জুমবাংলা ডেস্ক : ক্ষমতাসীন দলের ৬ শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিক ক্যাসিনো কিং খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছেন। এ ছাড়া পুলিশের দুই কর্মকর্তাকেও নিয়মিত মোটা অঙ্কের অর্থ দিতেন তিনি অবৈধ ক্যাসিনো কারবার নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাওয়ার জন্য। গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে এ তথ্য দিয়েছেন যুবলীগের এ নেতা।
দেশ-বিদেশের ৯টি ব্যাংকে তার বিপুল পরিমাণ নগদ ও এফডিআর থাকার তথ্যও দিয়েছেন খালেদ। প্রকাশ করেছেন তার ক্যাডার বাহিনীর অনেক সদস্যের নাম। খালেদের বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মালয়েশিয়ার ব্যাংক আরএইচবিতে ৬৮ লাখ টাকা, সিঙ্গাপুরের ইউনাইটেড ওভারসিজ ব্যাংকে (ইউওবি) দেড় কোটি, ব্যাংককের ট্রাভেল কার্ডে এক লাখ, বাংলাদেশের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে সাড়ে ৬ কোটি, ব্র্যাক ব্যাংকে আড়াই কোটি, এনসিসি ব্যাংকে ১৯ কোটি টাকার এফডিআর, ব্র্যাক ব্যাংকে স্ত্রী সুরাইয়া আক্তারের নামে ৫০ লাখ টাকা, এনসিসি ব্যাংকে অর্পন প্রোপার্টিজের নামে ১৫ লাখ এবং ব্র্যাক ব্যাংকের আরেকটি অ্যাকাউন্টে অর্পন প্রোপার্টিজের নামে ১৫ লাখ টাকা জমা রেখেছেন খালেদ।
তদন্ত সূত্র জানায়, বর্তমান সময়ের খুবই প্রভাবশালী এক নেতাকে পূর্বাচলের একটি প্রজেক্টের জন্য ৫ কোটি টাকা দিয়েছেন খালেদ। শীর্ষস্থানীয় আরেক নেতার হাতে ২০১৫ সালে ৬০ লাখ টাকা তুলে দেন তিনি। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের এক শীর্ষ নেতাকে ৫০ লাখ টাকা দিয়েছেন; আনিছুর রহমানকে দিয়েছেন ৪০ লাখ টাকা; মো. আবদুর রহমান ও নুরুল হুদাকে দিয়েছেন ২ কোটি টাকা। এ ছাড়া ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী একটি সংগঠনের এক শীর্ষনেতাকে দুদফায় খালেদ ২০ লাখ টাকা দিয়েছেন।
প্রভাবশালী এসব নেতা ছাড়াও ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মতিঝিল বিভাগের এডিসি শিবলী নোমান এবং গোয়েন্দা পুলিশের মতিঝিল জোনাল টিমের এডিসি জুয়েল রানাকে নিয়মিত মোটা অঙ্কের অর্থ দিতেন খালেদ। অবৈধ ক্যাসিনো কারবার টিকিয়ে রাখতেই এ বিপুল পরিমাণ টাকা দিতেন বলে খালেদ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।
জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, খালেদ তার ক্যাডার বাহিনীর অনেক সদস্যের নামও বলেছেন। এর মধ্যে অন্যতম গোড়ানের কাউন্সিলর আনিস ও তার সহযোগী পিচ্চি রুবেল। এ ছাড়া তার ক্যাডার বাহিনীর সদস্য হিসেবে আরও যাদের নাম বলেছেন খালেদ তারা হলেনÑ ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর একে মুমিনুল হক সাঈদ এবং তার সহযোগী হাসান উদ্দিন, আরামবাগ ক্লাবের প্রহরী জামাল ও তার চাচাতো ভাই সুমন।
গোড়ানের রাউফুল আলম শুভও তার ক্যাডার বাহিনীর অন্যতম সদস্য যার কাছে ৪-৫টি বিদেশি পিস্তল থাকে। খালেদের ক্যাডারবাহিনীর দীর্ঘ তালিকায় আরও রয়েছেন ১১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রিজভী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের এনামুল হক আরমান ওরফে ক্যাসিনো আরমান, রানা মোল্লা, কাইল্লা আমিনুল, অঙ্কুর, উজ্জ্বল মোর্শেদ, ক্যাসিনো বকুল, ল্যাংড়া জাকির ও ড্রাইভার জিসান। এর মধ্যে মিল্কি হত্যা মামলার আসামি আমিনুল, অঙ্কুর ও উজ্জ্বল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাব-৩ এর উপপরিচালক ও খালেদের মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফাইজুল ইসলাম বলেন, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিস্তারিত জানানো যাবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।