জুমবাংলা ডেস্ক: পদ্মা সেতু চালুর পর এবার রূপসা নদীতে রেলসেতুর সর্বশেষ স্প্যানটি জোড়া লাগায় পূর্ণতা পেয়েছে সেতুটি। ফলে এখন দৃশ্যমান ৫ দশমিক ১৩ কিলোমিটার রেলসেতু। যা বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ রেলসেতু। অপরদিকে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে খুলনা-মোংলা রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের রেললাইন স্থাপন, টেলিকমিউনিকেশন ও সিগনালিং এর কাজ। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মোংলা বন্দরের সঙ্গে দেশের রেললাইনের সংযোগ হবে। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে কয়েকগুণ।
খুলনার রূপসা খানজাহান আলী (রহঃ) ব্রিজে দাঁড়িয়ে দক্ষিণে তাকালেই দেখা মিলছে এ অঞ্চলের মানুষের কাক্সিক্ষত রূপসা রেলসেতুর। গেল সপ্তাহে সর্বশেষ দুটি স্প্যান জোড়া দিয়ে রূপসা নদীর পশ্চিমপাড় বটিয়াঘাটা পুটিমারী ও পূর্বপাড় খারাবাদ এলাকায় রেলসেতুর সংযোগ স্থাপিত হয়েছে। প্রকল্পটি উন্মোচিত হলে এ অঞ্চলসহ দেশের অর্থনীতিতে আরও একটি নবদিগন্তের সূচনা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
রেলসেতু তৈরির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লারসেন এ্যান্ড টুব্রোর ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিলেশন ম্যানেজার সুব্রত জানা জানান, পাইলিং এর কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর শেষ দুইটা স্প্যানও জোড়া লেগেছে। এখন শুধু রিভেটিং (ফিনিসিং ও জোড়া লাগানো) কাজ চলছে। সেতুর ৯৯ শতাংশ কাজ শেষ, সবমিলিয়ে আর এক মাস সময় লাগবে।
প্রকল্প পরিচালক মোঃ আরিফুজ্জামান বলেন, রেলপথের কিছু অংশ ও রেলসেতুর ফিনিসিংওয়ার্ক বাকি আছে। নতুন ডিজাইনে ৯টি রোড আন্ডারপাস নির্মাণ, লেন বৃদ্ধি ও মাটির কাজসহ নতুন কিছু কাজও প্রায় শেষ। সব মিলিয়ে প্রকল্পের পাঁচ শতাংশ কাজ বাকি আছে। আশা করছি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সকল কাজ শেষ করে প্রকল্প বুঝে দিতে পারব।
খুলনা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বুলু বিশ্বাস বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এতদাঞ্চলে অর্থনীতিতে যে সম্ভাবনার দার উন্মোচিত হয়েছে সেটা আরও এক ধাপ এগিয়ে নেবে সরকারের এই উদ্যোগ। প্রাণ পাবে মোংলা ইপিজেড।
নতুন নতুন শিল্প উদ্যোক্তরা আসবে এ অঞ্চলে। আমদানি-রফতানি বৃদ্ধিতে বন্দরের সঙ্গে যুক্ত হবে বেনাপোলসহ উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড় ও বাংলাবান্ধা হয়ে ভারতের শিলিগুড়ির রেল যোগাযোগ। বিভিন্ন স্থান থেকে দেশী-বিদেশী পর্যটকরাও সহজে সুন্দরবন ভ্রমণ করতে পারবেন।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পটির কাজ তিনটি ভাগে বিভক্ত। রূপসা নদীর ওপর রেলসেতু নির্মাণ, রেললাইন স্থাপন এবং টেলিকমিউনিকেশন ও সিগন্যালিং। প্রকল্পের আওতায় লুপ লাইনসহ রেলওয়ে ট্র্যাকের দৈর্ঘ্য ৮৬ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার। এরমধ্যে খুলনার ফুলতলা থেকে মোংলা বন্দর পর্যন্ত ৬৪ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ।
রূপসা নদীর ওপরে যুক্ত হচ্ছে ৫ দশমিক ১৩ কিলোমিটার রেলসেতু ছাড়াও ২১টি ছোট আকৃতির সেতু ও ১১০টি কালভার্ট নির্মাণ এবং খুলনার ফুলতলা থেকে মোংলা পর্যন্ত ৮টি স্টেশন নির্মাণকাজ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লারসেন এ্যান্ড টুব্রো রূপসা নদীর ওপর রেলসেতুর নির্মাণ কাজ করছে। বাকি কাজ করছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ইরকন ইন্টারন্যাশনাল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।