নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে স্বতন্ত্রপ্রার্থীদের পক্ষে আটঘাট বেঁধে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা মো. জাহাঙ্গীর আলম। তিনি গাজীপুর মহানগরীর সাথে যুক্ত তিনটি সংসদীয় আসনে স্বতন্ত্রপ্রার্থীদের পক্ষে সর্বশক্তি নিয়ে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন। গাজীপুর রাজধানীর অতি সন্নিকটে হওয়ায় দেশী-বিদেশী পর্যবেক্ষকদের আকৃষ্ট করতে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচনী মাঠ চাঙ্গা করতে কেন্দ্র থেকে ইতোমধ্যেই ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।
এদিকে দলের সবুজসঙ্কেত পেয়ে বর্তমান সংসদ সদস্যদের বিদ্রোহী গ্রুপগুলো নির্বাচনী মাঠে তৎপর হয়ে উঠছে। এতে পরাজয়ের আশঙ্কায় নগরীর তিনটি আসনের সংসদ সদস্য ও তাদের সমর্থকদের মধ্যে একধরনের হতাশা ও বিজয়ের ব্যাপারে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বিগত দিনে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ-পদবিতে থেকেও সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত নেতারা এখন ঐক্যবদ্ধ হয়ে বর্তমান সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে একাট্টা হয়ে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন। দিন দিন তাদের পাল্লা আরো ভারী হচ্ছে। নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী আনুষ্ঠানিক প্রচারণার বাকি আরো একদিন। কিন্তু এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী বা স্বতন্ত্রপ্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনী মাঠ জমে উঠেছে। কাঙ্খিত স্বতন্ত্র প্রার্থী পেয়ে আওয়ামী লীগের বঞ্চিত-অবহেলিত নেতাকর্মীরা যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছেন। এসব বঞ্চিত নেতাকর্মীদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়রের উপদেষ্টা সাবেক মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম। স্বতন্ত্রপ্রার্থীদের পক্ষে জাহাঙ্গীর আলম যেখানেই যাচ্ছেন সেখানেই দলবেঁধে ছুটে যাচ্ছেন তারা। আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হলে জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে বাঁধভাঙা স্রোতের মতো মানুষের ঢল নামবে বলে জেলার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। গত গাজীপুর সিটি নির্বাচনে জাহাঙ্গীর আলম ও তার মা বর্তমান মেয়র জায়েদা খাতুনের প্রতি নির্মম আচরণের প্রতিশোধ এবার ব্যালটের মাধ্যমে নেয়া হবে বলেও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে বিভিন্ন উঠান বৈঠকে জাহাঙ্গীর সমর্থকদের ক্ষোভ ঝাড়তে শোনা গেছে।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়রের পদ থেকে ‘ষড়যন্ত্র’ করে জাহাঙ্গীর আলমকে বহিষ্কার এবং গত সিটি নির্বাচনে জাহাঙ্গীর আলম ও তার মা গাসিক মেয়র জায়েদা খাতুনের ওপর হামলা, কর্মী-সমর্থকদের গ্রেফতার ও হয়রানির পেছনে নগরীর আলোচিত তিন সংসদ সদস্যের ইঙ্গিত ছিল বলে জাহাঙ্গীর সমর্থকরা মনে করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও জাহাঙ্গীর সমর্থকরা ক্ষোভের সাথে বিষয়টি তুলে ধরছেন। এমনকি আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছেন। স্থানীয় নির্বাচনী বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচনী মাঠের বর্তমান চিত্র আগামী ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত বহাল থাকলে গাজীপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য মুক্তিযুক্তবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ভরাডুবির সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও গাজীপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকির ভরাডুবির কথা বলাবলি করলেও বাস্তবে ঠিক তা না। এখানে সতন্ত্র প্রার্থী আখতারউজ্জামাননের সাথে হাড্ডি লড়ায় হবে চুমকির। অপরদিকে গাজীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের সাথে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলিম উদ্দিন বুদ্দিনের এখন পর্যন্ত হাড্ডা হাড্ডি লড়ায়ের কথা শোনা গেলেও জাহাঙ্গীর আলমের ব্যাপক তৎপরতায় বুদ্দিনের ভোটের মাঠ ক্রমেই চাঙ্গা হচ্ছে।
গাজীপুর-১ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মুক্তিযুক্তবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের কালিয়াকৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাসেল, গাজীপুর-২ আসনে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের সাথে লড়ছেন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলিম উদ্দিন বুদ্দিন এবং গাজীপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির সাথে লড়ছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, ঢাকসুর সাবেক ভিপি ও জিএস, সাবেক সংসদ সদস্য, গাজীপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আখতারউজ্জামান।
গাজীপুরে ৭ প্রর্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার, ৫টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বি ৩৭ জন
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।