জুমবাংলা ডেস্ক : এবারের একুশে পদক পাচ্ছেন ‘সায়েবাস মেথড’ -এর স্রষ্টা দেশের কিংবদন্তি চিকিৎসক ডা. সায়েবা আক্তার। এবার একুশে পদকের জন্য ২০ জনকে মনোনীত করা হয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিসরূপ তাদের এ পদকে ভূষিত করা হচ্ছে।
বুধবার সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। এ ছাড়া এবার প্রতিষ্ঠান হিসেবে মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটও পাচ্ছে একুশে পদক।
পুরস্কারে মনোনীতদের প্রত্যেককে ৩৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক, এককালীন ২ লাখ টাকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেয়া হবে।
সারা বিশ্বে প্রতি দুই মিনিটে একজন করে প্রসূতি মায়ের মৃত্যু ঘটছে সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে। এর ৩০ শতাংশের জন্য দায়ী প্রসবকালীন রক্তক্ষরণ। এই চিরাচরিত ভয়ঙ্কর চিত্রটি বদলে দিতে বিস্ময়কর অবদান রাখেন বাংলাদেশের চিকিৎসক ডা. সায়েবা আক্তার।
‘সায়েবাস মেথড’ নামের এই পদ্ধতি আজ অজস্র নারীর জীবন বাঁচানোর এক মোক্ষম উপায় হিসেবে স্বীকৃত হচ্ছে বিশ্বজুড়ে।
বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও আফ্রিকা মহাদেশ ও দক্ষিণ আমেরিকার এক ডজন দেশে সরকারি কর্মসূচির অংশ হয়ে উঠেছে এই পদ্ধতি। নেপাল ও পূর্ব তিমুরেও এটা ব্যবহৃত হচ্ছে।
ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে ১৯৭৬ সাল থেকে প্রতিবছর বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এ পুরস্কার দিয়ে আসছে সরকার।
আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২০ সালের একুশে পদকে মনোনীতদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ বছর যারা একুশে পদক পাচ্ছেন-
১. ভাষা আন্দোলনে আমিনুল ইসলাম বাদশা (মরণোত্তর)
২. শিল্পকলায় (সংগীত) বেগম ডালিয়া নওশিন
৩. শিল্পকলায় (সংগীত) শঙ্কর রায়
৪. শিল্পকলায় (সংগীত) বেগম মিতা হক
৫. শিল্পকলায় (নৃত্য) মো. গোলাম মোস্তফা খান
৬. শিল্পকলায় (অভিনয়) এস এম মহসীন
৭. শিল্পকলায় (চারুকলা) অধ্যাপক শিল্পী ড. ফরিদা জামান
৮. মুক্তিযুদ্ধ হাজী আক্তার সরদার (মরণোত্তর)
৯. মুক্তিযুদ্ধ আবদুল জব্বার (মরণোত্তর)
১০. মুক্তিযুদ্ধ ডা. আ আ ম মেসবাহুল হক (বাচ্চু ডাক্তার) (মরণোত্তর)
১১. সাংবাদিকতায় জাফর ওয়াজেদ আলী (ওয়াজেদ জাফর)
১২. গবেষণায় ড. জাহাঙ্গীর আলম
১৩. গবেষণায় হাফেজ ক্বারী আল্লামা সৈয়দ মোহাম্মদ ছাইফুর রহমান নিজামী শাহ
১৪. শিক্ষায় অধ্যাপক ড. বিকিরণ প্রসাদ বড়ুয়া
১৫. অর্থনীতিতে অধ্যাপক ড. শামসুল আলম
১৬. সমাজসেবায় সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান
১৭. ভাষা ও সাহিত্যে ড. নুরুন নবী
১৮. ভাষা ও সাহিত্যে সিকদার আমিনুল হক (মরণোত্তর)
১৯. ভাষা ও সাহিত্যে বেগম নাজমুন নেসা পিয়ারি
২০. চিকিৎসায় অধ্যাপক ডা. সায়েবা আখতার
এছাড়া গবেষণায় পাচ্ছে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউট।
একনজরে ডা. সায়েবা
২০০৯ সালে যুক্তরাজ্য থেকে প্রকাশিত ব্রিটিশ জার্নাল অব অবসটেট্রিকস অ্যান্ড গাইনোকোলজিতে সায়েবাস মেথডের ওপর পর্যালোচনা ছাপা হয়। ২০১১ সালে যুক্তরাজ্যের রয়েল কলেজ অব অবসটেট্রিশিয়ানস অ্যান্ড গাইনোকোলজিস্টসের পক্ষ থেকে তাকে তার উদ্ভাবনের জন্য সম্মানসূচক ডিগ্রি দেওয়া হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের প্রধান ছিলেন অধ্যাপক ডা. সায়েবা আক্তার। চাকরি থেকে অবসরের পর রাজধানীর মগবাজারে ‘মামস ইন্সটিটিউট অব ফিস্টুলা অ্যান্ড ওমেনস হেলথ’ নামের একটি চিকিৎসালয় প্রতিষ্ঠা করেন। গরিব দুস্থ ফিস্টুলা রোগীদের এখানে তিনি পরম মমতায় চিকিৎসা করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।