ভারতের উত্তরপ্রদেশের বরেলি বিভাগে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে টানা ৪৮ ঘণ্টার জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। শনিবার দুপুর ৩টা পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে বলে জানানো হয়েছে। চারটি জেলা জুড়ে রাস্তায় বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েনের পাশাপাশি ২ দিনের জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের দাবি, ‘আই লাভ মুহাম্মদ’ পোস্টার ঘিরে চলমান উত্তেজনা এবং সামনে থাকা দুর্গাপূজা ও দশমী উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা অটুট রাখতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
‘আই লাভ মুহাম্মদ’ প্রচারণাকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদের পর থেকেই উত্তরপ্রদেশের বরেলি নজরদারির কেন্দ্রে রয়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই নিশ্চিত করেছে, ভারতের স্বরাষ্ট্র দপ্তর ২ অক্টোবর বিকেল ৩টা থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত মোবাইল ইন্টারনেট ব্রডব্যান্ড এবং এসএমএস পরিষেবা স্থগিত রাখার নির্দেশ জারি করেছে।
বরেলি, শাহজাহানপুর, পিলিভিট এবং বুদাউন এই চারটি জেলায় হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। এই নির্দেশ বরেলির রাজ্য পুলিশের মহাপরিচালক (ডিজিপি), জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (ডিএম) এবং সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশের (এসএসপি) কাছে পাঠানো হয়েছে। এটি ১৮৮৫ সালের ইন্ডিয়ান টেলিগ্রাফ অ্যাক্টের ধারা ৭ এবং ২০১৭ সালের টেম্পোরারি সাসপেনশন অফ টেলিকম সার্ভিসেস রুলসের অধীনে জারি করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র সচিব গৌরব দয়াল জানান, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি” বজায় রাখতে এবং মানুষকে “সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়াতে পারে এমন গুজব অনলাইনে ছড়ানো” থেকে বিরত রাখতে এই নির্দেশ জারি করা হয়েছে।
প্রাদেশিক সশস্ত্র কনস্ট্যাবুলারি (পিএসি) এবং র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স (আরএএফ) কর্মীদের জেলাগুলিতে মোতায়েন করা হয়েছে এবং রামলীলা মাঠ, দুর্গাপূজা মেলা এবং রাবণ দহন কর্মসূচির মতো উৎসবের সময় মানুষ যেখানে জড়ো হন, সেখানে পুলিশ অতিরিক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছে।
বরেলিতে ২৬ সেপ্টেম্বর তৌকির রাজা খান আয়োজিত প্রতিবাদের পর এই বিশাল পুলিশি অভিযান শুরু হয়। “আই লাভ মুহাম্মদ” প্রচারণায় অংশগ্রহণের জন্য মুসলমানদের বিরুদ্ধে দায়ের করা এফআইআর প্রত্যাহারের দাবিতে এই প্রতিবাদ জানানো হয়।
কর্তৃপক্ষ আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে পাথর ছোঁড়ার অভিযোগ আনায় প্রতিবাদটি বিশৃঙ্খল হয়ে ওঠে। তবে, একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, মুসলমানরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করতে একত্রিত হলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে।
পুলিশের বিরুদ্ধে মুসলিম যুবকদের অন্যায়ভাবে লক্ষ্য করে বাড়ি থেকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, যদিও যুবকরা প্রতিবাদে কোনো ভূমিকা পালন করেনি।
অ্যাক্টিভিস্টরা এই অভিযানকে “আই লাভ মুহাম্মদ”-এর মতো একটি ধর্মীয় স্লোগান প্রদর্শনের জন্য “সম্মিলিত শাস্তি” আখ্যা দিয়ে এর তীব্র নিন্দা করেছেন।
গণমাধ্যমের সাথে কথা বলার সময় একজন কর্মকর্তা জানান, “বরেলি এবং প্রতিবেশী জেলাগুলিতে কোনো ধরনের গোলযোগ এড়াতে সংবেদনশীল এলাকায় সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।”
সূত্র: টাইমস অফ ইন্ডিয়া/মুসলিম মিরর
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।