জুমবাংলা ডেস্ক: পাবনা মানবকল্যাণ ট্রাস্টের আশ্রয়ে থেকে এবার ১১ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় পাস করেছেন। এসব দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শ্রুতি লেখকের সহায়তায় পাবনা সরকারি মহিলা কলেজ ও সেন্ট্রাল গার্লস স্কুল কেন্দ্র থেকে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। এদের একজন হারুনার রশীদ পেয়েছেন জিপিএ-৫। এছাড়া অন্য ১০ জন জিপিএ-৪ এর ওপরে পেয়েছেন।
হারুনার রশিদ ছাড়া অন্য ১০ জনের পরীক্ষার ফলাফল হচ্ছে- চাঁপাইনবাবগঞ্জের তরিকুল ইসলামের ছেলে আব্দুল মতিন তুষার জিপিএ-৪.৫০, গাজীপুরের গোলজার হোসেনের ছেলে মো. মাহমুদুল হাসান শাওন জিপিএ-৪.২৫, নওগাঁর টিপু সুলতানের ছেলে মো. মাহবুব জামান জিপিএ-৪.২৫, সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার হাবিবুর রহমানের ছেলে মো. আরিফুল ইসলাম জিপিএ-৪.৫০, চাঁপাইনবাবগঞ্জের তৈয়মুর রহমানের ছেলে আব্দুর সবুর জিপিএ-৪.৫০, একই জেলার গোলাম মোস্তফার ছেলে আনোয়ারুল ইসলাম জিপিএ-৪.২৫, কিশোরগঞ্জের বাচ্চু মিয়ার ছেলে নাদিম হোসেন জিপিএ-৪.২৫, টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার শ্যামল চন্দ্র সুতারের ছেলে ভোলানাথ সুতার জিপিএ-৪.১৭, ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার সুশিল চন্দ্র ধরের ছেলে চন্দুন কুমার ধর জিপিএ-৪.১৫ এবং পাবনা সদর উপজেলার মহেন্দ্রপুর গ্রামের সিদ্দিক হোসেনের ছেলে কাওসার হোসেন জিপিএ- ৪.৫৮ পেয়েছেন।
জিপিএ-৫ পাওয়া হারুনার রশিদ জানান, তার একমাত্র ইচ্ছা উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ শেষে বড় চাকরি করে বাবা-মায়ের সেবা করা। সেই সঙ্গে পরিবার ও প্রতিবেশীদের সহায়তা করা।
এই ১১ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পাবনা শহরতলীর সিঙ্গা গ্রামের মানবকল্যাণ ট্রাস্ট্রের আশ্রয়ে থেকে লেখাপড়া করে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন। এর আগে তারা এখান থেকেই জেএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন।
পাবনা মানবকল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল হোসেন জানান, এরা সবাই দরিদ্র ঘরের সন্তান। তাদের ফলাফল আশানুরুপ হয়েছে।
তিনি জানান, অন্ধদের লেখাপড়ার জন্য প্রয়োজন ব্রেইল পদ্ধতি। অথচ দেশের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ সুযোগ নেই। তারা চোখে দেখে না, এ জন্য তাদের পরীক্ষার জন্য প্রয়োজন হয় শ্রুতি লেখকের। শ্রুতি লেখকদের সম্মানি দিতে হয় ৮-১০ হাজার টাকা। দরিদ্র এসব অন্ধদের শ্রুতি লেখককে সম্মানি দেয়া তো দূরের কথা লেখাপড়া করার ন্যূনতম আর্থিক ব্যয় নির্বাহ করারও সক্ষমতা নেই।
এসব দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা জানান, শিক্ষাবোর্ড থেকে শ্রুতি লেখকদের অনুমোদন, রেজিস্ট্রেশন জটিলতা এবং বিভিন্ন বোর্ডের ভিন্ন ভিন্ন নীতিমালার কারণে পদে পদে তাদের হয়রানির শিকার হতে হয়।
তারপরও থেমে থাকছে না এসব সংগ্রামী দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর শিক্ষাজীবন। দরিদ্র এসব দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের শারীরিক প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি রয়েছে নানা ধরনের আর্থসামাজিক প্রতিকূলতা। কিন্ত সব বাধা ও প্রতিূলতাকে জয় করে তারা সোনালি ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছেন। এই ১১ জন জনের মত আরও প্রায় ৮০ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পাবনার মানবকল্যাণ ট্রাস্টের আশ্রয়ে থেকে ব্রেইল পদ্ধতিতে লেখাপড়া করছেন।
মানবকল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল হোসেন ১৯৯৪ সাল থেকে স্ব উদ্যোগে মেধা ও শ্রম দিয়ে প্রতিবন্ধী গোষ্ঠীর জন্য এই অলাভজনক প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করে আসছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।