চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড এলাকায় পানি নিষ্কাশনের পথ রাতের আঁধারে মাটি ভরাটের মাধ্যমে বন্ধ করে নিচ্ছে এক প্রভাবশালী। এতে বর্ষা মৌসুমে মহাসড়কের পূর্ব পাশের বিশাল এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
এমনকি পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হয়ে স্থায়ী জলাবদ্ধতার কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হবার পাশাপাশি মহাসড়কের পশ্চিম পাশের দুটি গ্রামও প্লাবিত হবে আশংকা করা হচ্ছে। এ নিয়ে ইতোমধ্যে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে।
অভিযোগে জানা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিরা এলাকায় রয়েল সিমেন্ট লিমিটেড কারখানার সামনে দুটি কালভার্ট রয়েছে। এ দুটি কালভার্ট দিয়ে মহাসড়কের পশ্চিম পাশের পানি নিষ্কাশিত হয়ে পূর্ব দিকে সাগরে পতিত হয়। কুমিরা রেলওয়ে স্টেশনসহ আশপাশের দুই কিলোমিটার এলাকার পানি ওই কালভার্ট দিয়ে নিষ্কাশন হয়। এছাড়াও ওই এলাকায় রয়েছে রয়েল সিমেন্ট লিমিটেড, কর্ণফুলী স্টিল মিলস লিমেটেড, কেএসআরএম স্টিল প্ল্যান্ট লিমিটেডসহ বেশ কিছু ছোট বড় কারখানা। বর্ষা মৌসুমে পুরো এলাকার পানি নিষ্কাশনে ওই কালভার্ট দুটিই একমাত্র ভরসা।
কিন্তু সম্প্রতি মোহাম্মদ আলী নামের এক প্রভাবশালী রাতের আঁধারে মাটি ভরাটের মাধ্যমে পানি চলাচলের পথ রুদ্ধ করছে। এতে স্থানীয় এলাকাবাসীসহ শিল্প কারখানা মালিকরা ভয়াবহ জলাবদ্ধতার আশংকা করছে। এমন আশংকার বিষয়টি উল্লেখ করে কেএসআরএম স্টিল প্ল্যান্ট লিমিটেড ও কর্ণফুলী স্টিল মিলস লিমিটেডের পক্ষ থেকে লিখিত আবেদন করা হয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে।
এদিকে ভুক্তভোগীরা ইতোমধ্যে স্থানীয় ইউনিয়র পরিষদ চেয়ারম্যানকে অভিহিত করেছেন। স্থানীয় চেয়ারম্যান অভিযুক্ত মোহাম্মদ আলীকে নোটিশের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশনের পথ রুদ্ধ না করার জন্য বললেও তা মানছেন না। বরং রাতের আঁধারে মাটি ভরাট অব্যাহত রেখেছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বর্ষা মৌসুমে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পশ্চিম পাশের পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হলে কুমিরা রেলওয়ে স্টেশন, কয়েকটি উৎপাদনমূখী শিল্পকারখানা মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির শিকার হবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিরা অংশ। যার প্রভাব পড়বে জাতীয় অর্থনীতিতে।
কর্ণফুলী স্টিল মিলস লিমিটেডের সিনিয়র সহকারী মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী গৌতম চন্দ্র নাথ বলেন, বিষয়টা খুবই দুঃখজনক। এলাকার বিশাল জনগোষ্ঠী ও বিনিয়োগকারীদের কথা চিন্তা না করে গায়ের জোরে এভাবে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এ ব্যাপারে আমরা প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। অন্যথায় এলাকাবাসী ও কারখানা মালিকদের ব্যাপক ক্ষতির শিকার হতে হবে বর্ষা মৌসুমে।
সীতাকুন্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন রায় লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সহকারী কমিশনারকে (ভূমি)। তিনি সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় আইনী পদক্ষেপ নেবেন।
অভিযুক্ত মোহাম্মদ আলী জানান, ‘আমি আমার নিজের মালিকানাধীন জায়গা মাটি দিয়ে ভরাট করেছি । আমি দীর্ঘ ২০ বছর দেশের বাইরে থাকায় জমিটি এতদিন খালি পরে ছিল। আমার বিরুদ্ধে পানি প্রবাহ রোধ করার যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।