জুমবাংলা ডেস্ক : পরিবারের ৫ সদস্যর মধ্যে তিনজনই শারিরীক প্রতিবন্ধী। একদিকে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আতঙ্ক। অপরদিকে ক্ষুধার যন্ত্রণা সহ্য করে অতি কস্টে দিনপার করে যাচ্ছিল অসহায় এ পরিবারের সদস্যরা। কাতর কণ্ঠে মুঠোফোনে তাদের কষ্টের কথা জানানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নতুন কাপড় ও ত্রাণ সহায়তা হাতে পেয়ে দারুন খুশি অসহায় এ পরিবারটি। তারা এ সহায়তা পেয়ে ঈদের আগেই ঈদ আনন্দে ভাসছে।
দিনাজপুর সদর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম জালালপুরের শাহাপাড়ার স্বল্প আয়ের রেজাউল ইসলামের স্ত্রী আহেদা আকতারসহ ৫ সদস্যর সংসার তাদের। ছেলে জুয়েল বয়স ৩৪, মেয়ে রোজিনা আক্তার বয়স ২৫ এবং ছোট ছেলে রোহান বয়স ১৪ বছর। তিন সন্তানই তাদের জন্ম সূত্রে শারিরীক প্রতিবন্ধী। ছোট ছেলে রোহান সারাক্ষণ শুয়েই থাকে, বসতেও পারে না। তাদের বাবা ছোট দোকান কর্মচারী। বেশ কিছু দিন আগে দুর্ঘটনায় তারও পা ভেঙ্গে গিয়ে পঙ্গু প্রায় অবস্থা। পিতার যৎসামান্য রোজগার আর দুই ভাই-বোনের প্রতিবন্ধী ভাতা দিয়ে টানা-পোড়নের মধ্যে চলছিল তাদের সংসার। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ছোবলে বাবা রেজাউল ইসলামের সামান্য রোজগারের পথও বন্ধ হয়ে যায়। চরম সংকটে পড়ে অসহায় এই পরিবারের সদস্যরা। জেলায় লকডাউনের শুরু থেকে এ পর্যন্ত কোনো ধরনের ত্রাণ সহায়তা পায়নি এই পরিবারটি। ক্ষুধার যন্ত্রণায় কাতর কণ্ঠে প্রতিবন্ধী রোজিনা আক্তার মুঠোফোনে এলাকার সংসদ সদস্য হুইপ ইকবালুর রহিমকে তাদের অসহনীয় কষ্টের কথা জানান। হুইপ ইকবালুর রহিম কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে চাল, ডাল, লবন, তেল, সেমাই, চিনি, পরিবারের সদস্যদের জন্য নতুন কাপড়, স্যানিটাইজার, মাস্কসহ ১৭ ধরনের ত্রাণ সহায়তা অসহায় পরিবারটির কাছে পৌঁছে দেন। ত্রাণ সহায়তা পেয়ে পরিবারের সদস্যরা আবেগে উচ্ছাসিত হয়ে পড়ে। তাদের মাঝে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান।
সদর উপজেলার ৮ নম্বর শংকরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. ইসাহাক আলী জানান, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি আমাকে ফোন করে তিন প্রতিবন্ধী ভাইবোনকে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেন। আমি হুইপের দেওয়া নতুন কাপড়, চাল, ডাল, লবণ, তেল, সেমাই, চিনিসহ ১৭ ধনের ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছি।
এই প্রথম খাদ্য সামগ্রী ও নতুন কাপড় পেয়ে কান্না জড়িত কণ্ঠে তিন শারিরীক প্রতিবন্ধীর মা আহেদা আক্তার বলেন, আমাদের খোঁজ কেউ রাখে না। অতি কষ্টে দিনযাপন করছি। সংসার চালাতে এভাবে সকলের সহযোগিতা পেলে সন্তানদের মুখে আহার তুলে দিতে পারব।
প্রতিবন্ধী জুয়েল জানান, করোনায় ভয়াল থাবায় আমরা তিন ভাই-বোন বাড়ি থেকে বের হই না। অসুস্থ বাবার কোনো আয় না থাকায় দিশেহারা আমরা। বাড়িতে খাবার না থাকায় শেষে বাধ্য হয়েই প্রতিবন্ধী বোন রোজিনা মুঠোফোনে বিষয়টি জানান স্থানীয় এমপি হুইপ ইকবালুর রহিমকে। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ত্রাণ সহায়তা বাড়িতে পৌঁছে দেন।
প্রতিবন্ধীদের চাচা মো. রফিকুল ইসলাম ও স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, অসহায় পঙ্গু ছেলে-মেয়েদের হাতে ত্রাণ সামগ্রী তুলে দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। তারা বলেন, সরকার করোনায় কর্মহীন ও অসহায় পরিবারের মাঝে ত্রাণ সহায়তা পৌছে দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিত্তবানরা এগিয়ে আসলেই এই শ্রেণি পেশার মানুষ সহজেই ত্রাণ পাবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।