ভোটে দায়িত্ব পালনে অবহেলা ও অনিয়মে জড়িত নির্বাচন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ‘নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এবং নিজস্ব কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও পদোন্নতির সুযোগ রাখতে ‘নির্বাচন কমিশন সচিবালয় (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে সরকার। রবিবার (৫ অক্টোবর) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এই দুই অধ্যাদেশের গেজেট প্রকাশ করে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গত ১৮ সেপ্টেম্বর উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ২০০৯ সালের নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইন এবং ১৯৯১ সালের নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন সংশোধনের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর তা অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হলো।
অধ্যাদেশ অনুযায়ী, ভোটগ্রহণে নিয়োজিত প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও ‘নির্বাচন কর্মকর্তা’ হিসেবে গণ্য হবেন।
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, কোনো নির্বাচন কর্মকর্তা যদি কমিশনের আদেশ অমান্য করেন, দায়িত্বে অবহেলা করেন বা ইচ্ছাকৃতভাবে নির্বাচনসংক্রান্ত আইন লঙ্ঘন করেন, তাহলে তাকে অসদাচরণকারী হিসেবে গণ্য করা হবে।
এ ক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবে—যার মধ্যে রয়েছে বরখাস্ত, বাধ্যতামূলক অবসর, পদাবনতি, পদোন্নতি বা বেতন বৃদ্ধি স্থগিত রাখা ইত্যাদি।
কমিশন চাইলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে সর্বোচ্চ দুই মাসের জন্য সাময়িকভাবে বরখাস্ত করতে পারবে এবং নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ বাধ্য থাকবে সেই নির্দেশ এক মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে।
অধ্যাদেশে আরও বলা হয়েছে, কমিশনের সিদ্ধান্ত ও প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে সরকার ও কমিশনের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিলে কমিশনের সিদ্ধান্তই প্রাধান্য পাবে।
আইন লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে কোনো কর্মকর্তা সর্বোচ্চ এক বছর কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন। আর কমিশনের আদেশ অমান্য করলে শাস্তি আরও কঠোর—১ থেকে ৫ বছর কারাদণ্ড বা ২০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
একই দিনে জারি হওয়া নির্বাচন কমিশন সচিবালয় (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫–এর মাধ্যমে ইসির নিজস্ব সার্ভিস চালুর পথ খুলেছে। নতুন বিধান অনুযায়ী, “নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগের জন্য ‘নির্বাচন কমিশন সার্ভিস’ নামে একটি সার্ভিস থাকবে।”
এর ফলে ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তারা নিজস্ব কাঠামোর মধ্যেই পদোন্নতির সুযোগ পাবেন—যা তাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। এই সংশোধনের ফলে ভবিষ্যতে ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তা পর্যায়ক্রমে সচিব পদেও উন্নীত হতে পারবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।