আচারের কথা শোনামাত্র জিবে জল আসবে না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দায়। এই বর্ষায় খিচুড়ি হোক কিংবা গরম গরম ভাত—প্রতিদিনের খাবারের সঙ্গে একটুখানি টক, ঝাল–মিষ্টি আচার বা চাটনি যেন খাদ্যের স্বাদ বাড়িয়ে দেয় বহুগুণে। তবে আচার যে শুধু মুখরোচক, তা নয়; এতে রয়েছে নানা খাদ্যগুণ, যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী।
মন ভালো রাখতে
শুধু শরীর নয়, মন ভালো রাখতেও দারুণভাবে কাজ করে আচার। আপনার যদি মাঝেমধ্যেই মন খারাপ হয়, তাহলে একটুখানি টক, ঝাল, মিষ্টি আচার নিয়ে খেতে পারেন। কারণ, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত আচার খেলে মন ভালো থাকে। সেই সঙ্গে কমে উদ্বেগ। তাই দুশ্চিন্তামুক্ত থাকার জন্য নিয়মিত আচার খেতে পারেন।
তবে সব সময় বাড়িতে বানানো আচার খাওয়া উচিত এবং পরিমাণমতো খেতে হবে। লোভে পড়ে অতিরিক্ত আচার খেলে অনেক সময় আবার হিতে বিপরীত হতে পারে।
ওজন কমাতে
আচারে ক্যালরি ও কার্বোহাইড্রেট কম থাকে, তাই রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে। অন্যদিকে এতে সহজপাচ্য ফাইবারের পরিমাণ বেশি। তাই আচার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
বাতের ব্যথায় কার্যকর
আচার বাতের ব্যথা-বেদনা কমাতেও উপকারী। বাতের ব্যথা থাকলে রোজকার খাদ্যতালিকায় রসুনের আচার রাখতে পারেন। দেশি এক কোয়া রসুনের আচার প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিকের মতো কাজ করে। এ ছাড়া রসুনে থাকা বিভিন্ন উপাদান পেশির নমনীয়তা হারাতে দেয় না। ফলে ব্যথা কমানো সহজ হয়।
রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে
আচারে তেল বা ভিনেগার ছাড়াও দেওয়া হয় নানা রকমের মসলা। লবণ, মরিচ, হলুদ ও অন্যান্য মসলা ব্যবহার করার কারণে আচারে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট যোগ হয়। এ ছাড়া আচারে বিদ্যমান খনিজ উপাদান, ভিটামিন ও উপকারী অনেক ব্যাকটেরিয়া শরীরে কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, আমরা যদি নিয়মিত আচার খাই, তাহলে আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বেড়ে যায় অনেকটাই। এ কারণে অনেক সময় গর্ভবতী মহিলাদের আচার খাবার পরামর্শ দেওয়া হয়।
হজম সমস্যা সমাধানে
আচার যখন তৈরি করা হয়, তখন তাতে তেল বা ভিনিগার দেওয়া হয়। ফল বা সবজির আচার তৈরির ক্ষেত্রে তেল বা ভিনিগারের সঙ্গে বিক্রিয়া করে ল্যাকটিক, সাইট্রিক ও অ্যাসেটিক অ্যাসিড তৈরি করে। এই তিনটি অ্যাসিডই শরীরের পক্ষে ভালো। এগুলোর মধ্যে উপকারী মাইক্রোবসগুলোকে আরও শক্তিশালী ও সক্রিয় করে তোলে। এই মাইক্রোবস অন্ত্রে কাজ করে। ফলে আচার খেলে হজমশক্তি বাড়ে, মেটাবলিজম ভালো হয় এবং কিছু ক্ষেত্রে কোলেস্টেরলের মাত্রাও নিয়ন্ত্রিত থাকে।
মুখের স্বাদ বৃদ্ধিতে
আচারের ভেতরের পুষ্টগুণসম্পন্ন খাদ্যবস্তু আমাদের জিবের স্বাদগ্রন্থিগুলোর কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এ ছাড়া জ্বর কিংবা কোনো অসুখ থেকে সেরে ওঠার পর মুখে কোনো স্বাদ থাকে না, তখন আচার বা চাটনি অরুচি কাটাতে সাহায্য করে। এতে মুখের স্বাভাবিক স্বাদ ফিরে আসে। আচারের তেলে নানা মসলার সংমিশ্রণ থাকে, যা আমাদের শারীরবৃত্তীয় ক্ষেত্রে বেশ কাজের।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।