আন্তর্জাতিক ডেস্ক: জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত গাজায় গণহত্যার অভিযোগে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শুক্রবার প্রাথমিক রায় ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি মধ্যপ্রাচ্য এবং সারা বিশ্বের ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণের একটি যুগান্তকারী রায়।
আন্তর্জাতিক বিচার আদালত ইসারায়েলকে গাজায় তাদের সামরিক অভিযান বন্ধ করার অথবা মানবিক সহায়তা সরবরাহের নির্দেশ দিতে পারে। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের আকস্মিক হামলার পর ইসরায়েল গাজায় এই নজিরবিহীন
প্রতিশোধমূলক হামলা শুরু করে ।
ইসরায়েল আসলে গাজায় গণহত্যা করছে কি-না সে বিষয়ে আদালত অবশ্য রায় দেবেনা।
এই পর্যায়ে, আইসিজে গাজায় গণহত্যার বৃহত্তর অভিযোগ বিবেচনা করার আগে আজ এই জরুরি আদেশ দেবে। গণহত্যার অভিযোগের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে সম্ভবত কয়েক বছর সময় লাগতে পারে।
মামলাটি দক্ষিণ আফ্রিকা দায়ের করেছিল। যেখানে বলা হয়েছে, ইসরায়েল ১৯৪৮ সালের জাতিসংঘের গণহত্যা কনভেনশন লঙ্ঘন করছে, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং হলোকাস্টের চাইতেও নজির সৃষ্টি করেছে।
ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ অস্ট্রেলিয়ার আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ জুলিয়েট ম্যাকইনটায়ার বলেছেন, ‘ইসরায়েল যে গণহত্যা চালাচ্ছে তা প্রমাণ করার দরকার নেই দক্ষিণ আফ্রিকার।’
তিনি এএফপি’কে বলেন, ‘তাদের কেবলমাত্র গণহত্যার একটি সম্ভাব্য ঝুঁকি রয়েছে তা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।’
এই মাসের শুরুর দিকে গাজার সহিংসতা থেকে দূরে একটি বিশ্ব হেগের ‘পিস প্যালেসে’র ঐতিহ্যবাহী হলে দুই দিনের বেশি শুনানিতে গাজায় ইসরায়েলের জেনোসাইড কনভেনশনের কারিগরি বিষয়ে আইনজীবীরা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন।
দক্ষিণ আফ্রিকার শীর্ষ আইনজীবী আদিলা হাসিম ঘোষণা করেছেন, ‘গণহত্যার ঘোষণা কখনই আগে থেকে দেয়া হয় না।’
তিনি আরো বলেছেন, ‘কিন্তু এই আদালতের কাছে গত ১৩ সপ্তাহের প্রমাণাদি রয়েছে যা অবিসংবাদিতভাবে আচরণের একটি প্যাটার্ন এবং সম্পর্কিত অভিপ্রায় দেখায় যা গণহত্যামূলক কাজের একটি যুক্তিসঙ্গত দাবিকে ন্যায্যতা দেয়।’
মামলাটি ইসরাায়েলে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা করেছেন, ‘বিশ্ব উল্টে গেছে।’
ইসরায়েলের আইনজীবী তাল বেকার প্রিটোরিয়ার মামলাটিকে ‘বাস্তবতা ও আইনগত চিত্র গভীরভাবে বিকৃত’ এবং ‘বাস্তবতার প্রেক্ষাপটহীন এবং হেরফেরমূলক বর্ণনা’ বলে খারিজ করেছেন।
হামাসের হামলার চিত্রগুলো আদালতের দেখিয়ে বেকার বলেছেন ‘যদি এমন কিছু কাজ হয়ে থাকে যা গণহত্যা হিসাবে চিহ্নিত করা যেতে পারে তবে সেগুলো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সংঘটিত হয়েছে।’
ইসরায়েলের অভিযান গাজার বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে একথা বেকার অস্বীকার করেন। সেনাবাহিনীর লক্ষ্য ছিল ‘জনগণকে ধ্বংস করা নয়, বরং এ জনগণকে রক্ষা করা এবং তার দেশের জনগণকে রক্ষা করা। যারা একাধিক ফ্রন্টে হামলার শিকার।’
আইসিজে’র রায়গুলো সব পক্ষের জন্য বাধ্যতামূলক, কিন্তু তাদের রায় মানতে হবে এমন কোন ব্যবস্থা নেই। কখনও কখনও তাদের সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করা হয়। উদাহরণ স্বরূপ, আদালত রাশিয়াকে ইউক্রেনে আগ্রাসন বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছে।
নেতানিয়াহু ইতোমধ্যে পরামর্শ দিয়েছেন, তিনি আদালতের রায় মানবেন না। তিনি বলেছেন ‘কেউ আমাদের থামাতে পারবে না। হেগ নয় শুধু সারা বিশ্ব এবং অন্য কেউ নয়।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।