জুমবাংলা ডেস্ক: জয়পুরহাট জেলার মাঠ ঘাটে ঝলমল করা সোনালী বোরো ধান কৃষক এখন ঘরে তোলা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে টুকটাক ধান কাটা শুরু হলেও ঈদের পর থেকে পুরোদমে কাটা মাড়াই চলছে। শ্রমিকের পাশাপাশি ১৮ টি কম্বাইন্ড হারভেস্টর দিয়ে ধান কাটা মাড়াই করা হচ্ছে। জেলায় এবারও বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, খাদ্যে উৎপাদনে উদ্বৃত্ত জেলা জয়পুরহাটে চলতি ২০২০-২০২১ রবি ফসল উৎপাদন মৌসুমে স্থানীয় কৃষি বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানে জেলায় এবার ৬৮ হাজার ৭৪৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে । যার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৯ হাজার ৪২৫ হেক্টর । এতে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৩ লাখ মে.টন। বর্তমানে কৃষকরা সোনালী ধান ঘরে তোলা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে টুকটাক ধান কাটা শুরু হলেও ঈদের পর থেকে পুরোদমে কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে। করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে শ্রমিকের চাহিদা মেটাতে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ কর্মসূচির আওতায় জেলায় এবার ১৮টি কম্বাইন্ড হারভেস্টর দিয়ে ধান কাটা মাড়াই করা হচ্ছে এবং ইতোমধ্যে জেলায় ৫১ ভাগ বোরো ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে বলে জানায় কৃষি বিভাগ। জেলায় বোরো চাষে সেচ সুবিধা প্রদানের জন্য ১ হাজার ৯৫৫ টি গভীর ও ৮ হাজার ৫৯৮টি অগভীর নলকূপ চালু করা হয়। বিএডিসি (বীজ) কৃষকদের মাঝে উন্নত জাতের বীজ সরবরাহের ব্যবস্থা করে। উচ্চ ফলনশীল জাতের মধ্যে রয়েছে বিআর-২৮, ২৯, ১৬ ও ৫৪ জাতের ধান। হাইব্রিড জাতের মধ্যে রয়েছে এসিআই- ১, ২, ৩, ৪, ৫, ধানীগোল্ড, হিরা-২, ৫, জাগরণ, ময়না, টিয়া, ধানী, এসএল-৮, তেজ। সদর উপজেলার দোগাছী ইউনিয়ন, জামালপুর ইউনিয়ন, পুরানাপৈল ইউনিয়ন, ধলাহার ইউনিয়ন, বম্বু ইউনিয়ন, আমদই ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মাঠে বোরো ধান পেকে সোনালী বর্ণ ধারন করা ধানের শীষ গুলো হেলে পড়েছে জমিতে। কোমরগ্রাম এলাকার কৃষক শামসুল ইসলাম, শ্যামপুর এলাকার কৃষক নুরুল ইসলাম জানান, এবার ধানের ফলন খুব ভাল হয়েছে। এবার প্রকার ভেদে ৭ শ থেকে সাড়ে ৮ শ টাকা মণ ধান বিক্রি হচ্ছে বাজারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকার জয়পুরহাটের কৃষকদের ধান কাটা-মাড়াইয়ে ব্যবহারের জন্য ১৮ টি কম্বাইন্ড হারভেষ্টার বরাদ্দ প্রদান করেছে। এরমধ্যে রয়েছে জয়পুরহাট সদরে ৫ টি ও কালাই উপজেলায় ৫ টি , ক্ষেতলালে ৩ টি, আক্কেলপুর উপজেলায় ২ টি ও পাঁচবিবি উপজেলায় ৩টি। কম্বাইন্ড হারভেস্টর গুলোর মোট মূল্যের অর্ধেক কৃষক দিলেও বাকী অর্ধেক ভূর্তকি হিসেবে দিয়েছে সরকার। জেলায় ধান কাটার জন্য পাশবর্তী জেলা গাইবান্ধা, রংপুর , কুড়িগ্রাম ও নীলফামারী থেকে আসছেন বলে জানান, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ স ম মেফতাহুল বারি। তিনি জানান, আবহাওয়া ভালো থাকায় চলতি মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। জয়পুরহাট জেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ৯ হাজার ৪ মেট্রিক টন ধান ও ১৯ হাজার ৩২৭ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানান, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জ্ঞান প্রিয় বিদুর্শী চাকমা । সরকারি ভাবে এবার ধান ২৭ টাকা কেজি ও চাল ৪০ টাকা কেজি দরে ক্রয় করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, গত ২০১৯-২০২০ মৌসুমে জেলায় ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়। এতে চালের উৎপাদন হয়েছিল ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৩৩৫ মে. টন । যা জেলার খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যান্য স্থানে সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে। হেক্টর প্রতি গড় উৎপাদন হয়েছিল ৪ দশমিক ৬৩ মে.টন চাল। সূত্র: বাসস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।