জুমবাংলা ডেস্ক : কুষ্টিয়ায় প্রকাশ্যে স্ত্রী ও সৎ ছেলেসহ তিন জনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় বরখাস্ত পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সৌমেন রায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ সোমবার (১৪ জুন) দুপুর সোয়া ১টায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক নিশিকান্ত সরকার আসামি সৌমেন রায়কে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক রেজাউল করিমের আদালতে হাজির করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক সঞ্জয় রায় বলেন, ট্রিপল মার্ডার মামলায় গ্রেপ্তার সৌমেন রায় হত্যার দায় স্বীকার করে দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টা ধরে জবানবন্দি দিয়েছেন।তিনি বলেন, স্বীকারোক্তির মধ্যে প্রধানত ছিলো, আসমা ও সৌমেনের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন থেকে ক্ষোভে সৌমেন রায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। জবানবন্দি রেকর্ড শেষে তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এর আগে নিহত আসমার মা কুমারখালী উপজেলার নাথুরিয়া গ্রামের আমির আলীর স্ত্রী হাসিনা খাতুন বাদী হয়ে মেয়ে ও নাতি হত্যার অভিযোগে কুষ্টিয়া মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। এদিকে নিহত আসমা খাতুন এএসআই সৌমেন রায়ের বিধিসম্মত বৈবাহিক স্ত্রী কিনা সে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিশিকান্ত সরকার। তিনি বলেন, আসমার পরিবার ও সৌমেনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, সৌমেন রায় আসমা খাতুনের ৩য় স্বামী। আসমার সাথে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত শিশু রবিন আসমার প্রথম স্বামীর সন্তান। অন্যদিকে সৌমেন রায়ের বাড়িতে রয়েছে বিবাহিত স্ত্রী ও বাচ্চা। এইসব ঘটনাগুলোর মধ্যে কার সাথে কি ধরণের সম্পর্ক এবং টানাপোড়েনই বা কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে- যার কারণে এই হত্যাকাণ্ডের সবকিছুই বিবেচনায় নিয়ে আমরা তদন্ত শুরু করেছি।
কুষ্টিয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, অন ডিউটি বা দাপ্তরিক অনুমোদন ছাড়া একজন পুলিশ সদস্য সরকারি অস্ত্র নিয়ে খুলনা থেকে কুষ্টিয়াতে এসে কিভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, সেই বিষয়ে কার কতটুকু দায় বা কর্তব্যে অবহেলা ছিলো, সবকিছু খুটিনাটি বিশ্লেষণ করে তদন্ত করতে কুষ্টিয়া ও খুলনা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত শেষ করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে রবিবার সকাল ১১টার দিকে কুষ্টিয়ার কাস্টমস মোড়ে নিজের স্ত্রী আসমা খাতুন, আসমার আগের স্বামী রুবেলের ছেলে রবিন ও স্ত্রীর ছেলে বন্ধু শাকিল হোসেনকে গুলি করে হত্যা করেন খুলনার ফুলতলা থানায় কর্মরত এএসআই সৌমেন রায়। তার আগে ওই দিনই খুব সকালে এএসআই সৌমেন আসমাদের বাড়িতে যান এবং আসমা ও তার ছেলে রবিনকে নিয়ে খুলনা যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। হত্যাকাণ্ডে সৌমেন সরকারি অস্ত্র ও গুলি ব্যবহার করেছেন বলেও নিশ্চিত করেছে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ। সৌমেন আসমার তৃতীয় স্বামী এবং আসমা সৌমেনের দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।