জুমবাংলা ডেস্ক : জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে স্ত্রী ও কন্যাদের উপর এসিড নিক্ষেপের আশঙ্কায় নিজ বাড়িতে নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ দিয়েছেন যশোরের এক কৃষক। পুলিশ ও স্থানীয় গণ্যমান্যদের কাছে ঘুরেও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়ে তিনি এ পদক্ষেপ নিয়েছেন। এরপরও চরম শঙ্কায় দিন পার করছেন শেখ মাহাবুর রহমান নামে ওই কৃষক।
পুলিশ বলছে বিষয়টি মীমাংসার জন্য স্থানীয় একজনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। অবশ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সামাজিক ওই নেতা কোন ভূমিকা রাখছেন না। এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিষয়টি তার নজরে এসেছে। শিগগিরই তিনি এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
মাসিক ১৫ শ টাকা বেতনে গত দুই মাস ধরে যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রোহিতা শেখপাড়ার ওই বাড়িতে দায়িত্ব পালন করছেন মদন শেখ নামে এক নৈশপ্রহরী। যিনি প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত ওই বাড়ির বারান্দায় বসে দায়িত্ব পালন করেন।
শেখ মাহাবুর রহমান জানান, তিনি ২৩ বছর আগে মায়ের কাছ থেকে তিন শতক জমি ক্রয় করেন। মায়ের মৃত্যুর কারণে ওই জমি দলিল করে নিতে পারেননি। তার ছয় ভাই-বোনের মধ্যে পাঁচজন জমির দখল নিয়ে আপত্তি না করলেও সেজো ভাই শেখ মুজিবর রহমান জমির দাবি ছাড়েনি। যে কারণে তার অংশ তাকে বুঝিয়ে দিয়ে বাকী জমিতে তিনি ঘর নির্মাণ করেন। অথচ তার ভাই শেখ মুজিবর রহমান গোপনে ওই তিন শতক জমি নিজ ছেলের নামে রেজিস্ট্রি করে দেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধে মারপিট হয়। এ ঘটনায় শেখ মুজিবর রহমান মামলা করায় জেলখাটেন তিনি। জামিনে মুক্ত হয়ে বাড়িতে আসার পর থেকে তাকে ও তার স্ত্রী-সন্তানদের নানা ধরণের হুমকি দেয়া হচ্ছে।
শেখ মাহাবুর রহমান বলেন, আমার তিন মেয়ের মধ্যে সোনিয়া উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্রী, মনিরা ৮ম শ্রেণির এবং রিয়া ২য় শ্রেণির ছাত্রী। সেজো ভাইয়ের ছেলে মেহেদি হাসান বিভিন্ন সময় মেয়েদের উপর এসিড নিক্ষেপের হুমকিও দিয়েছে। ঘরের জানালা-দরজা ভালো না। হামলার ভয়ে রাতে ঘুমাতে পারি না। যে কারণে মাসিক দেড় হাজার টাকা বেতনে মদন শেখ নামে একজনকে নৈশপ্রহরী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছি। প্রায় দুই মাস ধরে সে ডিউটি করছে। মাঝে মধ্যে সে যেদিন পাহারা দিতে না আসে সেদিন সবাইকে নির্ঘুম থাকতে হয়।
মণিরামপুর থানার ওসি (তদন্ত) শিকদার মতিয়ার রহমান জানান, দুই ভাইয়ের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ। অভিযোগের কারণে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। মাহাবুব মনের দুর্বলতার কারণে নৈশপ্রহরী রেখেছেন। স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য বলা হয়েছে। তারা যা করবেন সেটা আমাদের জানাবেন। সমাধান না হলে পরে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেবে।
এদিকে স্ত্রী, কন্যাদের নিরাপত্তায় নৈশপ্রহরী নিয়োগের খবর শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন। তিনি বলেন, ১৪ জুলাই যশোর-৬ আসনের উপ-নির্বাচনের দায়িত্ব থাকায় সময় নিয়ে বিষয়টি শুনতে পারেননি। তবে ১৫ জুলাই তিনি ফের ওই বাড়িতে যাবেন এবং সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।