ধর্ম ডেস্ক : সারা বিশ্বে মুসলমানদের কাছে আশুরার দিনটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যময়। ইসলাম ধর্মমতে, মহান আল্লাহ এই দিনে পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং এই দিনেই পৃথিবী ধ্বংস হবে। ইসলামিক পঞ্জিকা অনুযায়ী, মহররম হচ্ছে চন্দ্রবর্ষের প্রথম মাস। মহররম অর্থ অধিক সম্মানিত। মহররম মাসের দশম দিনকে আশুরা বলা হয়। আশুরার দিনে বিশ্বে সংঘটিত অলৌকিক অনেক গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ঘটনার কারণে মুসলমানদের কাছে ১০ মহররম বিশেষভাবে মহিমান্বিত।
ইসলাম ধর্মমতে, আশুরার দিনে আসমান ও জমিন সৃষ্টি করা হয়েছিল। আশুরার দিন আল্লাহ পৃথিবীর প্রথম মানব হজরত আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করেছেন। এই দিনে আল্লাহ নবীদের নিজ নিজ শত্রুর হাত থেকে আশ্রয় প্রদান করেছেন। এই দিন হজরত নুহ (আ.)-এর প্লাবন শেষ হয় এবং নুহ (আ.)-এর জাহাজ তুরস্কের ‘জুদি’ নামক পর্বতে গিয়ে থামে।
আশুরার দিন হজরত ইব্রাহিম (আ.) জালিম বাদশাহ নমরুদের অগ্নিকুণ্ড থেকে নিরাপদে মুক্তি পেয়েছিলেন। এই দিন হজরত ইউনুস (আ.) মাছের পেট থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। আশুরার দিনে হজরত আইয়ুব (আ.) দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন।
আশুরার দিন হজরত সুলাইমান (আ.) তাঁর হারানো রাজত্ব ফিরে পান। এই দিনে হজরত ইয়াকুব (আ.) হারানো ছেলে হজরত ইউসুফ (আ.)-কে ৪০ বছর পর ফিরে পেয়েছিলেন। এই দিনে হজরত ঈসা (আ.) জন্মগ্রহণ করেন এবং এই দিনেই তাঁকে দুনিয়া থেকে আকাশে উঠিয়ে নেওয়া হয়। সর্বশেষ ৬৮০ খ্রিস্টাব্দে ওই দিনে ঐতিহাসিক কারবালা প্রান্তরে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসাইন (রা.) সপরিবারে শাহাদাতবরণ করেন।
ইহুদিরা আশুরা উপলক্ষে মহররম মাসের ১০ তারিখে রোজা রাখে। শিয়া সম্প্রদায় বিভিন্ন মিছিল ও শোকানুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনটি উদযাপন করে। আশুরা উপলক্ষে ৯ ও ১০ অথবা ১০ ও ১১ মহররম তারিখে রোজা রাখা মুসলমানদের জন্য সুন্নত। এ ছাড়া মুসলমানরা আশুরার দিন উত্তম আহারের জন্য চেষ্টা করে থাকেন।
নফল রোজার মধ্যে আশুরার দিনে রোজা রাখা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ। সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী করিম (সা.) সাহাবিদের নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমরা ইহুদিদের থেকে ব্যতিক্রম করো, আশুরার একদিন আগে বা একদিন পরেও রোজা রাখো’, অর্থাৎ ১০ মহররমের সঙ্গে ৯ বা ১১ মহররম মিলিয়ে অন্তত দুটি রোজা রাখতে বলেছেন, যাতে ইহুদিদের সঙ্গে সাদৃশ্য না হয়।আশুরার দিন রোজা রাখা সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘আশুরার দিনের রোজার ব্যাপারে আল্লাহ পাকের কাছে আমি আশাবাদী যে তিনি এক বছর আগের গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন।’ [মুসনাদে ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহ.)]
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।