জুমবাংলা ডেস্ক : বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. ফজলুর রহমানকে প্রায় দেড় ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুর ১২ থেকে দেড়টা পর্যন্ত অধ্যক্ষের কার্যালয়ে তালা দিয়ে অবরুদ্ধ করে শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সাজ্জাদুর রহমান জানান, অনিয়মতান্ত্রিকভাবে অধ্যক্ষ অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তির জন্য মাসিক ৫০০টাকা করে ছয় মাসের অগ্রিম বেতনসহ সর্বমোট আট হাজার টাকা নিচ্ছেন। এজন্য অনেক শিক্ষার্থী ভর্তি না হয়ে চলে যাচ্ছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করে।
আন্দোলনরত আরেক শিক্ষার্থী মো. জুবেল আহমদ জানান, অধ্যক্ষ কলেজে যোগ দিয়েই বিভিন্ন অনিয়ম শুরু করেন। এর আগে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিনা রশিদ বেতনের টাকা নিয়েছেন। এ নিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে সেই টাকা ব্যাংকে জমা দেন। যারা উপবৃত্তি পান তাদের কাছ থেকেও বেতন নিতেন তিনি।
নবীগঞ্জ সরকারি কলেজ শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক মো. আমির হোসেন বলেন, ‘অনার্স প্রথম বর্ষ ভর্তি শুরু হয় জানুয়ারী মাসে। তখন ভর্তি ফি, বেতন, পরীক্ষা ফিসহ আট হাজার টাকা নেয়া হয়েছে। কিন্তু ছাত্র ঐক্য পরিষদের নেতারা স্যারের এই সিদ্ধান্ত মেনে নেয়নি। তাই ছাত্র ঐক্য পরিষদ ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষ স্যারকে অবরুদ্ধ করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবি অন্যান্য সরকারি কলেজে পাঁচ হাজার ৪৪ টাকা নেয়। আমাদের কলেজেও তাই নিতে হবে। শিক্ষার্থী ও স্যার নিজ অবস্থানে অনড় থাকায় বিষয়টির কোনো সমাধান হয়নি। তবে আবারও একসঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।’
কলেজের শিক্ষক পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক রেজাউল আলম বলেন, অধ্যক্ষ স্যার যোগদানের আগে যারা উপবৃত্তি পেতেন তাদের কাছ থেকে বেতন কোনো সময় নেয়া হয়নি। কিন্তু তিনি যোগ দিয়েই সিদ্ধান্ত দিয়েছেন যারা উপবৃত্তি পাবে তাদেরকেও বেতন দিতে হবে। কলেজের পুকুর থেকে সব মাছ অধ্যক্ষ নিয়ে যান। এ বিষয়ে স্যার ব্যাখা দেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মাছ ধরে নিয়ে গেছে। তবে অধ্যক্ষ স্যারের উচিত ছিল তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া। কিন্তু রহস্যজনক কারণে তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ মো.ফজলুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে অবরূদ্ধ হওয়ার ঘটনাটি স্বীকার করে তিনি বলেন, ২০২৩ -২৪ সেশনের অনার্স প্রথম বর্ষের ভর্তি শুরু হয় জানুয়ারী মাসে। বর্তমানে শেষ পর্যায়ের ভর্তি চলছে। গত জুন মাসে কলেজ সরকারি হয়। জানুয়ারীতে ভর্তিতে আট হাজার টাকা নেয়ো হয়েছে। তাই একই বর্ষের ছাত্র হিসাবে তাদের কাছ থেকেও ৮ হাজার টাকা নেয়া হবে।
আগে সরকারি কলেজ ছিল না তাই নিয়েছেন এখন সরকারি নির্দেশনা না মেনে কিভাবে এত টাকা নিচ্ছেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন- একই বর্ষের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে দুইভাবে টাকা নিতে পারব না।
বিনা রশিদে বেতনের টাকা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কলেজে রশিদ বই না থাকায় নেয়া হয়েছে। তবে হিসেবে কোনো গড়মিল নেই। সব টাকাই ব্যাংকে জমা দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে তিনি নবীগঞ্জ সরকারি কলেজে অধ্যক্ষ হিসাবে যোগদান করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।