আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তানকে দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে এবার সেনাবহরে রোবট যোদ্ধা রাখতে যাচ্ছে ভারত। দেশটির সেনাবাহিনী কাশ্মীরে রোবট সেনা নামানোর পরিকল্পনা করছে। তাদের দাবি, সীমান্তে নজরদারি চালানোর পাশাপাশি জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নামবে এই রোবট বাহিনী।
গ্রেনেড হামলার মুখে বুক চিতিয়ে দাঁড়াবে এসব যন্ত্রমানব। ভাঁজ করে সহজেই বহনযোগ্য হবে রোবটগুলো। ভারতের সেনা সদর দফতরের খবর, প্রাথমিকভাবে ৫৫০টি রোবোটিক্স ইউনিট তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এ রোবটগুলোর আয়ুষ্কাল (চাকরির মেয়াদ) হবে অন্তত ২৫ বছর। শিগগিরই ভারতের সেনাবাহিনীর হাতে এগুলো পৌঁছাবে বলে জানিয়েছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। জঙ্গিদের যেকোনো প্রতিরোধ ভেঙে সামনে এগিয়ে যাবে লড়াকু এই রোবট।
শুধু প্রতিরোধ ভাঙাই নয়, তল্লাশি অভিযানেও দক্ষ এই যন্ত্রমানব। জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদবিরোধী অভিযান জোরদার করতে ভারতীয় সেনার হাতে খুব শিগগির রোবট তুলে দেওয়া হবে।
রোবটের দক্ষতার বিষয়ে সেনাবাহিনীর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, তরতর করে এরা সিঁড়ি ভাঙতে পারবে। গাছে চড়তে পারবে অসাধারণ ক্ষিপ্রতায়। ঢুকে পড়তে পারবে জঙ্গিঘাঁটিতে। গ্রেনেড ছুঁড়েও একে আটকানো যাবে না। আগুনে ঝাঁপ দিতে পারবে। চলার পথে ২০ সেন্টিমিটার গভীর পানিরবাধা থাকলেও অনায়াসে তা পেরিয়ে যাবে। নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে আধুনিক অস্ত্র নিয়ে প্রতিদিন ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে জঙ্গিরা। এই অবস্থায় সুরক্ষা প্রাচীর গড়ে তুলবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি রোবট। রোবট সেনাদের মূলত ব্যবহার করা হবে জম্মু ও কাশ্মীরের স্পর্শকাতর বিভিন্ন এলাকায়।
সেনাবাহিনীর ওই কর্মকর্তা আরও জানান, রাষ্ট্রীয় রাইফেলের জওয়ানরা রোবট পেলে সীমান্তে নজরদারি অনেক সহজ হবে। কারণ নজরদারি চালাতে রোবটগুলোতে থাকবে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরা ও ট্রান্সমিশন সিস্টেম। ক্যামেরার ব্যাপ্তি হবে ১৫০-২০০ মিটার। দিনে-রাতে যে কোনো বিপৎসংকুল এলাকায় ঢুকে ছবি ও তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে রোবটরা। সেই তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই জঙ্গি অভিযানের ছক সাজাবে ভারতীয় সেনাবাহিনী। সেনা টহলপথে কোথাও বিস্ফোরক লুকানো আছে কি না, এরও হদিস দেবে এই রোবট। পাশাপাশি সেনাদের কাছে প্রয়োজনীয় অস্ত্র পৌঁছে দেওয়ার কাজেও রোবটগুলো ব্যবহার করা যাবে। ১৯৯০ সালের ১ অক্টোবর এমনই রোবট সেনার প্রয়োজনীয়তার কথা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের ডিরেক্টর জেনারেল।
দেশটির সেনাসূত্র জানায়, জঙ্গিরা তাদের যুদ্ধ কৌশলে বদল এনেছে। এখন তারা আর শুধু সীমান্তে হামলা চালায় না, জঙ্গিরা বেছে নিচ্ছে গ্রাম-শহরের সাধারণ মানুষদের।প্রত্যন্ত এলাকায় ঢুকে ঘাঁটি তৈরি করছে তারা। সেখান থেকে অতর্কিত হামলা চালাচ্ছে সেনাবাহিনীর ওপর।
বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় রাইফেলের জওয়ানদের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। সেই কারণেই নজরদারি ও নিরাপত্তার কাজে রোবট ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছিল সেনাবাহিনী। আর দেরিতে হলেও সেই প্রস্তাব মেনে নিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।