আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাজধানী কাবুলে আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর বাড়িতে দুঃসাহসিক এক হামলায় কমপক্ষে আটজন নিহত হয়েছে। প্রায় এক বছরের মধ্যে এই প্রথম বন্দুকধারী বিদ্রোহীরা কাবুলে এতো বড় ধরনের বোমা হামলা চালালো। খবর বিবিসি বাংলার।
মঙ্গলবার রাতে যখন এই হামলা চালানো হয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বিসমিল্লাহ খান মোহাম্মদি এসময় বাড়িতে ছিলেন না।
অত্যন্ত সুরক্ষিত গ্রিন জোনের কাছে গাড়ি বোমা ফাটিয়ে ও গুলি চালিয়ে এই হামলা পরিচালনা করে বিদ্রোহীরা ।
কর্মকর্তারা বলছেন, মন্ত্রীর পরিবারের সদস্যদের ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং হামলাকারী চারজন বন্দুকধারীকে হত্যা করা হয়েছে।
তালেবান দাবি করছে যে তারা এই হামলাটি চালিয়েছে।
বিদ্রোহীদের এই দলটি সরকারি নেতাদের ওপর আরো হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছে।
তালেবানের যোদ্ধারা যখন বড় বড় তিনটি শহর দখল করার জন্য সরকারি বাহিনীর সঙ্গে তীব্র লড়াই করছে তখনই তারা খোদ রাজধানীতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর বাড়িতে এই হামলা চালালো।
আফগানিস্তানে সহিংসতা অবিলম্বে বন্ধ করার আহবান জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।
বলা হচ্ছে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর বাড়িতে এই হামলার ঘটনায় আরো ২০ জন আহত হয়েছে।
আফগান পুলিশ বলছে, তারা মন্ত্রীর ভিলাতে প্রবেশ করতে সক্ষম হওয়ার পর পাঁচজন হামলাকারীর মধ্যে চারজনকে হত্যা করেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটিকে আত্মঘাতী বোমা হামলা হিসেবে উল্লেখ করেছে।
হামলার খবর পেয়েই বিশেষ বাহিনীগুলো ঘটনাস্থলের দিকে ছুটে যায়।
যেখানে এই হামলাটি চালানো হয় সেটি অত্যন্ত সুরক্ষিত এলাকা গ্রিন জোনের খুব কাছেই। ওই গ্রিন জোনে রয়েছে বহু দূতাবাস এবং সরকারি ভবন।
হামলার পরে সেখানে তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বন্দুক-যুদ্ধ চলে বলে জানা গেছে।
হামলার পর প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মি. মোহাম্মদি এক টুইট বার্তায় লিখেছেন, চিন্তার কিছু নেই, সবকিছু ঠিক আছে।
এর কয়েক ঘণ্টা পর কাবুলের বাসিন্দারা রাস্তায় নেমে আসে ও বাড়ির ছাঁদে জড়ো হয়। সোশাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায় যে এসময় তারা আল্লাহু আকবর বলে স্লোগান দেয়।
একই চিত্র দেখা গেছে হেরাত শহরে, সোমবার, যেখানে তালেবান যোদ্ধা ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে রাস্তায় রাস্তায় যুদ্ধ চলছে।
কাবুল থেকে বিবিসির সংবাদদাতা সেকান্দার কেরমানি বলছেন, জনগণের মধ্যে তালেবান প্রতিরোধের এই মনোভাব আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর মনোবলকে চাঙ্গা করছে।
তবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে বিদ্রোহীরা দেখিয়ে দিয়েছে যে তারা সরকারের একেবারে কেন্দ্রেও হামলা চালাতে সক্ষম।
দেশটির অন্যত্র কী হচ্ছে
দক্ষিণাঞ্চলীয় হেলমান্দ প্রদেশের রাজধানী লস্কর গা শহরে তালেবান যোদ্ধাদের সঙ্গে সরকারি বাহিনীর তীব্র লড়াই অব্যাহত রয়েছে।
মঙ্গলবার জাতিসংঘ বলেছে, যুদ্ধে অন্তত ৪০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।
নাম প্রকাশ করতে না চেয়ে একজন বাসিন্দা বলেন, রাস্তায় মৃতদেহ পড়ে আছে। আমরা জানি না এগুলো বেসামরিক নাগরিকের নাকি তালেবানের। বহু পরিবার তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে হেলমান্দ নদীর কাছে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।
আফগান সেনাবাহিনী বলছে তারা তালেবানের বিরুদ্ধে বড় ধরনের আক্রমণ শুরু করতে যাচ্ছে এবং এজন্য তারা লোকজনকে শহর ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার অনুরোধ করেছে।
খবরে বলা হচ্ছে তালেবান যোদ্ধারা বিভিন্ন বাড়িতে, দোকানপাটে এবং বাজারে আশ্রয় নিয়েছে।
দেশের দক্ষিণে কান্দাহার দখলের জন্যও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে তালেবান।
পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর হেরাতেও তীব্র সংঘর্ষ চলছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।