ধর্ম ডেস্ক : বর্তমানে বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী যে মহামারি দেখা দিয়েছে আর তাতে মানুষ যেভাবে প্রাণ হারাচ্ছে, এ বিপদ থেকে একমাত্র মহান সৃষ্টিকর্তায় পারেন মানব সম্প্রদায়কে রক্ষা করতে।
মানুষ যখন নির্জনে-নিভৃতে মালিকের কাছে প্রার্থনা করে, আল্লাহ তাআলা তখন মহানুভবতায় বান্দার সমস্যা দূর করে দেন। কণ্টকাকীর্ণ পথকে কুসুম-আস্তীর্ণ করে দেন। সবার অলক্ষ্যে ও সন্তর্পনে আল্লাহর জন্য যে অশ্রু ঝরে, তা আল্লাহর নিকট ভীষণ প্রিয় বলে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে।
দোয়া এক মুসলমানের প্রতি অপর মুসলমানের অধিকার। দোয়ার মাধ্যমে একে অপরের প্রতি কল্যাণ কামনা করা হয়। দোয়ার বিনিময়ে বিপদ-আপদ দূর হয়। দোয়ার পাশাপাশি যারা চেষ্টা-প্রচেষ্টা করে আল্লাহ তাআলা তাদের সমাধানের পথ বের করে দেন। আল্লাহ আমাদের সঠিকভাবে আমল করার তাওফিক দান করুন।
সাধারণত বিপদের সময় দুনিয়ার বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনরা মুখ ফিরিয়ে নেয়। কিন্তু পরম করণাময় আল্লাহ তার বান্দার কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন না। সালমান ফারসি (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেনন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলার অনেক লজ্জা ও আত্মমর্যাদা রয়েছে। সুতরাং যখন মানুষ চাওয়ার জন্য তার কাছে দুই হাত তোলে, তখন তিনি সেই হাত দুইটিকে ব্যর্থ ও খালি ফেরত দিতে লজ্জাবোধ করেন।’ (মুসলিম, হাদিস: ৩২১)
দোয়া মুমিনের জন্য নিরন্তর সহযোগী ও হাতিয়ার। দোয়ার মাধ্যমে জীবনে সমৃদ্ধি ও সফলতা আসে। বিপদ-আপদ দূর হয়ে যায়। বস্তুত মুমিন প্রতিটি কাজে দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর সহযোগিতা প্রার্থনা করে। মহান আল্লাহ তাআলাও চান, বান্দা তার কাছে দোয়া করুক—কায়মনো বাক্যে প্রার্থনা করুক।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমার বান্দারা যখন আপনার কাছে আমার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করে, নিশ্চয় আমি নিকটেই আছি। আমি দোয়াকারীর দোয়া কবুল করি, যখন সে আমার কাছে দোয়া করে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৬)
কোরআনের অন্য জায়গায় আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের দোয়া শিখিয়ে বলেন, ‘হে আমাদের পালনকর্তা! তুমি দুনিয়ায়ও আমাদের কল্যাণ দান করো এবং আখেরাতেও কল্যাণ দান করো এবং তুমি জাহান্নামের আজাব থেকে আমাদের রক্ষা করো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২০১)
আল্লাহ তাআলা আরো ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা ভয় এবং আশা নিয়ে আল্লাহকে ডাক। নিশ্চয়ই আল্লাহর রহমত সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী।’ (সুরা আরাফ : ৫৬)
আলী (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘দোয়া মুমিনের হাতিয়ার, দ্বীনের স্তম্ভ ও আসমান-জমিনের নুর।’ (মুসলিম, হাদিস: ৪৬৫)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া অপেক্ষা কোনো জিনিসই অধিক ফজিলত ও সম্মানের নেই।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৩৩৭)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমাদের প্রত্যেকের দোয়া কবুল হয়ে থাকে, যদি সে তাড়াহুড়া না করে এবং একথা বলে যে, আমি দোয়া করলাম, অথচ আমার দোয়া কবুল হলো না।’ (বুখারি, হাদিস: ৫৯০১)
দোয়া করলে কিংবা আল্লাহর কাছে চাইলে তিনি খুশি হয়ে যান। এছাড়া আল্লাহকে রাজি-খুশি করার মাধ্যম হলো তার কাছে বিনীত হয়ে সাহায্য প্রার্থনা করা। আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা আল্লাহ তাআলার কাছে তার দয়া ও রহমত চাও। কেননা আল্লাহ তাআলার কাছে চাইলে তিনি খুশি হন।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৩৫৭১)
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।