জুমবাংলা ডেস্ক: চাঁদপুর জেলা পুলিশে কর্মরত কনস্টেবল আবুল হোসেন মানিকের সার্বিক সহযোগিতায় ছয় বছর পর মো. টিপু (২৮) নামে ভারসাম্যহীন এক যুবক ফিরে পেল তার পরিবারের সদস্যদেরকে। কনস্টবল মানিকের এই ধরণের কাজ এটিই প্রথম নয়, পুলিশের চাকরিতে যোগদানের পর এই পর্যন্ত তিনি ২২ জন অজ্ঞাতনামা মানসিক ভারসাম্যহীন পুরুষ ও মহিলা উদ্ধার করে চিকিৎসা দিয়ে তাদের অভিভাবকদের নিকট হস্থান্তর করে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) রাতে চাঁদপুর জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা (স্পেশাল ব্রাঞ্চ-ডিএসবি-১) কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
জেলা পুলিশ জানায়, কনস্টেবল মানিক গত ৩০ জুলাই অজ্ঞাতনামা ভবঘুরে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক টিপুকে দেখাশোনা করে আসছিল। অবশেষে গত ৩ আগস্ট তাকে চাঁদপুর আদালত চত্বর হতে উদ্ধার করে নিজ হাতে দাঁড়ি, চুল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে নতুন জামা-কাপড় পরিয়ে চিকিৎসার জন্য চাঁদপুরের অর্পণ নামে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করে তার চিকিৎসা ব্যয় বহন করে।
এরপর মানিকের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম (ফেসবুক) ও বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে অজ্ঞাতনামা ভবঘুরে ব্যক্তির পরিবারের সন্ধানে প্রচার চালায়। সর্বশেষ ৭ আগস্ট অজ্ঞাতনামা যুবকের পরিচয় মিলে। ওই যুবক কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী থানার পুরাতন চৌধুরী পাড়ার মো. ছবির মিয়ার ছেলে। পরিচয় পাওয়ার পর টিপুর পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের চাঁদপুর আসার জন্য যোগাযোগ করা হয়।
তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) দুপুরে টিপুকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন পুলিশ সুপার কার্যালয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বিপিএম পিপিএম (সেবা)। এ ছাড়াও টিপুর পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন এসপি। এ সময় চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায় ও রাশেদ উপস্থিত ছিলেন।
কনস্টেবল আবুল হোসেন মানিকের মানবিক কাজের বিবরণ হিসেবে জেলা পুলিশ জানায়, মানিক ইতিপূর্বেও কক্সবাজার জেলা পুলিশে কর্মরত থাকাকালীন ৯ জন, চট্টগ্রাম শহর হতে ৩ জন, নোয়াখালী সদর হতে ১ জন, লক্ষ্মীপুর সদর হতে ৪ জন এবং চাঁদপুর জেলা সদর হতে টিপুসহ ৫ জনসহ ২২ জন অজ্ঞাতনামা মানসিক ভারসাম্যহীন পুরুষ ও মহিলা উদ্ধার করে চিকিৎসা দিয়ে তাদের অভিবাকদের নিকট হস্থান্তর করে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন।
এ ছাড়াও তিনি এ পর্যন্ত ২৯ বার স্বেচ্ছায় রক্তদান করেছেন। সে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। মানিক লক্ষীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানার রোকনপুর গ্রামের রুহুল আমিন ও নুরজাহান দম্পত্তির ছেলে। তিনি ২০১৬ সালে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে কনস্টেবল পদে যোগদান করেন।
মানিক জানান, ভবিষ্যতে তার সামর্থ্য অনুযায়ী বেতনের টাকার কিছু অংশ দিয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন, দুস্থ, এতিম, গরীব ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে চান।
চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, এ মহৎ কাজটি পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। এ ধরণের মানবিক কাজ জেলা পুলিশ প্রতিনিয়ত করবে।
জেলের দুই কেজি ২২৫ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হলো ৯ হাজার টাকা!
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।