্সকে বয়কটে মনোযোগী। কুনওয়ার খুলদানি শহীদ , পাকিস্তানি সাংবাদিক
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।