আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে কোন এলাকায় কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা ড্রোন ওড়িয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ‘রবিবার সকাল থেকেই ড্রোন নিয়ে নজরদারি শুরু হবে। কোন এলাকায় কত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা দেখা হবে।’
ভারতের ইন্ডিয়া টাইমস, জিনিউজসহ একাধিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, গতকাল শনিবার রাত পর্যন্ত বুলবুলের দিকে কড়া নজর রাখছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাত সাড়ে ১০টায় নবান্ন কন্ট্রোল রুমে নিজে বসে তদারকি করেছেন। খোলা হয়েছে কন্ট্রলরুমও।
শনিবার রাতে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মমতা আশ্বস্ত করে বলেন, ‘বুলবুলে বড় বিপদ কেটেছে। অযথা আতঙ্কিত হবেন না।’ আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দুর্যোগ কেটে যাবে বলেও জানান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। তবে এখনই লোকজনকে তিনি রাস্তায় বেরোতে নিষেধ করেন।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে যাদের ঘরবাড়ি ভেঙেছে এবং চাষের ক্ষতি হয়েছে, তাদের তালিকা করে ক্ষতিপূরণ দেবে সরকার।
রাজ্য সরকারের মতে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়েছে দেড়শ’ থেকে দুইশ’ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে। উপর থেকে ছবি তুললে স্পষ্ট বোঝা যাবে ক্ষয়ক্ষতির গোটা চিত্র। ঝড়ে যাদের ঘরবাড়ি, দোকানপাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে জানানো হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, পুরো বিষয়টা সম্পন্ন করতে কয়েকদিন সময় লাগবে। তবে এরই মধ্যে ত্রাণ ও উদ্ধারকাজের রোডম্যাপ ঠিক করে ফেলেছেন তিনি।
এদিন কলকাতা পুলিশের ড্রোনের প্রশংসাও করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী জানান, কলকাতা পুলিশের ড্রোন দিয়েই পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। তিনি জানান, এই ড্রোনেই ক্ষয়ক্ষতির উপর সমীক্ষা চালানো হবে।
বুলবুলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে এদিন স্বীকার করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কাঁথি, রামনগর, খেজুরি-সহ পূর্ব মেদিনীপুরের একাধিক ব্লক। ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাড়িঘর ভেঙেছে। গাছ উপড়ে পড়েছে। তবে আগাম লোকজনকে বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ায়, প্রাণহানি সে অর্থে হয়নি।
মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, উপকূল অঞ্চলের ১ লাখ ৬৪ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মোট ৩১৮টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। এই ত্রাণ শিবিরগুলোতে রয়েছেন ১ লাখ ১২ হাজার মানুষ। এ ছাড়া আয়লার পর একাধিক সাইক্লোন সেন্টার তৈরি করেছিল রাজ্য। সেই সাইক্লোন সেন্টারগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন আরও ২ লাখ ৪০ হাজার মানুষ।
দুর্যোগ পুরোপুরি না-কাটা পর্যন্ত দুর্গতারা এসব সাইক্লোন সেন্টার ও ত্রাণ শিবিরে থাকবেন। তাদের খাওয়া-দাওয়ার জন্য ২১৫টি কিচেনও খোলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, দুর্গতদের দায়িত্ব রাজ্যের।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঝড়ে দুজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তবে রোববার সকাল থেকেই রাজ্য বিপদমুক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।