আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্য আমন্ত্রণপত্র আদায় করে নেয়া যায়, সে জন্যই গত ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়েছিলেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর- এমনই বিস্ফোরক দাবি করেছেন লোকসভার বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী। যদিও এমন দাবি ‘ভিত্তিহীন’ বলে জানিয়েছেন জয়শঙ্কর।
গত ডিসেম্বর মাসের যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে রাহুল গান্ধী বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন বলে সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) অভিযোগ করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে আমি যুক্তরাষ্ট্রে যে সফর করেছি, তা নিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা বলছেন রাহুল গান্ধী। আমি তৎকালীন বাইডেন প্রশাসনের সেক্রেটারি অব স্টেট এবং এনএসএ’র সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলাম। আমাদের কনসাল জেনারেলের অনুষ্ঠানেও যোগ দিয়েছিলাম। আমি যখন সেখানে ছিলাম সেই সময়, পরবর্তীতে যিনি এনএসএ’র দায়িত্ব নিতে চলেছেন; তিনি আমার সঙ্গে দেখা করেছিলেন।’
এদিন রাহুল গান্ধীর মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হওয়ার পরই নিজের এক্স হ্যান্ডেলে বিরোধী দলনেতার দাবির পাল্টা জবাব দেন ক্ষুব্ধ এস জয়শঙ্কর। তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদির আমন্ত্রণ জানানো নিয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী যে এই ধরনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন না, সেটা তো সাধারণ জ্ঞানের মধ্যে পড়ে। বস্তুত, ভারত সাধারণত বিশেষ প্রতিনিধিদের দিয়েই প্রতিনিধিত্ব পেশ করে। হয়তো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়েই রাহুল গান্ধী এসব বলছেন।’
রাহুল কী বলেছেন?
সোমবার লোকসভায় রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ জ্ঞাপন প্রক্রিয়া চলাকালীন রাহুল তার ভাষণে দাবি করেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ‘একাধিকবার’ যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। যাতে ট্রাম্পের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়, সেই অনুরোধ মার্কিন প্রশাসনকে জানাতে।
রাহুলের ভাষ্য, আমরা যখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কথা বলি, তখন আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে একাধিকবার সেখানে পাঠাই না, যাতে তিনি শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর জন্য একটি নিমন্ত্রণ আদায় করে আনতে পারেন। এদিন নিজের ভাষণে ভারতে পণ্য উৎপাদন ও প্রযুক্তির উন্নতি সাধনের বিষয়েও জোর দেন রাহুল গান্ধী।
তিনি বলেন, আমাদের যদি উৎপাদন ব্যবস্থা থাকত এবং আমরা যদি প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করতাম, তাহলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট এখানে এসেই প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানাতেন। তবে রাহুল গান্ধীর এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা ও প্রতিবাদ জানান সংসদ-বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। তিনি বলেন, ‘বিরোধী দলনেতা কখনই এ ধরনের ভিত্তিহীন মন্তব্য করতে পারেন না। এর সঙ্গে দুই দেশের সম্পর্ক জড়িত। তিনি তথ্য যাচাই না করেই এই মন্তব্য করছেন।’
এরপর এ নিয়ে সংসদ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তখন রাহুল গান্ধীকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনার মানসিক শান্তি বিঘ্নিত করার জন্য আমি ক্ষমা চাইছি…!’ উল্লেখ্য, গত ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই অনুষ্ঠানে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর উপস্থিত ছিলেন। তার আগে, গত বছরের ২৪ থেকে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়েছিলেন তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।