নিজেস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর : গাজীপুরের কালীগঞ্জে করোনায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২ জন। গত ২৪ ঘন্টায় করোনা সন্দেহে ৪৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় রোগতত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়। নমুনা পরীক্ষার পর ওই ৪৫ জনের মধ্যে ২ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পজেটিভ পাওয়া যায়। এ উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক-নার্স-কর্মচারী, থানা পুলিশ সদস্য, ইউএনও অফিসের কর্মচারী ও অন্যান্যসহ করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৯৩ জন। ইতিমধ্যে ওই আক্রান্তরে মধ্যে থেকে ৮৭ জন সুস্থ্য হয়ে ফিরেছেন।
সোমবার (১১ মে) সকালে উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ ছাদেকুর রহমান আকন্দ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে দুইজন আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত দুইজনই কালীগঞ্জ পৌর এলাকার বাসিন্দা। তবে আক্রান্তের ৯৩ জনের মধ্যে ৮৭ জনই সুস্থ্য হয়ে ফিরেছেন। বাকী রয়েছে মাত্র ৬ জন। এদের সবাই আইসোলেশনে রয়েছে।
জানা গেছে, বর্তমানে করোনা আক্রান্তের দিক দিয়ে রাজধানী ঢাকার পরে নারায়ণগঞ্জের অবস্থান। এর পরেই রয়েছে শিল্প নগরী খ্যাত গাজীপুর জেলা। ইতিমধ্যে এ জেলাকে করোনার হটস্পট হিসেবে মন্তব্য করা হয়েছে। এ জেলায় করোনা আক্রান্তের দিক দিয়ে ৫ উপজেলার মধ্যে কালীগঞ্জ উপজেলার অবস্থান শীর্ষে। এ উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারী ২৭ জন, ১৬ পুলিশ কর্মকর্তা ও ইউএনও অফিসের কর্মচারী ৪ জন এবং এর বাহিরে রয়েছে আরো ৪৬ জনসহ মোট ৯৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
গত ১২ এপ্রিল এ উপজেলার পৌর এলাকায় প্রথম করোনা রোগী সনাক্ত হয়। এরপর কালীগঞ্জ পৌর এলাকা লকডাউন ঘোষণা করে উপজেলা ও পৌর প্রশাসন। পরদিন ১৩ এপ্রিল পৌর এলাকার বাহিরে করোনা রোগী সনাক্ত হয়। যার ফলে উপজেলা প্রশাসন পুরো কালীগঞ্জকেই লকডাইন ঘোষণা করেন। এরপর থেকে কালীগঞ্জে বেড়েই চলছিল করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। এপ্রিলের শেষের দিকে এ উপজেলায় আক্রান্তের সংখ্যা একেবারেই শূণ্যের কোঠায় নেমে আসলেই ৯ মে ৪৫ জনের নমুনা সংগ্রহে নতুন করে ২ জনের মধ্যে করোনা ভাইরাস পজেটিভ পাওয়া যায়। তবে এ উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখনো পর্যন্ত কোন রোগীর মৃত্যু হয়নি।
সূত্র আরো জানায়, নতুন আক্রান্ত দুইজনের বাড়ী কালীগঞ্জ পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড খঞ্জনা গ্রামে। এদের একজন পুরুষ ও একজন নারী। আক্রান্ত পুরুষ কালীগঞ্জ বাজারের কাঁচা বাজারের তরকারী ব্যবসায়ী ও ওই নারী তার স্ত্রী। সকালে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আক্রান্তের বাড়ীতে লাল পতাকা টাঙ্গিয়ে তাদের আসোলেশনের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও বাড়ীর সকল সদস্যদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম মিজানুল হক বলেন, থানা কর্মরত ডিএসবি’র একজন উপ-পরিদর্শক (এসআই) গত ১৫ এপ্রিল প্রথম করোনায় আক্রান্ত হয়। এরপর থানার আরো ৪ জন এসআই, ২ জন পিএসআই, ৩ জন এএসআই, একজন কনস্টেবল, একজন বিশেষ আনসার এবং কালীগঞ্জ সার্কেল অফিসে কর্মরত ৪ জনসহ মোট ১৬ পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়। সকলেই আইসোলেশনে থেকে বর্তমানে করোনা মুক্ত। আর করোনা জয় করে আসা ওই ১৬ পুলিশ সদস্যকে পুলিশ সুপার শাসসুন্নাহার ফুল ও উপহার দিয়ে অভ্যর্থনা জানিয়ে বরণ কনে নেন।
উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও ইউএনও মো. শিবলী সাদিক জানায়, ১২ এপ্রিল থেকে ০৯ মে পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী এ উপজেলায় ৬৪২ জনের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআর থেকে পরীক্ষা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে আক্রান্তদের মধ্যে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৬ চিকিৎসক, ৬ নার্স ও ১৩ কর্মচারীসহ ২৫ জন, ১৬ পুলিশ সদস্য, তার অফিসের ৪ জন কর্মচারীসহ মোট ৮৭ জন সুস্থ্য হয়ে ফিরেছেন। করোনাকে জয় করে ঘরে ফিরতে আর মাত্র ৬ জন বাকী রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।