জাতীয় ডেস্ক: বরগুনার আমতলীতে করোনা রোগী শনাক্ত ও তাঁর মৃত্যু হওয়ায় জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ আমতলী উপজেলাকে লকডাউন ঘোষণা করেন। লকডাউন ঘোষণার পর উপজেলার বিভিন্ন আঞ্চলিক ও গ্রামীণ কাঁচাপাকা সড়কগুলোতে গাছের গুঁড়ি ফেলে লকডাউন পালন করছে এলাকাবাসী। এতে জরুরি কাজে নিয়োজিত বিভিন্ন যানবাহন চলাচলা বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে।
রবিবার (১২ এপ্রিল) সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন পুলিশ ও দমকল বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সড়ক থেকে গাছের গুঁড়ি সরিয়ে ফেলতে শুরু করেছেন।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব জিএম দেলওয়ার হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় গত শুক্রবার বরগুনা জেলা প্রশাসনের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন আমতলী উপজেলাকে লকডাউন ঘোষণা করেন।
মানুষকে সচেতন করতে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে উপজেলার সর্বত্র মাইকিং করার সাথে সাথে দ্রুত এ লকডাউনের সংবাদটি শহর থেকে গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। এই সুযোগে অতি উৎসাহিত কিছু লোকজন উপজেলার বিভিন্ন আঞ্চলিক ও গ্রামীণ কাঁচাপাকা সড়কগুলোতে গাছের গুড়ি ফেলে লকডাউন পালন করে। সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে রাখার কারণে জরুরি কাজে নিয়োজিত যানবাহন চলাচলে বিঘ্নসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী গাড়ী ও রোগীবাহী এ্যাম্বুলেন্স আসতে যেতে পারছে না।
গত শনিবার রাতে আমতলী থানার পরিদর্শক মো. শাহআলম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এক বার্তায় সড়কে যারা গাছের গুঁড়ি ফেলে লকডাউন পালন করছেন তাদের সড়ক থেকে গাছের গুঁড়ি সরিয়ে নেয়ার আহবান জানান। তার এ আহবানে সাড়া দিয়ে কিছু কিছু সড়ক থেকে গাছের গুঁড়ি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। রবিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন জরুরি কাজে নিয়োজতি যানবাহন চলাচলের জন্য পুলিশ ও দমকল বাহিনীর কর্মীদের দিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সড়ক থেকে গাছের গুঁড়ি সরানো শুরু করেন।
উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার অধিকাংশ কাঁচাপাকা ও উপজেলা সদরের সাথে সংযুক্ত একাধিক সড়কের বিভিন্ন স্থানে গাছের গুড়ি ফেলে ও বাঁশ দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে রেখেছে এলাকাবাসী। যার কারনে এ সকল সড়ক দিয়ে জরুরি প্রয়োজনে কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারছে না।
করোনার ভয়ে আমতলী-তালুকদার বাজার ভায়া গাজীপুর ও তালুকদার বাজার টু হলদিয়া অফিস বাজার সড়কের অনেক জায়গায় বাঁশ দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে এলাকাবাসী।
তক্তাবুনিয়া গ্রামের শিক্ষক স্বপন কান্তি শীল বলেন, তালুকদার বাজার টু হলদিয়া অফিস বাজার সড়কের বেশ কয়েকটি জায়গায় গাছের গুড়ি ও বাঁশ দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে এলাকাবাসী। তিনি আরো বলেন, লকডাউন মানে এই নয় যে রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে রাস্তা বন্ধ করে লকডাউন পালন করতে হবে।
গুলিশাখালীর গোজখালী গ্রামের প্রভাষক আব্বাস মিয়া বলেন, গ্রামের কিছু অতি উৎসাহী লোক গোজখালী টু কলাগাছিয়া ও গোজখালী টু মহিষকাটা সড়কের বেশ কয়েকটি স্থানে সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করে লকডাউন পালন করছেন।
পশ্চিম গাজীপুর গ্রামের আবু সালেহ জানান, অতি উৎসাহী কিছু লোক রাতে এ এলাকার বেশ কয়েকটি সড়ক গাছের গুঁড়ি ফেলে রেখেছে। জরুরি প্রয়োজনে কেউ এসব সড়ক দিয়ে যানবাহন নিয়ে চলাচল করতে পারছে না। দ্রুত সড়ক থেকে গাছের গুঁড়ি সরিয়ে নেয়ার দাবি জানাই।
আমতলী থানার পরিদর্শক মো. শাহআলম মুঠোফোনে বলেন, লকডাউনের নামে সড়কে গাছের গুড়ি ফেলে জরুরি সেবামূলক কাজে নিয়োজিত যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করা যাবে না। তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, মেম্বার ও সচেতন নাগরিকদের অনুরোধ করবো দ্রুত আপনারা জনস্বার্থে সড়ক থেকে গাছের গুঁড়ি সরিয়ে ফেলুন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন বলেন, উপজেলার বিভিন্ন সড়ক থেকে গাছের গুঁড়ি সরিয়ে ফেলা শুরু হয়েছে। রবিবার আমি নিজে উপস্থিত থেকে বেশ কয়েকটি সড়কে রাখা গাছের গুড়ি সরিয়েছি। অবশিষ্ট গাছের গুড়িগুলো সড়ক থেকে সরানোর জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর যারা সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে রেখেছে তাদেরকেই সড়ক থেকে গাছের গুঁড়ি সরিয়ে নিতে হবে। অন্যাথায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তথ্যসূত্র: কালেরকন্ঠ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।