সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির নিজের ঘরেই গণতন্ত্র নেই, তারা কিভাবে দেশের গণতন্ত্র রক্ষা করবে। আওয়ামী লীগ সম্মেলনের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করে। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও আওয়ামী লীগের সম্মেলন হচ্ছে।
রোববার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে মানিকগঞ্জ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিদেশি বন্ধুদের বলতে চাই, আপনারা বিএনপিকে জিজ্ঞেস করুন, তাদের ঘরেই তো গণতন্ত্র নেই, তাহলে তারা গণতন্ত্র রক্ষা করবে কিভাবে?
বিএনপির সংসদ সদস্যদের পদত্যাগ সম্পর্কে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, কয়েকজন সদস্য পদত্যাগ করলে সংসদ অচল হয় না।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের শেকড় বাংলাদেশের মাটির অনেক গভীরে। এটাকে ধাক্কা দিয়ে কেউ ফেলে দিতে পারবে না। ১০ ডিসেম্বরে আবারো প্রমাণ হয়ে গেছে। ফেলে দিলেন না, পল্টনে সমাবেশ করলেন না? আমি কিন্ত দুই দিন আগেই বলেছিলাম সমঝোতা হবে। আমাদের আকাশের কালো মেঘ কেটে যাবে। গতকাল যে মেঘ ছিল সব কেটে গেছে। তাদেরকে শুধু বলবো নোংরা ভাষায় কথা বইলেন না। লন্ডনে বসে তারেক আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরুদ্ধে অশালীন ভাষায় কথা বলে। আর দেশে বসে বিএনপির নেতাকর্মীরা সেই অশালীন ভাষা ব্যবহার করে। আওয়ামী লীগের নেতাদের নামে খারাপ ভাষায় কথা বললে সমুচিত জবাব দেয়া হবে। কারা কারা খারাপ ভাষা বলছেন সবার তালিকা আছে।
আগামী বছর ডিসেম্বর-জানায়ারীতে ফাইনাল খেলা হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বিএনপি বলেছে খেলা হবে, ১০ তারিখ চলে গেল, দেখতে দেখতে ১৫ বছর কেটে গেল। মুচলেকা দিয়ে তারেক রহমান পালিয়ে গেছে লন্ডনে। দেখতে দেখতে ১৫ বছর, তারেক আসবে কোন বছর? ঈদের পরে। কোরবানির ঈদ না রোজার ঈদ, এই বছর না ওই বছর, মানুষ বাঁচে কয় বছর? খেলা হবে দূর্নীতির বিরুদ্ধে, লুটপাটের বিরুদ্ধে, খেলা হবে ভোট চুরির বিরুদ্ধে, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে, ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে, অপশক্তির বিরুদ্ধে। খেলা হবে আগামী নির্বাচনে, এখন সেমিফাইনাল খেলা চলবে। ফাইনাল খেলা হবে আগামী বছর ডিসেম্বর-জানায়ারীতে। খেলাতো হবেই। ইনশাআল্লাহ আগামী নির্বাচনেও শেখ হাসিনার নেতেৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সৈনিকেরা নৌকা মার্কা নিয়ে বিজয়ী হবে।
বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বিদেশি দূতাবাস সহিংসতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে, উদ্বিগ্ন হয়। পুলিশের উপর যখন হামলা হয়, পুলিশ যখন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে তখন কোথায় যায় মানবাধিকার। কিসের মানবাধিকার? আপনার দেশে প্রতিদিন নারী ধর্ষিত হচ্ছে, তখন কি মানবাধিকার লংঘিত হয়না। সিএনএনে খবর দেখি, এক বছরে কত নারী ধর্ষিতা হচ্ছে। মানবাধিকার তখন কোথায় যায়? স্কুলের বাচ্চাদের উপর হামলা হয় হত্যা করা হয়, তখন মানবাধিকার কোথায় যায় জানতে চাই। ফিলিস্তিনে যখন সাংবাদিককে প্রকাশ্যে হত্যা করা হয়েছে, প্রতিদিন ফিলিস্তিনে হামলা হয়, কিশোর ছেলে-মেয়েরা লাশ নিয়ে মিছিল করে, তখন তো কোন কথা বলেন না। ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে পেরেছেন? নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আমাদের বিপদে ফেলেছেন। আমরা উন্নয়নশীল দেশ, আমাদের সৎ যোগ্য ও আদর্শবান নেতা আছে বলে বাংলাদেশ করোনা মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছে।উন্নত দেশে পয়সা দিয়ে ভ্যাকসিন দিয়েছে। আর বাংলাদেশে বিনা পয়সায় করোনার ভ্যাকসিন দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা।
দেশে এখন বিদ্যুৎ ও রিজার্ভ সঙ্কট নেই জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের রিজার্ভ কমে গিয়েছিল, তা আবার বেড়েছে। আমাদের এখন পাঁচ মাসের আমদানি করার রিজার্ভ আছে। জ্বালানী তেল, ভোজ্যতেল, গম, ডাল, ভূট্টা, খাদ্য বেশি দামে কিনে অল্প দামে সাধারণ মানুষের কাছে পৌছে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। এই বিশ্বকাপে একদিনও কি লোডশেডিং হয়েছে? এখন আর লোডশেডিং নেই। দেশে কিছুদিন লোডশেডিং ছিল, তা সামাল দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের জন্য শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নেই। উন্নয়নে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। এতো সৎ নেতা, এতো ভালো মানুষ পঁচাত্তরের পর এদেশে আর একজনও আসেনি। এদেশের স্বাধীনতা এসেছে বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে, আর এদেশের মুক্তি হবে তার কন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরে।
তিনি আরো বলেন, বিএনপির সময়ে মানিকগঞ্জেও বড় বড় মন্ত্রী ছিল। কিন্ত তখন মানুষের ভাগ্যের কোন উন্নয়ন হয়নি, উন্নয়ন হয়েছে তাদের পকেটের। শেখ হাসিনার আমল মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নের আমল। আমাদের স্টকে পর্যাপ্ত খাদ্য আছে। একজন মানুষও না খেয়ে মরবে না।
সম্মেলনে এ্যাডভোকেট গোলাম মহিউদ্দিনকে সভাপতি, এ্যাডভোকেট আব্দুস সালামকে সাধারণ সম্পাদক ও আব্দুল মজিদ ফটোকে জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ও জাতীয় কমিটির সদস্য ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
এ সময় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এমপি, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, এ্যাডভোকেট সানজিদা খানম, স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক, মানিকগঞ্জ-০১ আসনের সংসদ সদস্য এ এম নাঈমুর রহমান দুর্জয় ও মানিকগঞ্জ-০২ আসনের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম উপস্থিত ছিলেন।
মানিকগঞ্জে গণপরিবহন থেকে বছরে দুই কোটি টাকা চাঁদা আদায়, জড়িত আ.লীগের দুই নেতা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।