জুমবাংলা ডেস্ক : ফরিদপুর পৌরসভার ৯ ওয়ার্ডে টিসিবির উপকারভোগীদের তালিকা প্রণয়নে অনিয়মের অভিযোগ করেছে মহানগর বিএনপি। তাদের অভিযোগ, ইতোপূর্বে আওয়ামী লীগের দলীয় লোকদের দিয়ে এ তালিকা করে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নেয়। বর্তমান সরকারের আমলেও সেই লোকদের দিয়ে নতুন তালিকা করা হচ্ছে।
অভিযোগের সত্যতা জানতে গত বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুর থেকে ফরিদপুর পৌরসভা কার্যালয়ে অবস্থান নেন মহানগর বিএনপি ও ২৭টি ওয়ার্ড কমিটির নেতারা। সেখানে পৌর কর্তৃপক্ষকে না পেয়ে বিকেলে তারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ভবনে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালকের দপ্তরে পৌর প্রশাসকের বক্তব্য জানতে। নেতৃবৃন্দ সেখানে পৌর প্রশাসকের দায়িত্বে নিযুক্ত স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক চৌধুরী রওশন ইসলামের নিকট টিসিবির উপকারভোগীদের তালিকা প্রণয়নে অনিয়ম হচ্ছে বলে অভিযোগ করে তীব্র প্রতিবাদ করেন।
এ সময় ফরিদপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এএফএম কাইয়ুম জঙ্গি বলেন, কোনো একটি বিশেষ গোষ্ঠী টিসিবির উপকারভোগীদের তালিকা প্রণয়নের দায়িত্ব পেয়েছেন। বিষয়টি জাস্টিফাই করতে আমরা দায়িত্বপ্রাপ্ত পৌর প্রশাসকের নিকট জানতে চেয়েছি। যদিও তিনি আমাদের জানিয়েছেন, এমন কোনো দায়িত্ব কাউকে দেওয়া হয়নি। আমরা তাকে বলেছি, যদি এভাবে কারো নিকট থেকে তালিকা নেয়াও হয় সেগুলো যেন বাতিল করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ফরিদপুর পৌরসভার ২৭টি ওয়ার্ডে ইতোপূর্বে প্রায় ৯ হাজারের মতো উপকারভোগীদের তালিকা করা হয়। প্রত্যেক কার্ডধারীর আওতায় ৭০ টাকা দরে এক কেজি চিনি, ৬০ টাকা দরে মসুর ডাল ও একশো টাকা দরে এক লিটার সয়াবিন তেল কিনতে পারবেন। টিসিবির এ তালিকা প্রণয়নে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম মোস্তফা মিরাজ বলেন, ইতোপূর্বে আওয়ামী লীগের মেয়র ও কাউন্সিলরদের নিকট থেকে টিসিবির তালিকা করা হতো। আমরা জানতে পেরেছি উনি (পৌর প্রশাসক) এখনো আওয়ামী লীগের লোকদের নিকট থেকে টিসিবির উপকারভোগীদের তালিকার নাম নিচ্ছেন।
মিরাজ বলেন, আন্দোলন-সংগ্রামের যেহেতু ফ্যাসিবাদ সরকারকে সরানো হয়েছে তিনি এখনো সেই ফ্যাসিবাদের লোকদের নিকট থেকে কেনো টিসিবির উপকারভোগী লোকদের তালিকা নিবেন? আমরা অনুরোধ জানিয়েছি, অন্যান্য সব রাজনৈতিক দল ও ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে আলোচনা করে তিনি এ তালিকা করুক। কিন্তু সেটি না করে তিনি যদি পূর্বের মেয়রের নিয়োগপ্রাপ্ত লোকদের দিয়ে তালিকা করে তাহলে সেটিতো আওয়ামী লীগের পক্ষেই গেলো।
এ ব্যাপারে পৌর প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক চৌধুরী রওশন ইসলাম বলেন, টিসিবির উপকারভোগীদের একটি তালিকা প্রণয়নের কাজ আমার হাতে রয়েছে। সপ্তাহ খানেকের মধ্যে সেটি সম্পন্ন করা হবে। তবে তিনি দাবি করেন টিসিবির উপকারভোগীদের এমন তালিকার জন্য কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। নীতিমালা বা আইনের বাইরে আমি এক পাও নড়ছি না। যদি কেউ কাউকে দিয়ে এমন কোন তালিকা গছিয়ে দেয়ার চেষ্টাও করে সেটি আমার সামনে আনার সাহসও পাবেন না।
রওশন ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে এমন কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যাতে অনেকের চাকরি নিয়ে টানাটানি। পৌরসভায় এমন অনেক স্টাফ রয়েছেন যারা কোনো না কোনো রাজনৈতিক মদদপুষ্ট।
উপকারভোগীদের তালিকা প্রণয়নে বিএনপি ও ছাত্র নেতৃবৃন্দের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি সন্দেহ করছি পৌরসভার অভ্যন্তরে কোনো লোক প্রশাসনকে বা সরকারকে বিব্রত করতে কাজ করতে পারে। যদি সেটি ফাইন্ডআউট করতে পারি তাহলে তার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়া টিসিবির ডিলারদের ডিলারশিপ বাতিলের ব্যাপারে কোনো এজেন্ডা তার সময়কালে নেওয়া হয়নি বলেও জানান তিনি। পরে নেতৃবৃন্দ বিষয়টি জানাতে জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান মোল্লার সঙ্গে সাক্ষাত করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।