আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলা থেকে এই বছর বেশ পরিষ্কারভাবে কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃংঘ দেখা যাচ্ছে। এই দৃশ্য দেখার জন্য অনেকেই এসব জেলায় ভিড় করছেন। ফেসবুকেও অনেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পাওয়ার ছবি পোস্ট করছেন। খবর বিবিসি বাংলার।
পঞ্চগড়ের বাসিন্দা জবল-ই-রহমত বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, ”প্রতি বছরই এই সময়ে আমাদের জেলা থেকে কম বেশি কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়। কিন্তু এই বছরের মতো এতো পরিষ্কারভাবে অনেক বছর দেখা যায়নি।”
তিনি জানান, জেলার সব প্রায় সব জায়গা থেকেই শুভ্র সাদা বরফে আচ্ছাদিত পর্বতমালাটি দেখা যাচ্ছে। এমনকি কোন কোন স্থান থেকে পর্বতমালার নীচের কয়েকটি শহরের ঘরবাড়ি, আলো, গাড়ি চলাচলও দেখা যাচ্ছে।
কাঞ্চনজঙ্ঘা ভারতের সিকিম ও নেপাল জুড়ে অবস্থিত। এটি পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ। এর উচ্চতা ৮,৫৮৬ মিটার বা ২৪, ১৬৯ ফুট।
কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্যটকদের কাছে অন্যতম জনপ্রিয় একটি আকর্ষণ। ভারতের অন্যতম শৈল শহর দার্জিলিং, ঘুম বা কালিম্পংয়ের প্রধান আকর্ষণ কাঞ্চনজঙ্ঘা।
তেতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলছেন, ”বছরের এই সময়ে বৃষ্টি হওয়ায় আর বাতাসে ধুলা, মেঘ-কুয়াশামুক্ত থাকায় অনেক দূরের কাঞ্চনজঙ্ঘা পরিষ্কারভাবে দেখা যাচ্ছে। অন্য বছরেও এই সময়ে এখান থেকে এই পর্বত দেখা যায়। তবে এই বছরে আবহাওয়া বেশি পরিষ্কার থাকার কারণে অনেক ভালোভাবে দেখা যাচ্ছে।”
এই বছরে শুধু পঞ্চগড়ই নয়, নীলফামারী ও ঠাকুরগাঁও জেলার কয়েকটি এলাকা থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাচ্ছে। এসব জেলা থেকে এর আগে এই পর্বতশৃঙ্গটি দেখা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে ঠাকুরগাঁওয়ে গিয়েছেন সিলভিয়া নাজনীন। তিনি বিবিসিকে বলছেন, ”প্রথমবারের মতো উত্তরবঙ্গ এসে গতকাল কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পেয়ে মুগ্ধ হয়ে গেছি। এতো সুন্দর লাগছে সবকিছু!”
এরপরে তার পঞ্চগড় আর তেতুলিয়া যাওয়ার ইচ্ছা আছে।
যারা কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পাচ্ছেন, তারা সকলেই নানা আঙ্গিকে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করছেন। গত কয়েকদিন ধরে ফেসবুকে এরকম অসংখ্য ছবি দেখা যাচ্ছে।
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পেয়ে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন রহমান মাসুদ।
সেখানে দেখা যাচ্ছে, আধ পাকা ধান ক্ষেতের ওপর দিয়ে মাঝ আকাশে পরিষ্কার ফুটে রয়েছে সাদা রঙের বরফে আচ্ছাদিত পর্বত চূড়া।
মাকসুদা রহমান নামের একজন লিখেছেন, ”কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পাওয়ার খবর পেয়ে বন্ধুরা মিলে পঞ্চগড় এসেছি। দার্জিলিং গিয়ে মেঘের জন্য পর্বতটি দেখতে পাইনি। এখন বাংলাদেশে থেকে দেখে খুব ভালো লাগছে।”
পঞ্চগড় থেকে জবল-ই-রহমত বলছেন, কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার জন্য গত কয়েকদিনে তার বাসাতেই অনেক মেহমান এসেছেন। শহরের কোন হোটেলেই আর জায়গা ফাঁকা নেই। প্রতিদিনই বিভিন্ন জায়গা থেকে পঞ্চগড়ে আসছেন পর্বতচূড়া দেখার জন্য।
তবে বাংলাদেশের অন্য যেসব শহরের বাসিন্দারা কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার সুযোগ পাননি, পিছিয়ে নেই তারাও। অনেকেই ফটোশপ করে কাঞ্চনজঙ্ঘার ছবি বসিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করছেন।
পরশ রহমান যেমন তার মিরপুরের বাসার ফটোশপ করা ছবি ফেসবুকে দিয়ে মজা করে লিখেছেন, তার মিরপুরের বাসা থেকেও পরিষ্কারভাবে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।