বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ৩৩ বছর পর অযোধ্যার ধান্নিপুরে নতুন মসজিদ নির্মাণ প্রকল্পের সম্ভাব্য অগ্রগতি ২০২৬ সালের এপ্রিল নাগাদ শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছেন ইন্দো-ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশনের (আইআইসিএফ) চেয়ারম্যান জুফার ফারুকি। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর সংঘটিত মসজিদ ধ্বংসের ঘটনার পর দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এই জমি বরাদ্দ হয়।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী স্থগিতাদেশপ্রাপ্ত তৃণমূল কংগ্রেসের (টিএমসি) বিধায়ক হুমায়ুন কবির শনিবার (০৬ ডিসেম্বর) পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার রেজিনগরে বাবরি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
হাজির মুসল্লি ও আলেমদের সঙ্গে মঞ্চে ফিতা কেটে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন কবির।
রেজিনগর ও সংলগ্ন বেলদাঙা এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিপুলসংখ্যক পুলিশ, আরএএফ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়। পুরো এলাকা পরিণত হয় কঠোর নিরাপত্তাবেষ্টনীতে।
কবির দাবি করেন, ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠান ভণ্ডুল করতে ষড়যন্ত্র হয়েছিল। তবে লক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতি যে কোনো অপচেষ্টা ব্যর্থ করে দেবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এর আগেই সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘বেলদাঙায় আমি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করব। কোনো শক্তিই এটা ঠেকাতে পারবে না। আমরা কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনেই কাজ করছি।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘হিংসা ছড়ানোর চেষ্টা করে অনুষ্ঠান বন্ধ করার ষড়যন্ত্র চলছে। কিন্তু দক্ষিণবঙ্গের লাখো মানুষ তা হতে দেবে না। অনুষ্ঠানটি শান্তিপূর্ণভাবেই হবে। সংবিধান আমাদের উপাসনালয় গড়ার অধিকার দিয়েছে। ২০০০-র বেশি স্বেচ্ছাসেবক মাঠে আছে।’
হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অতিথিশালা—মসজিদের পাশাপাশি বহুমুখী কমপ্লেক্স তৈরির ঘোষণাও দেন কবির।তিনি আরও অভিযোগ তোলেন, টেএমসি ধর্মীয় মেরুকরণ করছে, যেমনটা বিজেপি করে থাকে।
ভোর থেকেই এলাকায় মানুষজন জমায়েত হতে শুরু করেন। উত্তর বারাসতের সাফিকুল ইসলামের মতো স্থানীয়রা নিজ হাতে ইট বহন করে প্রস্তুতিতে অংশ নেন।
কবির দাবি করেন, ২৫ বিঘা জুড়ে প্রায় ৩ লাখ মানুষ সমবেত হতে পারেন। দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে ধর্মীয় নেতারাও উপস্থিত থাকার কথা, এমনকি সৌদি আরব থেকে দুই কাজি বিশেষ কাফিলায় কলকাতা বিমানবন্দর থেকে রওনা হবেন বলে জানান তিনি।
এনএইচ-১২ সংলগ্ন বিশাল আয়োজনের জন্য সাতটি কেটারিং গ্রুপকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ৪০ হাজার দর্শনার্থীর জন্য বিরিয়ানি প্যাকেট, স্থানীয়দের জন্য আরও ২০ হাজার প্যাকেট—মোট খাবারের ব্যয়ই ৩০ লাখ টাকার বেশি।কবির জানান, সকাল ১০টায় কোরআন তিলাওয়াত দিয়ে দিন শুরু হবে, দুপুর ১২টায় ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন। বিকেল ৪টার মধ্যে মাঠ খালি করার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ।
এনএইচ-১২ মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসন বিশেষ সতর্ক। প্রয়োজনে বিকল্প রুটও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
কবির অবশ্য বলেন, ‘মানুষ আসবেই, কারণ এটি এলাকার জন্য ঐতিহাসিক মুহূর্ত।’ রাজনৈতিক বিতর্ক বা নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা—কিছুই ভিড় আটকাতে পারবে না বলে দাবি করেন তিনি।
সূত্র: দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



