আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রায় ২০ বছর পর আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা চলে যাচ্ছে। এরমধ্যে দেশটির বিভিন্ন এলাকা দখলে বিদ্রোহী গোষ্ঠী তালেবান ও সরকারি বাহিনী ব্যাপক লড়াইয়ে লিপ্ত হয়েছে।
মাঠের লড়াইয়ের পাশাপাশি এবার বাকযুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে আফগানিস্তানে বিবাদমান দুই পক্ষ।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক বক্তব্যে বলেন, তালেবানের পক্ষে গোটা আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া সম্ভব নয়। হোয়াইট হাউজে এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, মাত্র ৭৫ হাজার তালেবান আফগানিস্তানের তিন লাখ সরকারি সৈন্যর সঙ্গে কখনই পেরে উঠবে না।
বাইডেনের এ বক্তব্য সম্পর্কে শুক্রবার মস্কোয় সাংবাদিকরা রাশিয়া সফরকারী তালেবান প্রতিনিধিদলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এ সময় তালেবান প্রতিনিধিদলে প্রধান শেখ শাহাবুদ্দিন দেলোয়ার বলেন, এটি বাইডেনের ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি। যে তালেবান মাত্র একদিনে ১৪ জেলার পতন ঘটিয়েছে, তারা মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে গোটা আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার সক্ষমতা রাখে। তিনি বলেন, তালেবান বিদেশি সেনাদেরকে নিরাপত্তার সঙ্গে আফগানিস্তান ত্যাগ করার সুযোগ করে দিয়েছে।
তালেবান নেতার এমন বক্তব্যের পাল্টা জবাব দেন আফগানিস্তানের এক ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা। আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তারিক অ্যারিয়ান বলেন, তালেবান নেতার এই বক্তব্য আফগানিস্তানের বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
বিবিসি ফার্সিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, তালেবানের দাবি যদি শতকরা একভাগও সত্যি হতো তাহলে তাদের নেতারা আফগানিস্তানের বাইরে জীবনযাপন করতেন না। এ সময় তিনি বলেন, আফগানিস্তানের সেনাবাহিনী স্থল ও আকাশপথে তালেবানের যেকোনো হুমকির জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
সম্প্রতি আফগানিস্তান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের একটি প্রতিবেদন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ১১ সেপ্টেম্বর কাবুল থেকে সকল বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যে তালেবান যোদ্ধারা রাজধানী শহর দখল করবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিদেশি সেনাদের সমর্থন ছাড়া বর্তমান আফগান সরকারের টিকে থাকা অসম্ভব। কারণ সরকারের অনেক সেনা নিজেদের অবস্থান ছেড়ে তালেবানের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন। এই সূত্রে তালেবান অনেক উন্নত অস্ত্র এবং ন্যাটোর রেখে যাওয়া যানবাহন পাচ্ছে নির্বিঘ্নে।
তবে সামরিকভাবে অপ্রতিরোধ্য থাকলেও আফগানিস্তান বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত। দেশজুড়ে আঞ্চলিক বিভিন্ন শক্তির হাতেও বিপুল অস্ত্র ও জনবল আছে। আফগানিস্তানে বিভিন্ন পক্ষ শান্তিচুক্তিতে পৌঁছাতে না পারলে দীর্ঘমেয়াদি রক্তক্ষয়ী সংঘাতের আশঙ্কা থেকে যাবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।