জুমবাংলা ডেস্ক : নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীর হাঁটু পানিতে মৃত্যু রহস্যের জট খুঁলেছে। হত্যাকারী সাবেক প্রেমিক জুয়েল রানাকে (২১) শুক্রবার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
কিশোরগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের মর্তুজা হোসেনের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে মুশফিরাত জাহান নিঝুমের (১৯) লাশ ২৭ জুলাই বাড়ির পাশের একটি পুকুরে হাঁটু পানি থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরের দিন ২৮ জুলাই লাশের সুরতহাল করে মর্গে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
বাড়ির লোকজন এ ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে প্রচার করে। কিন্তু পুলিশ কিছু আলামতের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে শুক্রবার দিবাগত রাত ২টা ৩০ মিনিটে নিঝুমের সাবেক প্রেমিক জুয়েল রানাকে (২১) তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। জুয়েল সদর ইউপির মধ্যরাজিব চেংমারী গ্রামের আনছার আলীর ছেলে। তাকে আদালতে পাঠানো হলে বিচারকের কাছে হত্যাকাণ্ডের কথা শিকার করেন।
শুক্রবার মেয়ের বাবা মর্তুজা হোসেন মামলা করেছেন।
এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ থানার ওসি হারুন অর রশিদ শুক্রবার বিকালে থানায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে হত্যাকান্ডের বিষয়ে বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, হত্যাকান্ডটি খুবই পরিকল্পনা মাফিক করা হয়েছে। হত্যার নায়ক জুয়েল রানা নিঝুমের সাবেক প্রেমিক। ২০১৭ ও ২০১৮ সাল পর্যন্ত তাদের প্রেম অটুট থাকে। বর্তমান প্রেমিক একই ইউনিয়নের বাজেডুমরিয়া গ্রামের হেলাল মেম্বারের ছেলে তৌফিক (২০)।
জুয়েলকে নিঝুম প্রত্যাখ্যান করায় তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন জুয়েল। ঢাকা থেকে দুইবছর পর বাড়ি ফিরে মোবাইল ফোনে জুয়েল নিঝুমকে বলেন, তোমাকে আমি ভুলতে পারছি না। তুমি আমাকে সহযোগিতা করলে আমি তোমাকে ভুলতে পারব। কারণ জানতে চাইলে কবিরাজের মাধ্যমে সর্ম্পক ছিন্ন করা যাবে বলে জানায় জুয়েল। এতে রাজি হওয়ায় সাতটি মসজিদের পানি ও তিনটি মন্দিরের মাটি নিয়ে এসে ঘটনার দিন বিকালে নিঝুমের বাড়ির কাছে সবার অজান্তে তা দিয়ে আসে।
পরে নিঝুমকে ফোনে জুয়েল বলেন, মসজিদের পানি তোমার বাড়ির পাশে সুপারি বাগানের চারদিকে ছিটিয়ে দিও, আর মাটি বাড়ির চারপাশে দিও। মধ্য রাতে কবিরাজকে নিয়ে এসে তোমার সঙ্গে সাক্ষাতে মন্ত্রের মাধ্যমে সম্পর্ক ছিন্ন করা হবে। তবে তুমি বাড়ির বাইরে এলে লোকজন টের পাবে। তাই লিটনের দোকান থেকে নেয়া ঘুমের ট্যাবলেটগুলো বাড়ির সবাইকে খাইয়ে দিও। তা হলে আর কোনো সমস্যা হবে না দেখা করতে।
তাকে বিশ্বাস করে কথা মত নিঝুম ২৭ জুলাই রাত ১টা ৩০ মিনিটে বাড়ির পিছনের সুপারি বাগানে দেখা করে। কবিরাজ তার সঙ্গে না থাকায় উভয়ে তর্কে লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে জুয়েল রানা তাকে পরিকল্পনা মাফিক গলা টিপে হত্যা করে। পরে তার লাশ পুকুরের হাঁটু পানিতে ফেলে দেয়।
আজ শুক্রবার বিকালে প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আব্দুল আজিজ জানান, নীলফামারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) অশোক কুমার পালের দিক নির্দেশনায় এ হত্যাকান্ডের ঘটনা উন্মোচন করা সম্ভব হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।